ছোটোখাটো গতরের বুড়া হমিরদ্দী গাইয়ের লেজ ধরে, মুর্শীদ, মুর্শীদ রে…বলে, গোলাপানির স্রোতে গতর ভাসিয়ে দেয়। তার পেছনে গোটা সংসারটা ভাসছে। বুক সমান পানিতে ডুবে যাওয়া বাড়িটা খা খা করছে! আধাবুড়ি বউটা সাঁতার কাটছে প্লাস্টিকের বড়ো একটা বোল ধরে। বোলের মাঝে মুরগিটা বুকের নিচে বাচ্চাদেরকে নিয়ে একেবারে কাঠ হয়ে বসে আছে। হমিরদ্দীর মেয়ে-পুত, পুতের বউ-নাতীরা আসছে বড়ো বড়ো ডেক-ডেকচি দুই হাতে চেপে ধরে। ছোটো মেয়েটা প্লাস্টিকের একটা বালতি ধরে কৌশলে স্রোতের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। বালতির মাঝ থেকে মুখ বাড়িয়ে ভয়ে কম্পমান ভঙ্গিতে বসে আছে ছাগলটা। তাদের পাশাপাশি পাঁক খেয়ে খেয়ে ছুটে আসছে জার্মনী কচুর-চালা, উজানের ঢলে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়া বাড়ির কাঠ, টিন, ঘরের টুই— ইঁদুর-ছুঁচো, শিয়াল, মানুষ, গরু, কচুর পাতায় পাতায় চুম্বকের মতো বসে পিঁপড়া-পতঙ্গের পাল ভেসে ভেসে আসছে। আড়ালে আড়ালে বিষধর সাপ। সবাই বাঁচতে চায়। শুকনা মাটি চায়। হমিরদ্দী সড়কে উঠতে উঠতে উপরের দিকে তাকিয়ে কাতরে ওঠে, মুর্শীদ তুমি কী চাও?
তারচেয়ে অনেক তাড়াতাড়ি তারা হাঁস-মুরগি, ছাগল-গাইটার সাথে জড়াজড়ি করে পাঁচ হাত বাই সাত হাত চালার নিচে ঠাঁই করে নেবে। নির্বিকার ভঙ্গিতে হমিরদ্দী পলিথিনে মোড়ানো একটা পোটলা থেকে সিদ্ধিভরা পাতার বিড়ি বার করবে, ধরাবে।
গোটা পরিবারটা তুমুল বৃষ্টির মাঝে, রাগী বাতাসের সাথে যুদ্ধ করে বাঁশ-দড়ি, পলিথিন দিয়ে খুব শীঘ্র একটা খোঁয়াড় বানাবে। এবং তারচেয়ে অনেক তাড়াতাড়ি তারা হাঁস-মুরগি, ছাগল-গাইটার সাথে জড়াজড়ি করে পাঁচ হাত বাই সাত হাত চালার নিচে ঠাঁই করে নেবে। নির্বিকার ভঙ্গিতে হমিরদ্দী পলিথিনে মোড়ানো একটা পোটলা থেকে সিদ্ধিভরা পাতার বিড়ি বার করবে, ধরাবে। তারপর লম্বা একটা দম দিয়ে দেখতে চাইবে খোদার দুনিয়াটা। দেখবার কী আছে? দুনিয়ার সব মাকলুকাত আজ প্রাণভয়ে ঠাঁই নিয়েছে মহাসড়কে। এই গজব তাদেরকে করেছে স্তব্দ, নিরাসক্ত। সবরকম জৈবিক উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে বলেই তো গরুর পায়ের কাছে বিড় দিয়ে বসে আছে একটা গোখরো সাপ। সে জানে, এখন গ্রহণ-কাল। চারপাশে উন্মুখ হয়ে আছে করাল গ্রাস।
