আমি স্কুল ম্যাগাজিনে প্রতিবছর কবিতা লিখতাম ঠিকই কিন্তু কবিতা লিখতে আসাটা একেবারেই পরিকল্পনামাফিক ছিল না। শুধুমাত্র তথ্যের কারণে বলি, আমি একটা রামকৃষ্ণ মিশনের ফার্স্ট বয় ছিলাম। তো এইরকম নামী স্কুলের ফার্স্ট বয়দের যেরকম স্বপ্ন বা আকাঙ্ক্ষা থাকে আমারও তাই ছিল। মাধ্যমিকে ভাল রেজাল্ট তো বটেই, ভেবেছিলাম জয়েন্টে ভালো একটা র্যাঙ্ক করে ভালো একটা প্রতিষ্ঠানে ডাক্তারি পড়ব। সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু ক্লাস নাইন থেকে টেনে ওঠার পর ভয়াবহ ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হই। আসলে হোস্টেলে থাকতাম ঠিকই কিন্তু হোস্টেলের কোনো ছেলের সঙ্গে আমার কোনো বন্ধুতা ছিল না। থাকবেই বা কীভাবে? হোস্টেলের বেশির ভাগ ছাত্রই এসেছে সমাজের উঁচু তলা থেকে। তাঁদের বাবারা কেউ ডাক্তার কেউ বা আবার ইঞ্জিনিয়ার কেউ খুব বড় ব্যবসায়ী। আর আমার বাবা? একজন সাধারণ স্কুল মাস্টার। কতই বা তাঁর বেতন? আর তাছাড়া আমি হোস্টেলে অ্যাডমিশন নেওয়ার আগে থাকতাম মুর্শিদাবাদ জেলার এক অজ পাড়াগাঁয়ে। মোরগ্রাম। সেখানে বিদ্যুৎ অব্দি ছিল না। আমরা সন্ধ্যায় লন্ঠন জ্বালিয়ে পড়াশোনা করতাম। হাঁটতাম খালি পায়ে। খালি পা-তেই স্কুল যেতাম। বিকেল হলে মহানন্দে ন্যাকড়া দিয়ে বেঁধে ফুটবল খেলতাম। আর আদবকায়দা? তা প্রায় কিছুই জানতাম না।
এ-ই অবস্থায় অ্যাডমিশন টেস্ট দিয়ে ঢুকে পড়ি মিশনে। ঢুকলাম তো বটে কিন্তু কিছুতেই মানিয়ে নিতে পারছিলাম না। পারব ই-বা কীভাবে? আমার বন্ধুহীন হোস্টেলজীবনে বাবাই ছিলেন আমার একমাত্র বন্ধু। আমার সুখ দুঃখের একমাত্র সহচর।
এ-ই অবস্থায় অ্যাডমিশন টেস্ট দিয়ে ঢুকে পড়ি মিশনে। ঢুকলাম তো বটে কিন্তু কিছুতেই মানিয়ে নিতে পারছিলাম না। পারব ই-বা কীভাবে? আমার বন্ধুহীন হোস্টেলজীবনে বাবাই ছিলেন আমার একমাত্র বন্ধু। আমার সুখ দুঃখের একমাত্র সহচর। আমার জীবনের সব কথা বাবাকেই বলতাম। বাবা সাতদিন অন্তর একবার হোস্টেলে আসতেন। আমি অপেক্ষা করে থাকতাম সেই দিনের জন্য। রোববার। এ-ই দিনটি আমার কাছে ছিল স্বাধীনতা দিবসের মতো। কিন্তু বাবার সেই আসাটা অকস্মাৎ বন্ধ হয়ে গেল। নানারকম রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি কিছুদিনের জন্য স্কুলের চাকরি থেকে অব্যাহতি নিলেন। থাকতে শুরু করলেন দেশের বাড়িতে। এর ফলে হোস্টেলে আমি খুব একা হয়ে গেলাম। ধীরে ধীরে নিজের অজান্তেই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়লাম। ডিপ্রেশন গ্রাস করল আমাকে। ভয়াবহ ডিপ্রেশন। এই ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমি নিজের মতো করে নানান সময়ে নানান কিছুকে আশ্রয় হিসেবে বেছে নিতে শুরু করলাম। এসব করতে গিয়ে খুব স্বাভাবিকভাবে রেজাল্ট আশানুরূপ হল না। যে ছেলে স্ট্যান্ড করার কথা