০১.
পেখম মাঝে মাঝে মেলে ধরো, তবে তা
স্ত্রী ময়ূরের মতো
যেন আমি এক কালোবাজারি—
শেষ বিচারে অস্ত্রের লক্ষ্যবস্তু…
তোমার তাকগুলো খালি রেখো না
দুধে পূর্ণ করে তোলো
এভাবে আর স্ত্রী ময়ূরের মতো পেখম মেলো না
শিশুরা যেমন মাকেই বেশি বিশ্বাস করে
তেমনই আমাকেও বিশ্বাস করতে পারো
তুমি ন্যাটো, তবু তোমাতেই বেশি ভয়
তবু বিশ্বাস তো করি, সুযোগে সঘন হই
০২.
পৃথিবীর জিরাফেরা যেন শুয়ে থাকা রেললাইন
ট্রেনের ঘর্ষণে তাদের চিৎকার ঢেকে যায়
গলে গলে বিকৃত শরীর, ধুমড়েমুচড়ে আত্মা
তবু ট্রেন গতিশীল, তবু ট্রেন সংসদে যায়
বেচারা চড়ুই পাখিগুলো ক্যাবিনেট চেনে না
ডুবসাঁতার দিয়ে কোনো রকম বাঁচার চেষ্টা করে
আর এজমালি বাগানগুলো ফ্যাসিস্টদের ঘরে;
আর জুতাগুলো কংক্রিটে, ন্যাটোর বুটের নিচে…
০৩.
পৃথিবীতে কারও কারও দুটি চিতা থাকে, দেখতে খরগোশের মতো, আঁচ করার আগেই জিব আটকে নেয়, স্বপ্নসমাধি ঘটে, জুতার বেল্ট ছেঁড়ে, অতঃপর চিতাদের বোল্টে সোনা জমে…
আন্ডারওয়ার্ল্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হলেই সংসদ কিংবা সমস্তই জলপাই রঙের কাছিম—মহাশূন্যে হারিয়ে যায়…
০৪.
চারপাশে পানের বরজ, চারপাশে রক্তচারা, চারপাশে বিচ্ছেদ…
সবই ঘুমিয়ে পড়ে চালধোয়া পানি হলে
সবই ছড়িয়ে যায় মেঘমালায় রূপ নিলে
তির তির করে বেড়ে যাওয়া মহামহিম বেলুনে
বাঘছাল পরে হুংকারে কতিপয় মিউ মিউ ঝরে…
তোমার হৃদয় একটা ন্যাটো
তোমার হৃদয় একটা পুতিন
তোমার হৃদয় একটা চীন
তোমার হৃদয় একটা আফগান…
আমি ফেটে যাব, আমি বমি করব, তোমরা ঢুকে যাবে
আমার পেটে, চৌচির হয়ে যাবে আমার ওজোন চালুনি…
সবই ঘুমিয়ে পড়ে চালধোয়া পানি হলে
সবই ছড়িয়ে যায় মেঘমালায় রূপ নিলে
০৫.
মঞ্চ ঘুমিয়ে পড়ে, যখন তার কণ্ঠে যক্ষ্মা নামে
আল উপচে বন্যা হয়
কোপেনহেগেনে নদী-বৃক্ষ-পাখির যৌথ মহড়া…
জি-সেভেনের হাসি ঝুলছে, যেভাবে ঝোলে
নির্বাচনী পোস্টার বেশরম—গিজগিজ…
কাঁটার শত্রু জুতা, জুতার বান্ধব মান্দারিন হাঁস—
ধানের এ চারা যখন কিষানির ভূগোলে জাগে,
বিপ্লব আসে, দুধ জমে, মঞ্চ হয়ে ওঠে কৃষক—
পাখিরা কাকলি দিয়ে তার ক্ষুধা মেটায়…
কবি। প্রকাশিত কবিতার বই চারটি। ‘কাছিমের পিঠে গণতন্ত্র’ [২০১৩], ‘প্রতিশিসে অর্ধজিরাফ’ [২০১৯], ‘…দুধের গাই—এজমালি বাগান…’ [২০২০] ও ‘জুতার কিরণ’ [২০২১]।