নব্বই দশকে যারা প্রাথমিক বিদ্যালয় পাশ করেছেন তাদের অনেকেই ‘কালো মানিক’ শিরোনামে একটি লেখা পাঠ্য হিসেবে পেয়েছিলেন। সেই লেখায় লেখকের নাম না থাকায় তখন শিক্ষার্থীদের পক্ষে জানা সম্ভব হয়নি এর লেখককে। শামসুজ্জামান খানের এই লেখাটি প্রথম প্রকাশিত হয় বিশিষ্ট শিশুসাহিত্যিক এখলাসউদ্দিন আহমদ সম্পাদিত ‘টাপুরটুপুর’ পত্রিকায় ১৯৬৬ সালে। শ্রী-র ‘ফুটবলের নন্দন, নান্দনিক ফুটবল’ সংখ্যার জন্য এই লেখাটি সংগ্রহ করে দিয়েছেন কবি পিয়াস মজিদ।
ডিক ও টমের মধ্যে খুব বন্ধুত্ব। কিন্তু বন্ধুত্বের কিছু দিনের জন্যে ছেদ পড়েছে। কারণ ডিক পাড়ি জমিয়েছে প্যারিসে। সে ওখানেই পড়াশুনা করবে। টমের ভারি মন খারাপ। বন্ধুকে ছেড়ে একটুও ভালো লাগছিল না তার।
হঠাৎ টেলিগ্রাম এলো: ১২ই তারিখে লন্ডন ফিরছি। ভাগ্য ভালো হলে ওই দিনই গুডিসন পার্কে দেখা হতে পারে। তা না হলে পরদিন দেখা করব।
টম টেলিগ্রাম পেয়ে লাফিয়ে উঠল: কী মজা! একে তো কালো মানিকের শিল্পকৌশল উপভোগের সুযোগ, তাও আবার বন্ধুর সান্নিধ্যে। একেই বুঝি বলে সোনায় সোহাগা!
টমের মা মিসেস রবিনসন সকাল থেকেই আজ ব্যস্ত। তাড়াতাড়ি গুছিয়ে নিয়ে তিনিও যাবেন গুডিসন পার্কে। টমের বুড়ো দাদু হেনরি দাবার পোকা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই তিনি বন্ধুকে বিদায় দিয়ে রাজা মন্ত্রী কৌটায় ভরেছেন। বুড়ো মানুষ, আগেভাগেই তিনি গুডিসনের পথ ধরেছেন। সারা শহর ও শহরতলী বন্যার বেগে ছুটেছে গুডিসন পার্কের দিকে।
সবার লক্ষ্য এক: কালো মানিক দর্শন। রং তার মিশমিশে কালো। কিন্তু সেই কালো শরীরে হীরের দ্যুতি। মাথায় ত্বরিত বুদ্ধি। শরীরের ভাঁজে ভাঁজে জাদুকরের সম্মোহনের ছোঁয়া। কালো দুটি পায়ে বিদ্যুতের চমক।
কালো মানিকের আসল নামটি বেশ বড়ো। উচ্চারণ করে পড়া মুশকিল। মনে রাখাও কঠিন। এডসন আরান্টিস ডো নাসিমেন্টো। এত বড়ো নাম ক’জনের মনে থাকে? থাকেওনি। সে নামে তাকে খুব কম লোকই জানে। তার ছোট্ট মিষ্টি নামটি এখন সারা পৃথিবীতে ছড়ানো। লেখাপড়া জানা লোকদের মধ্যে যাঁরা খবরের কাগজ পড়েন তাঁরা অবশ্যই সে নাম জানেন। তোমরাও নিশ্চয়ই জান। পেলের নাম জানবে না এও কি একটা কথার মতো কথা নাকি! হ্যাঁ পেলে। সারা পৃথিবীর বিস্ময় পেলে। বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসে পেলের মতো মহৎ শিল্পীর জন্ম খুব কমই হয়েছে।
শুরুতেই না বলেছি সবার লক্ষ্য গুডিসন পার্ক। হ্যাঁ, তাই। তোমরা তো জান এ (১৯৬৬) বছরে বিশ্ব ফুটবলের চূড়ান্ত পর্যায়ের খেলা চলছে ইংল্যান্ডে। বিশ্বের সেরা ফুটবল দলগুলো সেখানে অংশ নিচ্ছে। বেশ কয়েকটি মাঠে চলছে সে খেলাগুলো। একই দিনে ভিন্ন ভিন্ন মাঠে ভিন্ন ভিন্ন টিমের খেলা থাকে। যেদিনের কথা বলেছিলাম সেদিন গুডিসন পার্কে ১৯৫৮ ও ১৯৬২ সালের বিশ্বকাপ বিজয়ী ব্রাজিল ও বুলগেরিয়ার মধ্যে খেলা ছিল। সেই বিশেষ খেলাটি দেখার জন্য গুডিসন পার্কে সারা লন্ডন ভেঙে পড়েছিল। কারণ সেই মাঠে ব্রাজিলের গেয়িবয়রি বিশ্বের এক নম্বর খেলোয়াড় পেলে অংশ নেবেন।