ভাবত সে নিজের স্কুলেই ফার্স্ট হতে পারল না। ক্রমশ আমি একাডেমিক জগৎ থেকে আরও বিচ্যুত হতে থাকলাম। মাধ্যমিক পাশ করার পরে, সত্যি বলতে কী, আমি প্রায় কোনোদিনই স্কুল যাইনি। মহারাজজী আমাকে খুব ভালবাসতেন, বাবার অসুস্থতার ব্যাপারটা জানতেনও তাই স্কুলে না যাওয়ার ব্যাপারটা কনসিডার করতেন। এইচ এস পাশ করার পরে আমি পদার্থবিদ্যায় ভর্তি হই। নামমাত্রই ভর্তি। যেহেতু কলেজ হোস্টেল, দেখাশোনা করার কেউ নেই। আমি ডিপ্রেশনের ভূত মাথায় নিয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠলাম। ক্রিকেট, ফুটবল, ভলি, টেবিল টেনিস তো খেলতামই। এর সঙ্গে শুরু হল নেশা। মদ, গাঁজা, নানারকম ঘুমের ট্যাবলেট সেবন। এতে সাময়িক ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি হত ঠিকই কিন্তু, আমি বুঝতে পারছিলাম আমি এক গভীর খাদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু উপায়ই-বা কী? ডাক্তার দেখাব? এইসব ভাবছি আর আশ্রয় হিসেবে ততদিনে আমি পেয়ে গেছি একজনকে। সে, আর অন্য কেউ নয়, কবিতা। আমি কবিতায় আক্রান্ত হলাম। নানারকম বইপত্র তো পড়তামই, সবই অবশ্য সিলেবাসের বাইরের বই, পাশাপাশি কবিতা লেখা চলতে শুরু করল। এইসময় একটা জিনিস লক্ষ করলাম, আমি যখন কবিতার কথা ভাবতাম, লিখতাম, তখন কিন্তু নিজেকে অবসাদগ্রস্ত মনে হত না। তবে এসময় আমি লিটল ম্যাগাজিনের যে বিরাট জগৎ রয়েছে সে বিষয়ে একেবারেই অবহিত ছিলাম না।
জানতামই না কিছু। বস্তুত ‘দেশ’ পত্রিকা ছাড়া আর যে কোনো সাহিত্য পত্রিকা আছে তা জানতাম না। সেসময়, খুব একটা বুঝতে পারতাম না ঠিকই, কিন্তু আমি ছিলাম জীবনানন্দ দাশের ভক্ত। এছাড়া কবিতা পড়তাম নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শঙ্খ ঘোষ, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, জয় গোস্বামী প্রমুখের। অনুবাদেও, মনে পড়ছে, পড়তাম বেশ কিছু বিদেশি কবিদের কবিতা। লোরকা, নেরুদা, রিলকে।
আমার মনে হয় একটা কবিতার বই যদি বের করা হয় তাহলে বাবার মনে হতে পারে ছেলে ডাক্তার না হলেও কবি তো হয়েছে। খুবই মূর্খের ভাবনা। কিন্তু বই কীভাবে ছাপাতে হয়, তা জানি না। আমার কোনো কবিবন্ধুও ছিল না। আস্তে আস্তে সিউড়ির কবিদের সঙ্গে যোগাযোগ হল। তাঁরা পরামর্শ দিলেন গৌতম নামে অনেক কবি আছেন আমি চাইলে নামটা চেঞ্জ করে নিতে পারি। গৌতম মণ্ডল। একেবারেই কমন নাম, আমারও তাঁদের প্রস্তাব মন্দ মনে হল না। আমি ভেবে চিন্তে একটা নাম ঠিক করলাম। অরিন্দম নিয়োগী।