হমিরদ্দী সিদ্দপায়ী মানুষ। সংসারে খুব একটা মন নাই। লোভ নাই। পেশায় নাওয়ের মেস্তরি হলেও নিজের একটা নাও নাই। এইরকম শতশত নাই নিয়েও সে সুখী। জীবনের নিত্য-অনিত্যে তার কিছু যায়-আসে না। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা চক্র জীবাত্মাদারীদের ভবিতব্য। জন্ম ও মৃত্যুর এই লীলার মাঝেই জীবনের অর্থ ও অর্থহীনতা সমান ভাবে লুকিয়ে আছে। যার বুঝবার দরকার সে বুঝে নেবে। আনন্দে বাঁচবে।
ভেতরে ভেতরে হমিরদ্দী খাঁটি বাউল। কোনো হিংসা-অহং নাই। সৃষ্টির প্রতি, স্রষ্টার প্রতি করুণ রসে ভেজা ভক্তি, মমতা বুকে চেপে সে নিজের মাঝে ডুবে থাকে। সে পরিশ্রমী ও চিন্তাপ্রিয় মানুষ। প্রাচীন গ্রীকদেশীয় জ্ঞানীদের মতো বিনয় তার আত্মার স্বরূপ। তাই তার ক্ষুদ্র জীবনের অভিজ্ঞতা ও বোধ দিয়ে নিজের একটা ছোট্ট জগৎ রচনা করে সে খুব নিঃশব্দে বেঁচে আছে।
হমিরদ্দী গোপনে গোপনে গান লিখতে চেষ্টা করে। নাওয়ের তক্তায় বাটাল চালাতে চালাতে সে গুনগুনিয়ে গায়। নিজের বিশ্বাস ও প্রজ্ঞার আলো দিয়ে গানের কথা সাজাতে চায়। মনমতো হয় না।
যখন নাওয়ের কাম থাকে না তখন হমিরদ্দী গিরস্তের বাড়িতে রোজে কাজ করে। চাষবাসে তার খুব তৃপ্তি। মাঠের নির্জনতায় সে নিজেকে খুঁজে পায়। বয়স ষাট পেরিয়ে গেলেও তার বিশ্বাস, এই খোঁজাখুঁজিতেই একদিন হৃদয়ে পরমের প্রেম পোক্ত হবে, হাতে গান আসবে। তাই হমিরদ্দী কখনো কখনো দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজেকে শোনায়, এইডা হইল তলে তলের পথ। জীন্দিগীভর তালাশে থাকতে হয়।
বৈশাখ মাসে কাম করে যা পেয়েছিল, খেয়ে-পরে এখনো দশ-পনেরো মণ ধান রয়ে গেছে। এইটাই তার সারা বছরের সম্বল। এখন সব পানির তলে। কারো ডুবেছে তিরিশ মণ। অনেকের শতশত মণ। রাইস মিলগুলোর হাজার হাজার মণ ধান মাত্র চার ঘন্টার মাঝে মাথা সমান পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
ছুটে আসা পানির খলখল শব্দে হমিরদ্দীর ঘরের কেউ সকাল থেকে এক ফোঁটা পানি খাওয়ারও সময় পাইছে না। চোখের পলকে সব হারিয়েও এখন তারা কত শান্ত! যে জীবনের জন্য তাদের এই প্রাণপণ লড়াই সেই জীবন বুকে চেপে তারা এখন নির্লিপ্ত ভগবান।
পুতের বউ বুকের বাচ্চার মুখে শুকনা স্তন গুঁজে দিয়ে মাটির সাথে মিশে আছে। পাশেই তার বড়ো ছেলেটা। সংসারের জ্বালায় অল্পদিনে বেচারার চুলদাঁড়ি সাদা হয়ে গেছে! বুড়িটা এক কোনায় মরা কাঠ হয়ে পড়ে আছে। করুণ চোখ দুইটা পলিথিনের চালের দিকে স্থির। যেন আর কোনোদিন এই চোখ বন্ধ হবে না!
