বাতিঘর থেকে প্রকাশিত হয়েছে আমার চতুর্থ কবিতার বই ‘অচির অরোরা’। বইটি পাওয়া যাচ্ছে বইমেলায় বাতিঘরের স্টলে (স্টল ২৬৮-২৭১)। বইয়ের মূল্য ধরা হয়েছে দুই শত টাকা। বইটিতে কবিতা আছে ৩১টি। কবিতাগুলি নানা ফর্মে, নানা ছন্দে লেখা; নানা ছন্দে লিখতে চেষ্টা করেছি তেমন নয়। অতীতে সাহিত্য করতে এসে ভাষা-ছন্দ নিয়ে যে বিচিত্র কসরৎ করেছিলাম, তার ফলস্বরূপ যখন যা আপনা থেকেই আসে, লিখি; ফলে ব্যাপারটা অনতিক্রম্য (যাহা পার হওয়া অসাধ্য বা উচিত নহে), এখন খানিকটা সহজাতও। মূলত আমার প্রবাসজীবনের টুকরো টুকরো নানা ঘটনা, স্মৃতি, বিস্ময় ও বিবমিষা এই বইটিতে সংরক্ষিত আছে।
কবিতাগুলি নিয়ে আমার বলার বিশেষ কিছু নেই। নতুন একটা দেশ, নতুন বাস্তবতা, নতুন মুগ্ধতা, মেল্যানকলি আমার এতদিনের ভাষাজ্ঞানের সাথে মিথস্ক্রিয়া করে যা সৃষ্টি করেছে, তা-ই ‘অচির অরোরা’। অনেকে জানতে চেয়েছেন ‘অচির অরোরা’ কেন বইয়ের নাম। এই বইটি ক্ষণস্থায়ী নর্দান লাইট্সের মতোই; কিছু সময় ধরে বিচিত্র আলোর উদ্ভাসন মাত্র; কোনো গ্রান্ড প্ল্যান নেই, কোনো নির্দিষ্ট মোটিফ নেই, কোনো ক্যামোফ্লেজও নেই। কবিতাগুলি লেখা হয়েছে ডিসেম্বর ২০১৮ থেকে ২০২২’র সেপ্টেম্বর-অক্টোবর অব্দি। আমার কবিতা বরাবরই প্রকৃতিঘনিষ্ঠ এবং সেই প্রকৃতি যতটা না স্মৃতির বা কল্পনার, ততটা সম্মুখের। ফলে, মার্কিন দেশের নদী-নালা, গাছপালা, পাখি-পতঙ্গ, জলবায়ুর ছবি এই বইটির পাতায় পাতায়। বাংলা ভাষার পাঠক কিভাবে এটিকে গ্রহণ করবেন, জানি না। কবিতার বই না হয়ে এটি ভ্রমণকাহিনি হলে হয়তো অনেক স্বস্তি পেতাম। অস্বস্তিটা একটু বেশি, কারণ আমরা শিল্পের তুলনায় তত্ত্বকে বেশি গুরুত্ব দিই। আমি বলছি না যে, শিল্পের বিচারে এই বই উতরে যাবে। কিন্তু, তত্ত্বকে আমি সন্দেহ করি। তত্ত্বের কত রকম কাজ আছে জানি না, তবে তত্ত্বকে আমরা কাজে লাগাই অন্যকে কাটার তাগিদে। তবে আমি ভীত নই, কারণ বিশেষ কোনো প্রত্যাশা নেই আমার। কিন্তু আমার কাছে ভুলক্রমে যাদের কিছু প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, তাদের কথা ভেবে খানিক অস্বস্তি হয় বটে। দেখা যাক…
জন্ম: অক্টোবর, ১৯৮৩ ইং, নীলফামারি। বর্তমান নিবাস: নিউ জার্সি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর করেছেন রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বর্তমানে ব্যাংকার হিসেবে কর্মরত। প্রকাশিত কবিতার বই: কাঠঠোকরার ঘরদোর (২০১৫), ধুপছায়াকাল (২০১৮), গোধূলির প্যানোরামা (২০২০)। সম্পাদনা : ওয়েবম্যাগ নকটার্ন (যৌথ)।