এদিকে একাডেমিক পড়াশোনা থেকে প্রায় বিচ্যুত হয়ে যাওয়ায় বাবা খুব আশাহত হন। তিনি হাইপার টেনসনে ভুগতে থাকেন। এইসময় বাবাকে কিছুটা সান্ত্বনা দেওয়ার কথা মনে হয়। কিন্তু কীভাবে? আমার মনে হয় একটা কবিতার বই যদি বের করা হয় তাহলে বাবার মনে হতে পারে ছেলে ডাক্তার না হলেও কবি তো হয়েছে। খুবই মূর্খের ভাবনা। কিন্তু বই কীভাবে ছাপাতে হয়, তা জানি না। আমার কোনো কবিবন্ধুও ছিল না। আস্তে আস্তে সিউড়ির কবিদের সঙ্গে যোগাযোগ হল। তাঁরা পরামর্শ দিলেন গৌতম নামে অনেক কবি আছেন আমি চাইলে নামটা চেঞ্জ করে নিতে পারি। গৌতম মণ্ডল। একেবারেই কমন নাম, আমারও তাঁদের প্রস্তাব মন্দ মনে হল না। আমি ভেবে চিন্তে একটা নাম ঠিক করলাম। অরিন্দম নিয়োগী। এ নামেই হোস্টেলবন্ধুদের পয়সায় প্রকাশিত হল আমার প্রথম বই। ‘উজাগর আঁখি’। এর মধ্যে আমার চিন্তা ভাবনার জগতে অনেক চেঞ্জ আসে। আমি লিটল ম্যাগাজিনের জগতের সঙ্গে পরিচিত হতে শুরু করি।
রমেন্দ্রকুমার আচার্যচৌধুরী, মণীন্দ্র গুপ্ত, উৎপলকুমার বসু, বিনয় মজুমদার, আলোক সরকার, প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত, কালীকৃষ্ণ গুহ, গীতা চট্টোপাধ্যায়, দেবারতি মিত্র, ভাস্কর চক্রবর্তী, যুগান্তর চক্রবর্তী, দেবদাস আচার্য, গৌতম বসু, পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলাল, একরাম আলি, অনুরাধা মহাপাত্র, মৃদুল দাশগুপ্ত, নির্মল হালদার প্রমুখের কবিতার সঙ্গে পরিচিত হই। ‘উজাগর আঁখি’ বইটা প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই আমার মনে হতে থাকে বইটা কিছুই হয়নি। তাই বইটা বিলি বন্টন করা থেকে বিরত থাকি। প্রথম বই তাকে নিয়ে কবিদের একটা আবেগ থাকেই। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে এর উল্টোটা হয়। বইগুলো কাউকে দেওয়ার পরিবর্তে একটা দড়ি দিয়ে বেঁধে খাটের নীচে ফেলে রাখি। সম্পূর্ণ ঘোরের মধ্যে কয়েকদিনে ভিতর লিখি ফেলি আরেকটা কাব্যগ্রন্থ। ‘রাত ও রাতের বিভা’। বইটা ছাপতেও দিই সিউড়ির এক কবিপ্রকাশককে।
কিন্তু বই প্রকাশ হওয়ার আগেই বাবা মারা যান। আমি আরো একা হয়ে যাই। একা একাই উদভ্রান্তের মতো বিভিন্ন জায়গায় যেতে শুরু করি, বাউল ফকিরদের বিভিন্ন আখড়ায়। দু’একটা কবিসভাতেও যাই। বইটা উপস্থিত কবিদের দিই। অনেককে ডাকযোগেও পাঠাই। বেশিরভাগ কবিই পাঠপ্রতিক্রিয়া জানান।
কিছুদিন মেলামেশা করার পর, বুঝতে পারি, কবিতাবাজারে নানান ধরনের গোলমাল রয়েছে। এখানে প্রকৃত কবিরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উপেক্ষিত থাকছেন আর অনেক মাইনর কবি বাংলাভাষার প্রধান কবি হিসেবে বিভিন্ন মঞ্চ আলোকিত করে বসে থাকছেন। পুরস্কৃতও হচ্ছেন তাঁরা। এর একটা কিছু হেস্তনেস্ত করার ভাবনা মাথায় আসে। ১৯৯৬ সাল নাগাদ ওই ভাবনা থেকে একটা কবিতা পত্রিকা প্রকাশ করার কথা ভাবি। আদম। ঠিক হয়, আড়ালে থাকা শক্তিশালী কবিরা তো থাকবেনই পাশাপশি তরুণ কবিদের কবিতা, কবিতাভাবনা, সাক্ষাৎকার, গ্রন্থ আলোচনা নিয়ে পত্রিকাটি প্রকাশ হবে। প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয় দীপাবলি ১৯৯৬-এ।