ছোট্ট মেয়েটা তার ছাগলটা বুকের পাশে ধরে বসে বসেই ঢুলছে। ক্ষুধার্ত পশুর গরম নিশ্বাসে নিশ্বাস মিশিয়ে সে এখন শুধু একথালা ভাতের খোয়াব দেখছে। পুতের বউ বুকের বাচ্চার মুখে শুকনা স্তন গুঁজে দিয়ে মাটির সাথে মিশে আছে। পাশেই তার বড়ো ছেলেটা। সংসারের জ্বালায় অল্পদিনে বেচারার চুলদাঁড়ি সাদা হয়ে গেছে! বুড়িটা এক কোনায় মরা কাঠ হয়ে পড়ে আছে। করুণ চোখ দুইটা পলিথিনের চালের দিকে স্থির। যেন আর কোনোদিন এই চোখ বন্ধ হবে না!
এইভাবে মাইলকে মাইল সড়কের কালো পিচে মুখ লুকিয়ে অসারে পড়ে আছে হাজার হাজার মানুষ। কোথাও এক বিন্দু আলো নাই। আশা নাই। মানুষের হাঁচি-কাশি কিংবা কোনো রাও-রব নাই। সারা সড়কে পলিথিনের ছাউনির নিচে শতশত গরু তবু কোনো হাম্বা ডাক নাই। শুধু ঢেউয়ের গর্জন, বাতাসের শোঁ শোঁ। অকল্পনীয় গজবে সবাই স্তব্দ। মাঝে মাঝে বিজলির চমকে সারাটা সড়ক ঝলসে ওঠে। তখন মনে হয় এইটা কোনো অভিশপ্ত জনপথ! এইখানে বুঝি সৃষ্টি ও স্রষ্টার মাঝে কোনো প্রেম নাই।
এখন আর বৃষ্টি নাই। জোরালো বাতাসের সাথে মুখচোরা কয়টা তারা আকাশে উঁকি দিতেছে।
পলিথিনের কোনা তোলার খচমচ শব্দ হয়। গাইয়ের কোমরে হেলান দিয়ে বসে থাকা হমিরদ্দী চোখ খোলে। তার ছোটো ছেলে বেরিয়ে গেল। কয়েকটা খুপড়ি পেরিয়ে একটা ছিপছিপে ছায়া সারা গতরে রহস্য মেখে এইদিকে আসছে!
ভাব আগেই ছিল। সব হারিয়ে আদিম এই পৃথিবীতে এসে, এখন তারা দুইজন পরস্পরকে পরানে পরানে পেতে চায়। সড়কের পাশের জারুলতলায় দুই ছায়া এক হয়। জড়াজড়ি করে। নানান রকম শব্দের লেনদেনে তাদের ভালোবাসা নির্জন-কালো রাতটাকে ক্ষণে ক্ষণে চমকে দেয়। পরম আর মরমে বিশ্বাসী হমিরদ্দী অঘোর অন্ধকারে শত কষ্টেও হাসে, ভোগ করো পুত…, ভোগ না করলে ত্যাগের মহিমা বুঝবা কীবায়?
দিনরাত টানা তিনদিন বৃষ্টির তোড়ে সড়কটা মরার মতো ভিজল। স্থানীয় মাদরাসার ছাত্ররা পানির বোতল আর পলিথিন ব্যাগ দিয়ে বলে গেছে, বন্যার পানি খাবেন না। আর পলিথিনে টয়লেট করে পানিতে ফেলে দিবেন। কিন্তু কেউ একমুঠ খাবার দিচ্ছে না দেখে হমিরদ্দী কাতরে উঠে, অ রে…পুত, খাওন না দিলে আগতাম কী?
