যে মানুষটি সমস্ত জীবন শিল্প-সাহিত্যকে দিয়ে গেলেন, বিনিময়ে চাইলেন না কিছুই; যে মানুষটি ভালোবাসায় ভরিয়ে তুললেন সমতল থেকে পাহাড়— বিনিময়ে চাইলেন না কিছুই; যে মানুষটি মানুষ থেকে প্রাণী— সর্বপ্রাণে বিশ্বাস রাখলেন, বিনিময়ে চাইলেন না কিছুই— তিনি মাহমুদুল হাসান মাছুম। নগরের এই যন্ত্রমানবদের বলতে হচ্ছে তিনি কবি ছিলেন। নগরের এই জঞ্জালের ভেতরও তিনি ছিলেন সবুজ-সতেজ একজন মানুষ। পাহাড়ের কাছ থেকে কি তিনি এই বরপ্রাপ্ত হয়েছিলেন? হয়তো, হয়তো না। কিন্তু তিনি ভালোবেসেছিলেন প্রাণকে, সবুজকে, সমতলকে, পাহাড়কে, নগরকে, নগরের জঞ্জালকে, পাহাড়ের সবুজকে, উত্তরের লাল মাটিকে। তিনি আর কী ভালোবেসেছিলেন? তিনি ভালোবেসেছিলেন, অক্ষরের বিষ ও বসন্ত।
এমন একজন মানুষের মৃত্যু হলে নগরের কিছুই যায় আসে না। এমন একজন মানুষের মৃত্যু হলে কেবল পাহাড় কাঁদে। পাহাড়ে তাঁর অগণন সন্তানের কান্নায় পাহাড় জেগে ওঠে। তাঁর দুই আত্মজা, স্ত্রী— তাদের কূল অকূল হয়। তাঁর পোষা বিড়ালগুলো ইতিউতি তাকায়, না খেয়ে থাকে। আমাদের কিচ্ছু যায় আসে না। সত্যিই কি কিছুই যায় আসে না? আসে। ওই যে বললাম তিনি অক্ষর ভালোবেসেছিলেন। অক্ষরে অক্ষরে মিলিয়ে দিতেন জীবনের সমীকরণ। আমরা, যারা শিল্প-সাহিত্য করি বলে নিজেদের দাবি করি আমাদের দায় আছে তাঁকে শ্রদ্ধা জানানোর। আমাদের দায় আছে তাঁর ভালোবাসার ঋণ শোধের। আমাদের দায় আছে তাঁর অসমাপ্ত স্বপ্নগুলোকে বাস্তবায়ন করার। এই ঋণ হয়তো শোধযোগ্য নয়, কিন্তু একটা তীব্র অপরাধবোধের উপর কিছুটা সান্ত্বনার প্রলেপ তো লাগানো যাবে।
মানের দিক থেকে কবি হিসেবে তিনি কেমন ছিলেন, তাঁর কবিতা কতখানি উত্তীর্ণ-অনুত্তীর্ণ আমরা সেই দিকে যাচ্ছি না। একজন মানুষ, যিনি তাঁর সমস্ত জীবন কবিতার পেছনে, শিল্প-সাহিত্যের পেছনে কাটিয়ে দিলেন, তার কীর্তির দিকে তাকিয়ে, তাঁর সমস্ত জীবনের দিকে তাকিয়ে তাঁর স্মৃতির প্রতি অন্তিম শ্রদ্ধা জানাতেই আমাদের এই আয়োজন।
সকলকে পাঠের আমন্ত্রণ।
সূচি
কবি মাহমুদুল হাসান মাছুমের প্রস্থানের পর… : টোকন ঠাকুর
আমার বাবা কবি মাহমুদুল হাসান মাছুম : তামান্না হাসান
জীবন-জগৎ-মানবপ্রেম ও নিসর্গের কবি : প্রগতি খীসা
তাঁর নাম শ্রী মাহমুদুল হাসান মাছুম : বিপুল অধিকারী
কবি মাহমুদুল হাসান মাছুম : আমাদের পাহাড়পুত্র : রহিম রানা
কবি মাহমুদুল হাসান মাছুমের কয়েকটি কবিতা
…