১৯৯৯ সাল নাগাদ আমি একটা স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পাই। চাকরিস্থল: নদীয়ার তাহেরপুর। এখান থেকে কলকাতা খুব দূরে না হওয়ায় কলকাতায় যাতায়াত শুরু হয়। আস্তে আস্তে চিনতে থাকি কফিহাউস, পাতিরাম, লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণাকেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি। কফিহাউসে আড্ডা দিই উৎপলকুমার বসু, পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলাল, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, মৃদুল দাশগুপ্ত, রণজিৎ দাশ গৌতম চৌধুরী প্রমুখের সঙ্গে। বন্ধুত্ব হয় সমবয়সী কবিদের সঙ্গেও।
এরপর ১৯৯৯ সাল নাগাদ আমি একটা স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পাই। চাকরিস্থল: নদীয়ার তাহেরপুর। এখান থেকে কলকাতা খুব দূরে না হওয়ায় কলকাতায় যাতায়াত শুরু হয়। আস্তে আস্তে চিনতে থাকি কফিহাউস, পাতিরাম, লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণাকেন্দ্র, পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি। কফিহাউসে আড্ডা দিই উৎপলকুমার বসু, পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলাল, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, মৃদুল দাশগুপ্ত, রণজিৎ দাশ গৌতম চৌধুরী প্রমুখের সঙ্গে। বন্ধুত্ব হয় সমবয়সী কবিদের সঙ্গেও। শুধুমাত্র আড্ডা দেব এইকারণে কলকাতায় ঘরভাড়া করি। এইবছর কবিতাপাক্ষিক থেকে প্রকাশিত হয় আমার আরো একটি কাব্যগ্রন্থ। ‘কন্দমূলের আকাশ’। এইখানে আরো একটা কথা অনুল্লেখ থেকে গেল। এইবছরই আলাপ হয় গৌতমদার সঙ্গে। কবি গৌতম বসু। অসামান্য এক মানুষ। কবি। তাঁর মতো মানুষ আমি বাংলাবাজারে খুব একটা দেখিনি। কবিতা লিখতে এসে যদি কিছু পেয়ে থাকি তা হলো গৌতম বসুর মতো মানুষের সঙ্গে আলাপ এবং সেখান থেকে গভীর বন্ধুত্ব। এইসময় কবিতা নিয়ে হেস্তনেস্ত কিছু করব যখন ভাবছি তখন একটা জিনিস খেয়াল হয়। আড়ালে থাকা কবিদের অনেকের বই পাওয়া যায় না। নেই। বই-ই যদি না থাকে তাহলে কবিকে পড়া হবে কীভাবে? এই বিষয়টা আমাকে ভাবায়। আমি একটা প্রকাশনা খোলার ভাবনাচিন্তা শুরু করি। ঠিক করি আদম থেকে ধারাবাহিক ভাবে আড়ালে থাকা কবিদের বই প্রকাশিত হবে। কালীকৃষ্ণ গুহ এবং নির্মল হালদারের বই প্রকাশের মধ্য দিয়ে প্রকাশনার যাত্রা শুরু হয়। এখনো অব্দি প্রায় আড়াই শো গুরুত্বপূর্ণ বই প্রকাশিত হয়েছে। আদম থেকে অরিন্দম নিয়োগী নামে আমারও দুটি বই প্রকাশিত হয়েছে। ‘রাত ও রাতের বিভা’র পরিবর্ধিত ২য় সংস্করণ এবং ‘ভূপাখি ভস্মপাখি’।
এদিকে অরিন্দম নিয়োগী নামটা যত পরিচিত পেতে থাকে মাথায় তত অস্বস্তি বাড়তে থাকে। সাফারিং হয়। কবিতা তো সত্যকে প্রকাশ করে। সত্য ও সুন্দরই হল কবিতা। কবিতা যদি সত্যই হয় তাহলে ছদ্মনামে তা প্রকাশ করার দরকার কেন?
