শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৭

একটি নভেলা আর একটি প্রবন্ধের বই : আকিমুন রহমান

0

একুশে বইমেলা ২০২৩-এ আমার একটি নভেলা বেরিয়েছে। নাম ‘নিত্য যে নদী বহে’। আরেকটি বই আসছে। ওটি প্রবন্ধের বই। ‘শরৎচন্দ্রের শ্রীকান্ত ও ইন্দ্রনাথ কতোটা মৌলিক সৃজন তারা, কতোটাই বা প্রভাবজাত’। বই দুটি প্রকাশ করেছে সৌম্য প্রকাশনী, ঢাকা। বইমেলায় যাদের স্টল নম্বর হচ্ছে ৫৬৩।

Nitto J Nodi Bohe

নিত্য যে নদী বহে | আকিমুন রহমান | ধরন : উপন্যাসিকা | প্রকাশক : সৌম্য | প্রচ্ছদ : মোস্তাফিজ কারিগর | মুদ্রিত মূল্য : ২৫০ টাকা

বাংলার প্রাচীন ইতিহাস পড়তে পড়তে বা প্রাচীন ও মধ্যযুগের সাহিত্যকর্মগুলোর সাথে লগ্ন লগ্ন থাকতে থাকতে একটা বিষয় খুব স্পষ্ট রকমে বোধ করতে পারি যে, মারী ও মন্বন্তর এই ভূ-ভাগের মানুষের জীবনের আর সংসারের পাশেই বেশ পোক্তরকমেই অবস্থান করে গেছে।

যেনো অমন মৃত্যুর পাশে বসেই দিন পার করেছে, যেনো বেঁচে থাকাটাই ছিলো একটা বিস্ময় ও ভাগ্যের ব্যাপার। কতো রকমের মারী ও আধিব্যাধির ঘেরে যে ছিলো জীবন। এক ওলাবিবিরই তো আছে সাত সাতটা বোন। তাদের দয়ার কারণে মরণ পাওয়া তো ছিলোই। তার ওপর ছিলো নানা রকমের জ্বর। যেনো সহস্র বছর ধরে মানুষের আয়ুষ্কালটুকু হয়ে ছিলো একটা কম্পমান দীপশিখা, তাকে ঘিরে আছে কঠিন হিম মরণ।

তবে মানুষ যে তাকে, ওই মরণ নিয়ে আসা মহামারীকে নিয়ে, সদা সর্বক্ষণ ত্রাসে-ভয়ে কাঠ হয়ে থাকতো, তেমন তো নয়। ভয় পেতো, তবে একরকমের নির্লিপ্ত উদাসীনতা নিয়ে তাকে সহ্যও করে চলছিলো।এবং বেঁচে থাকার সুধা ও মাধুরী, যাতনা ও তিক্ততাকে নিংড়ে নিয়ে দেহ ধারণও করে চলছিলো।

এটা আমাকে ভারী মুগ্ধ ভারী বিস্মিত করে তুলছিলো বরাবরই। সেই মুগ্ধতা আর বিস্ময়ই – এই বইটি লিখে ওঠার আন্তর তাগিদ হয়ে উঠেছিলো।

Akimun Rahman

শরৎচন্দ্রের শ্রীকান্ত ও ইন্দ্রনাথ কতোটা মৌলিক সৃজন তারা, কতোটাই বা প্রভাবজাত | আকিমুন রহমান | ধরন : প্রবন্ধ | প্রকাশক : সৌম্য | প্রচ্ছদ : বিপ্লব মণ্ডল | মুদ্রিত মূল্য : ২৫০ টাকা

‘নিত্য যে নদী বহে’ নভেলার আখ্যানটি উপস্থাপিত হয়েছে অভিনব এবং চিত্তহর এক রীতিতে। এই বঙ্গ ভূভাগ এই বর্তমান কাল থেকে শুরু করে সেই কোন সুদূর অতীত পর্যন্ত, কতো রকমের মারী ও মন্বন্তরের দংশনেই না মৃত্যু-ধুঁকধুকন্ত হয়ে গেছে।শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে অপঘাতময় করুণতম মৃত্যুই হয়ে আছে এই বঙ্গজীবনের প্রধান প্রপঞ্চ।

অমন মহামারীর পেষণে মৃত্যুথেতলানো হয়ে পড়ে থাকা বঙ্গের কোনো একখানে আছে সুখতী নামের এক নদী। সেই নদীর কিনারে কিনারে কিনা একা টিকে আছে একটি ভিটা। সেইখানে বসত করতে থাকা দুইজন অচল ও বিপন্ন মানুষের সাথে একদিন অকস্মাৎ দেখা হয় এক মেয়ের। সেই মেয়ে যেমন জানে না কী তার নাম, বা জানে না তার পরিচয়; তেমনি অন্য দুইজনেরও অজানা তাদের সাকিন-কুষ্টির ঠায়ঠিকানা। এমনকী তারা এও জানে না, তারা জ্যাতা, না মউতা! প্রিয় পাঠক, বরং আপনিই এই ভেদের মীমাংসা দিন।

 

 

 


শেয়ার করুন

লেখক পরিচিতি

বাংলা ভাষার একজন ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক ও গল্পকার। আকিমুন রহমানের গ্রন্থসমূহ হলো : ‘আধুনিক বাংলা উপন্যাসে বাস্তবতার স্বরূপ (১৯২০-৫০)’, ‘সোনার খড়কুটো’, ‘বিবি থেকে বেগম’, ‘পুরুষের পৃথিবীতে এক মেয়ে’, ‘রক্তপুঁজে গেঁথে যাওয়া মাছি’, ‘এইসব নিভৃত কুহক’, ‘জীবনের রৌদ্রে উড়েছিলো কয়েকটি ধূলিকণা’, ‘পাশে শুধু ছায়া ছিলো’, ‘জীবনের পুরোনো বৃত্তান্ত’, ‘নিরন্তর পুরুষভাবনা’, ‘যখন ঘাসেরা আমার চেয়ে বড়ো’, ‘পৌরাণিক পুরুষ’, ‘বাংলা সাহিত্যে বাস্তবতার দলিল (১৩১৮-১৩৫০ বঙ্গাব্দ)’, ‘অচিন আলোকুমার ও নগণ্য মানবী’, ‘একদিন একটি বুনোপ্রেম ফুটেছিলো’, ‘জলের সংসারের এই ভুল বুদবুদ’, এবং ‘নিরুদ্দেশের লুপ্তগন্ধা নদী’।

আকিমুন রহমান ভালোবাসেন গন্ধরাজ আর বেলীফুল আর হিজলের ওড়াভাসা! আর তত্ত্বের পথ পরিক্রমণ! আর ফিকশন! ঊনবিংশ শতকের ইউরোপের সকল এলাকার গল্পগাঁথা আর এমিল জোলার কথা-বৈভব! দূর পুরান-দুনিয়ায় বসতের সাথে সাথে তিনি আছেন রোজকার ধূলি ও দংশনে; আশা ও নিরাশায়!

error: আপনার আবেদন গ্রহণযোগ্য নয় ।