সোমবার, নভেম্বর ২৫

শীতউষ্ণ তন্দুর : তনুজ সরকার

0

১.
ছিল এত স্বপ্ন-সাকিন

তাই এত স্বপ্ন-আঁখি পাশাপাশি শুলে
তত স্বপ্ন-পাখি করে

রাধার অটল চাষ।

রাধার অটল চাষ নিবারণ-হেতু

সঙ্গতিহীন জোড়া স্কন্ধ কঁকিয়ে উঠে শূলে,শীতে
যমুনার ঘাট থেকে কালো জল তুলে নিতে নিতে

একদিন গৃহযুদ্ধে সফলতা আসে;
গৃহযুদ্ধ বর্গীয় চাট।তদুপরি আমাদের রশিক সময়

পদের প্রতিভা ছেড়ে মুক্ত হয়,মুক্তো হয়,মত্ত হয়

ত্বরায় ত্বরায়
তার ত্বক-অন্তরালে

এক রজ্জুসম্রাট শব ও সীমান্ত গ্রহণ করে
একে একে রাধিকা হারায়,হারিয়ে

ওঁম
তন্দুরে মাংসের বিকল্প রাঁধে

এখন তন্দুরে রাধিকার সকল অঙ্গ হবে
শ্যাম ধীরে ধীরে; বলো হরি,বলো চন্দন,
বলো হলুদ,গাঢ় হলুদ,
বলো তূর্য,বলো হর্ষ দ্বিগুণ করা নিনাদ,
বলো কাঁচালঙ্কা,বলো জিরে।

 

২.

আহা,রশি ও রহস্য,সুর বাজে
আহা,একত্রে স্তব্ধতা একরাশ ফিঙে

তাদের মিয়োনো মুড়ির মতো চোখ
তুমি সমাচারী মুখে তুলেছিলে?

আরো হাট হবে জমিন কুপিয়ে?

শার্সিতে শার্সিতে জাদুর বয়াম খুলে রাখা
তবু পিঁপড়ে কুড়োতে গেলে হাত থেকে

পাখা পড়ে যায়,
পা থেকে অঙুঠি,তারপর নখ

তারও পর,দেখার মুদ্রা দিয়ে

নাকি এক হাট হবে জমিন কুপিয়ে।

 

৩.
পুরুষেরও দুটো আছে মাই,
আছে একটা প্রবাদও

দাশাউ থেকে দূরতম কফিশপে,
কারা যেন নিচু স্বরে হেঁটে চলে যায়

কব্জি ও ধড় ঘুরিয়ে তারা
নিজেকে নকল করে হাসে

কোমরের দক্ষিণে রাখা তাজা বেল্টে
নিজেদের আঙুল লড়িয়ে দিয়ে হাসে

তারা টেবলে উপুড় করে রাখে
ঝাঁঝালো কইয়ের মতো চোখ

দাশাউ থেকে দূরতম কফিশপে
অপেক্ষা তরল বানান

এবং প্রতি ঘুমের খোরাক হবে,
এমন কোনো শান্ত ও চেনা গান নেই

কেউ কেউ বলে ওঠে,
রাতের গভীরে শুধু ফড়িং
পোড়াতে মন চায়

কিন্তু নিতান্ত ডানা আছে,
এমন কোনো অমোঘ পতঙ্গও এই ভূস্বর্গে নেই

তাহলে কে আমাকে পুড়িয়ে দেখাবে?

আজ এই দেখাকে শোনা করার খিদে
আমার হয়েছে

আমি এক শীতউষ্ণ তন্দুর হয়েছি এই ভবে

যার দুটো অস্থির মাইয়ে জমে আছে
কিছুটা ক্যাফেইন আর

একটা প্রবাদ:

সজনী-সজনী প্রাতে,
পরো লেদারের গ্লভস হাতে।

৪.
পেয়েছি শরীর প্রাচীন করা কাজ।

প্রতিভূ তন্দুরে,শীতে
শীতের কলিজাবেশী রাত

উষ্ণ হয়
কাগজের উটের প্রকার

উষ্ণতা কাগজের উটের প্রকার

যে কাগজের দৈর্ঘ্য কেটে কেটে
একটা অদ্ভুত কাজ চালানোর স্মৃতি
আমি বানিয়েছি

মানুষের কানে গোঁজা বিড়ি
মানুষের বুকে গুঁজে দিয়ে

একটা অদ্ভুত কাজ চালানোর স্মৃতি
বানিয়েছি আমি

বানিয়েছি প্রথম চাবুক,
যে এই অশ্রাব্য আগুনকে
ফাঁকি দিয়ে বারবার চলে যায়—
এবং অচিরাৎ ফিরে আসে এখানেই

তন্দুরে খায়,তন্দুরে মোতে

আর সব বাক্য,স্তোক সারা হলে
রাবারের দেবতার কানে
এক নিমেষে খরচ হতে হতে

কোনো দূরাগত জীবনের এলিজি শোনায়।

 

৫.
তোমাকে দেখি,
নদীর কীর্তন খুলে যায়

সরকারি নথিপত্র সন্তাপ করে

কিছু তন্দুর উপত্যকা লাল হয়ে
অতিরিক্ত জ্বলে।

শেয়ার করুন

লেখক পরিচিতি

কবিতা, গদ্য, অনুবাদ মিলিয়ে তনুজের বইয়ের সংখ্যা সাত। শেষ দুটো বই : ‘হাতুড়িকে দর্শনীয় করে তোলার কৌশল’ ও ‘অযথা চিঠিপত্র বিলি না করে পোস্টাপিসটা খুলে যাচ্ছে সামহন্তা ফুলে’। সম্পাদনা করেন একটি লিটল ম্যাগাজিন—‘হারাকিরি’। ‘হারাকিরি’ নামেই একটি স্বাধীন প্রকাশনা সংস্থা চালান। থাকেন আগরতলা, ত্রিপুরায়। আগরতলার কবি-লেখকেরা তাকে কলকাতার সিক্রেট এজেন্ট ভাবেন। কলকাতাইয়া কবি-লেখকদের ধারণা, নির্ঘাৎ বাংলাদেশি। ও হ্যাঁ, আসলেই বাংলাদেশি।

error: আপনার আবেদন গ্রহণযোগ্য নয় ।