আছে কি কোনো দরকার? আমি খুব সংকটে পড়ে যাই। এতদিন ধরে একটা নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছি, সেই নামে পরিচিতিও পেয়েছি এবার সেই নামকে ত্যাগ করব? আমার অন্তরাত্মা আমাকে নিজের নামে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। অবশ্য অনেক সিনিয়র কবি ছদ্মনামে লেখা চালিয়ে যাওয়ারও পরামর্শ দেন। তাঁরা উদাহরণ হিসেবে শঙ্খ ঘোষ, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়, ভাস্কর চক্রবর্তীর কথা বলেন। কিন্তু এই যুক্তি আমাকে সন্তুষ্ট করতে পারে না। আমি আবার বেশ কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে গৌতম মণ্ডল নামে লেখালেখি শুরু করি। পাশে পেয়ে যাই গৌতমদাকে তো বটেই, শঙ্খ ঘোষকেও। ২০০৮ সালে আর ছদ্মনামে নয়, স্বনামেই প্রকাশিত আমার ষষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ। ‘দুর্লভ শিখরদেশ’। কবিতার শিখরদেশ স্পর্শ করতে পারিনি, পারবও না কোনোদিন কিন্তু সান্ত্বনা এ-ই, কবিতাকে নিয়ে প্রায় একটা জীবন কাটিয়ে দিলাম। কবিতার জন্য জীবনসঙ্গিনীও পেলাম। কিন্তু তা নিয়ে, আজ নয়, অন্য একদিন লেখা যেতে পারে। লিখব।
জন্ম ১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪। পেশা শিক্ষক। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : ‘উজাগর আঁখি’ (১৯৯৪), ‘রাত ও রাতের বিভা’ (১৯৯৫), ‘কন্দমূলের আকাশ’ (১৯৯৯), ‘কালপুরুষ’ (২০০০), ‘ভূপাখি ভস্মপাখি’ (২০০৫), ‘দুর্লভ শিখরদেশ’ (২০০৯), ‘অলসরঙের টিলা’ (২০১২), ‘বিবাহের মন্থর আয়োজন’ (২০১৬), ‘অরচিত অন্ধকার’ ( ২০১৯)। সম্পাদিত পত্রিকা : ‘আদম’। সম্পাদিত গ্রন্থ : ‘কমলকুমার মজুমদারের চিঠি’, ‘আমার স্বামী কমলকুমার : দয়াময়ী মজুমদার’, ‘গদ্যসংগ্রহ : গীতা চট্টোপাধ্যায়’, ‘কবিতাসংগ্রহ : সুধীর দত্ত’, ‘কবিতাসংগ্রহ : সমীরণ ঘোষ’। প্রাপ্ত পুরস্কার : পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি পুরস্কার, অহর্নিশ সম্মাননা, ঐহিক সম্মাননা প্রভৃতি।