এখন আর হমিরদ্দীর পোলার ছায়া মেয়েটার ছায়ার সাথে মিশে যায় না। তারা তিনদিনের অনাহারী। তাদের দেহে কামনার আগুন শূন্য। শরীরের আগুন নিভে গেলে হৃদয় কথা কয়। তাই তারা এখন গাছের শিকড়ে বসে জড়াজড়ি করে বুকফাঁটা রোদনে ভাসে। তারা পরস্পরকে সারা জীবনের জন্য চায়। কিন্তু কীভাবে? এই বন্যায় ধনী-গরিব সব এক কাতারে। সামনে গোলামি করেও একপেট ভাত পাওয়া যাবে না। পেটে ভাত না থাকলে ভালোবাসা আসে না, হৃদয় বাঁচে না।
হুম… বলে হমিরদ্দী গভীর নিশ্বাস ছাড়ে। দিন ফিরলেই সে ছেলেটাকে বিয়ে করাবে। পাত্রী হবে এই মেয়েটা। জীবনকে চিনতে হলে মনের মতন সঙ্গী চাই। একদিন কামনার আগুন কঠিন জীবনের উত্তাপে ঠান্ডা হবে। সংসার বড়ো হবে। তখন শরীরের চেয়ে সম্পর্কটা অনেক বেশি বড়ো হয়ে ছায়া দেবে, প্রেম দেবে। প্রেমে জীবের মুক্তি।
হমিরদ্দী অভিজ্ঞতায় জানে, ত্রাণ আসবে প্রাণ যায় যায় মুহূর্তে। প্রথম প্রথম আসবে দরদি পাবলিকরা। তারপর আসবে এনজিও, নানান প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। সবার পরে আসবে সরকার। তখন সব আশ্রয় কেন্দ্রের মানুষ থাকবে যার যার বাড়িতে। সরকারের ত্রাণ খাবে ক্ষমতাধর পেটমোটারা। সংসারটাই খাওয়া-খাওয়ির। সাপে খায় ব্যাঙ। চিলে খায় সাপ।
হমিরদ্দী আরেকটা বিড়ি ধরায়। ক্ষুধার পেটে ভাবনা জমে না। তাই সে একটার পর একটা বিড়ি টানছে। ভাবছে। এইখানে সিগেরেট-বিড়ি পাওয়া যায় আইন মাফিক। কিন্তু সিদ্ধি নিষিদ্ধ। সে খেয়াল করে দেখেছে, সিদ্ধিপায়ী মানুষরা সহজে ঝগড়া করে না। সামান্যে তুষ্ট। তাই টাকাপয়সার লোভ নাই বললেই চলে। তারপর আছে ঔষধি গুণ…। তাবাদে সিগারেটের দোষ ছাড়া কোনো গুণ নাই। এইসবের অর্থ কী?
হমিরদ্দী নুয়ে নুয়ে মাথা ঝাকায়, নিজের ক্ষতি নিজে করবার সব পথ খোলা। ভালা হওয়ার জইন্য এইখানে কোনো পথ নাই…
ভাবতে ভাবতে হমিরদ্দী তার নিজের জগতে ডুবে যায়। এই পানিডুবা সংসারের মতো নিজেকে অতল অতল লাগে। প্রতি মুর্হূতে লড়তে লড়তে একদিন এই মানুষগুলো আবার উঠে দাঁড়াবে। জীবনের চাকা আগের রেখা ধরে চলতে শুরু করবে। হাওরবাসীর জীবনচক্রের এই গদ্যই তো বলে দেয়, মানুষ অপরাজেয়। সে কব্জির জোর আর মগজ দিয়ে হাজার হাজার বছর পেরিয়ে এসেছে। শত কষ্টের মাঝেও কত গান-কবিতা আর কথা দিয়ে তারা জীবন রচনা করেছে!