খেলাটিতে ব্রাজিল জেতে। পেলে চমৎকার খেলে তাঁর ভক্তদের খুশি করেছিলেন। পেলে একটি চমৎকার গোলও করেছিলেন।
যাক, কোনো বিশেষ খেলার বিশদ বর্ণনা নয়, বরং বর্ণবহুল খেলোয়াড় পেলের জীবনের গল্প বলা যাক।
তবু ব্রাজিল জিতেছিল। কিন্তু সেটা যেন ব্যতিক্রম মাত্র। এ বছরের কথাই ধরা যাক। বিশ্বকাপ থেকে ব্রাজিল এবার বিদায় নিয়েছে। উপর্যুপরি তিনবার বিশ্বকাপ জিতে সেটি নিজস্ব সম্পদে পরিণত করার স্বপ্ন বিলীন হয়ে গেছে। অধিকাংশ খেলাতেই পেলে আহত ছিলেন।
প্রায় বারো বছর ধরে বিশ্ব ফুটবলে একাধিপত্য করে এসেছে ব্রাজিল। আর এর পেছনে পেলের অবদান অসামান্য। ১৯৬২ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালে আহত পেলে খেলতে পারেননি—তবু ব্রাজিল জিতেছিল। কিন্তু সেটা যেন ব্যতিক্রম মাত্র। এ বছরের কথাই ধরা যাক। বিশ্বকাপ থেকে ব্রাজিল এবার বিদায় নিয়েছে। উপর্যুপরি তিনবার বিশ্বকাপ জিতে সেটি নিজস্ব সম্পদে পরিণত করার স্বপ্ন বিলীন হয়ে গেছে। অধিকাংশ খেলাতেই পেলে আহত ছিলেন। এবং তিনি তাঁর ছায়া ছাড়া আর কিছুই ছিলেন না। আহত পেলের না ছিল সেই অস্বাভাবিক গতি, না ছিল বল আয়ত্তে রাখার জাদুকরণ ক্ষমতা। ব্রাজিলের বারো বছরের অপরাজয়ের গৌরব যেদিন হাঙ্গেরি ছিনিয়ে নেয় সেদিনও আহত পেলে মাঠে অনুপস্থিত ছিলেন। সেই অনুপস্থিতিতে একটা জিনিস স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, পেলে নেই তো ব্রাজিলও নেই।
হাঙ্গেরির সঙ্গে ব্রাজিলের পরাজয়ের পরে প্রতিদ্বন্দ্বী টিমগুলো তাদের ক্রীড়া-কৌশল হিসেবে যে ব্যাপারটাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে সেটি হলো: পেলেকে মারো, ব্রাজিলকে হারাও—এই নীতি।
তাঁরা এলেন, খেললেন, জয় করলেন নয়—বরং তাঁরা খেললেন, পেলেকে মাঠের বাইরে পাঠালেন, জিতলেন এটি ছিল ব্রাজিলের প্রতিদ্বন্দ্বীদের মূলনীতি।
এ জন্যই পেলেকে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল থেকে মাত্র ২৬ বছর বয়সে অবসর গ্রহণ করতে হলো। অবসর গ্রহণের সিদ্ধান্ত ঘোষণার সময় অত্যন্ত আক্ষেপের সঙ্গে তিনি বলেছেন: আদর্শ ফুটবল এখন আর সম্ভব নয় বলেই মনে হচ্ছে। যারা উপভোগ্য ও মনোরম ফুটবল দেখতে চান তাদের জন্যে দুর্দিন আসছে। আক্রমণাত্মক সুন্দর খেলা নয়, বরং খেলোয়াড়দের আক্রমণ করে খেলাই এখনকার বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। বল নয়, মানুষই যখন লক্ষ্য তখন ফুটবল তার সৌন্দর্য হারাতে বাধ্য।
বিখ্যাত ক্রীড়া সমালোচক এলান জবি বলেছিলেন: পেলে ব্রাজিলের চন্দ্র-সূর্যের হলেও বিশ্বকাপের প্রতিযোগিতা বড়ো বেশি মাটির কাছাকাছি। এখানে জাতীয় গৌরবের অহমিকা আছে, হিংসা আছে, ক্লেদ আছে। পেলে বুঝি সে সব থেকে দূরে থাকতে পারবেন না। সত্যি তা তিনি পারেননি। তিনি সে সবের শিকার হয়েছিলেন। এবং শেষ পর্যন্ত সে জন্যই তিনি অবসর গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছেন।