হমিরদ্দীর বিবেচনায় মানুষ সৃষ্টি পিয়াসী। হৃদয়ের এই রত্ন সে পেয়েছে তার স্রষ্টার কাছ থেকে। তিনি আদমকে সৃষ্টির জন্য বেছে নিলেন কাদামাটি। নিতে পারতেন আকিক পাথর, সোলেমানি পাথর কিংবা সোনা-রুপা-হীরা।
হমিরদ্দীর বিবেচনায় মানুষ সৃষ্টি পিয়াসী। হৃদয়ের এই রত্ন সে পেয়েছে তার স্রষ্টার কাছ থেকে। তিনি আদমকে সৃষ্টির জন্য বেছে নিলেন কাদামাটি। নিতে পারতেন আকিক পাথর, সোলেমানি পাথর কিংবা সোনা-রুপা-হীরা। বানাবার আগে তার মনে ছিল, তিনি জগতের খলিফা বানাবেন। কিন্তু রসে ভেজা নরম মাটি দিয়ে আদমকে বানাতে বানাতে সৃষ্টির আনন্দে তিনি বানালেন মাটির মানুষ।
একদিন বানের পানি নেমে যাবে। পচা ঘাস-লতার কালচে আবরণ ফুঁড়ে বেরুবে কচিকচি সবুজ ঘাস। মুক্তার দানার মতো তাদের শরীরে জ্বলবে জীবন। সৃষ্টিই মাটির ধর্ম। সেই মাটির মানুষ তার স্রষ্টার মতোই সৃষ্টিশীল। তাই মগজ আর হৃদয়ের চর্চা মানুষের জীবনের একটা বিশেষ উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।
হমিরদ্দী বসে বসেই পলিথিনের কোনা তুলে ধরে। বৃষ্টি নাই। ধাড়ালো বাতাসের সাথে মাঝে মাঝে বিজলি মারে। গাছের আড়ালে ছেলেমেয়ে দুইটা হাত ধরাধরি করে বসে আছে। তাদের পায়ের কাছে গর্জন করতে করতে আছড়ে পড়ছে ঢেউ। অথচ তাদের করুণ চোখে কত তরুণতর স্বপ্ন!
বুড়িটা মরার মতো চিত হয়ে পড়ে আছে। বাতাসে কাপড় সরে গিয়ে বেরিয়ে পড়েছে আমসি বুক। কুঁচকানো চামড়ার গোল গড়নে দুনিয়ার নিঃস্বতা, অর্থহীনতা মুখীয়ে আছে। আজ কোনো কামনা নাই। চাওয়া নাই। শুধু হাহাকার! আশরাফুল মাকলুকাতের এই অবমাননা, অনাহূত ক্ষয় কিংবা অভিযোজনক্ষমতা দেখার মতো সত্যিই কী কেউ আছে?
হমিরদ্দী মনের দ্বন্দকে যুক্তি দিয়ে পাশ কাটাতে চায়।
ছেলেমেয়ে দুইটা জারুলের শিকড়ে পাশাপাশি মরার মতো বসে থাকে। তাদেরকে ঘিরে রেখেছে অন্ধকার আর মশার ঝাঁক। হমিরদ্দী পাঁচটা সন্তান পয়দা করেছে। সন্তানদের কষ্ট, সড়কের মানুষ-পশুর কষ্ট বুকে নিয়ে সে দুই চোখ এক করছে না আজ তিনরাত তিনদিন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যতোই শিখরে উঠুক তবু মানুষ প্রকৃতির কাছে কত অসহায়।
এইসব ভাবতে ভাবতে হমিরদ্দীর কান্না পায়। কিন্তু টানা উপাসে তার চোখের পানিও শুকায়া গেছে। অসার দেহটা টেনে টেনে সে খুপড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে।
হঠাৎ হমিরদ্দী দুই হাত উপড়ে তুলে কাঁদতে কাঁদতে বলে, মুর্শীদ রে… জমিনে যত সৃষ্টি আছে, মানুষ আছে, হক্কলের পক্ষ থাইকা কৈতাছি: আমরা তর দয়া চাই না, করুণা চাই না, প্রেম চাই। ভালোবাসার রসে ভিজে ভিজে কয়টাদিন বাঁচতে চাই।
জন্ম ময়মনসিংহরে গফরগাঁওয়ে ১৯৬৬ সালে। বিএসসি সম্পন্ন করে শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত আছেন। র্বতমানে থাকনে সুনামগঞ্জে। প্রকাশতি গল্পের বই: ‘উল্টারথে’ [২০০৮], ‘ভাতবউ’ [২০১৩] ‘অসুখ ও টিকনের ঘরগিরস্তি’, [২০১৭]। উপন্যাস: ‘আত্মজীবনের দিবারাত্রী’ [২০১১], ‘রাজকুমারী’ [২০১৯]।