পেলের গল্প রূপকথার মতোই অবিশ্বাস্য। কালো লিকলিকে ছেলেটির এমন দিন গেছে যখন দু’বেলার খাবারও জোটেনি। দারুণ শীতে জোটেনি একটা গরম কম্বল। আর আজ তিনি অতুলনীয় সম্পদের মালিক।
১৯৪০ সালের ২৩শে অক্টোবর পেলের জন্ম ব্রাজিলের ছোট্ট নগরী ট্রেস কোরাকোসে। তাঁর মা-বাবা ছিলেন খুব গরিব। গরিবের ঘোড়া রোগের মতো পেলের বাবারও ফুটবলে নেশা ছিল। পেলের ফুটবল-গৌরব উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত। তিনি জন্ম-খেলোয়াড়।
পুরনো ছালার তৈরি বল তার দিকে ছুঁড়ে দিয়ে তার বাবা লাথি মারতে বলতেন। দু-একটি লাথি বলে লাগলেই তার বাবা চিৎকার করে উঠতেন: সাবাস, সাবাস, বাপকা-বেটা। বন্ধু-বান্ধবদেরও প্রায়ই বলতেন: দেখে নিও আমার ছেলে খুব বড়ো খেলোয়াড় হবে। বাবার ভবিষ্যদ্বাণী ফলেছে।
পেলের বাবা পেশাদারি খেলোয়াড় ছিলেন। কোরাকোসের বিভিন্ন খেলায় তিনি অংশ নিতেন। তখনও পর্যন্ত খালি পায়ে ফুটবল খেলার প্রচলন ছিল। পেলের বাবাও খালি পায়ে খেলতেন।
পেলের যখন হাঁটি হাঁটি পা পা, তখনই পুরনো ছালার তৈরি বল তার দিকে ছুঁড়ে দিয়ে তার বাবা লাথি মারতে বলতেন। দু-একটি লাথি বলে লাগলেই তার বাবা চিৎকার করে উঠতেন: সাবাস, সাবাস, বাপকা-বেটা। বন্ধু-বান্ধবদেরও প্রায়ই বলতেন: দেখে নিও আমার ছেলে খুব বড়ো খেলোয়াড় হবে। বাবার ভবিষ্যদ্বাণী ফলেছে। তার জ্বলন্ত উৎসাহে পেলে এখনও পৃথিবীর সেরা খেলোয়াড়।
অল্প বয়সে পিতার কাছ থেকে অনুপ্ররণা পেলেও পেলেকে তৈরি করে তোলেন ব্রাজিলের এককালীন বিখ্যাত খেলোয়াড় ওয়াল ডেমাব ডি ব্রিট্রোর—যাকে অপূর্ব খেলার জন্য বলা হতো ব্রিট্রোর দি ড্যান্সার।
ফুটবলের নটরাজ ব্রিট্রোর তাঁর নিজের সমস্ত ক্রীড়া-চাতুর্য ও শিল্প-কৌশল পেলেকে এমনভাবে শিখিয়েছিলেন যে, একবার তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন: ‘দেখে নিও আমি এমন একজন খেলোয়াড় তৈরি করছি সে শুধু ব্রাজিলে নয়, সারা পৃথিবীতে ইতিহাস রচনা করবে।’
পেলের বয়স যখন ১৪ বছর তখন থেকেই তিনি বিখ্যাত স্যান্টোস ক্লাবের জুনিয়র টিমে খেলতে শুরু করেন। এবং তখন থেকেই খ্যাতির স্বর্ণচূড়ার দিকে তার অব্যাহত যাত্রা। সেই গরিব ক্ষুধার্ত, কালোকোলো ছেলেটিকে এর পরে আর কখনও দারিদ্র্যের জ্বালা সহ্য করতে হয়নি। গরিব মা-বাবাকে প্রাসাদোপম অট্টালিকায় স্থানান্তরিত করেছেন। এখন তিনি পৃথিবীর সবচাইতে ধনী খেলোয়াড়।
পেলে স্যান্টোসের সিনিয়র টিমে যোগ দেন ১৯৫৬ সালে। এবং ব্রাজিরের পক্ষে আন্তর্জাতিক খেলায় প্রথম অংশগ্রহণ করেন ১৯৫৭ সালে। ১৯৫৮ সালে ব্রাজিল প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জেতে।
বলাবাহুল্য পেলে ছিলেন সেবারের প্রথম। ১৮ বছরের পেলে বিশ্বকাপে সেবার যে ক্রীড়া-চাতুর্য দেখিয়েছিলেন তাতে ঝানু খেলোয়াড়রাও বিস্ময়ে হতবাক হয়েছিলেন। সুইডেনের বিরুদ্ধে ফাইনাল খেলায় দুটি গোল হয়। পেলেই ছিলেন সেই অমূল্য গোল দুটির নিপুণ শিল্পী।
একজন ক্রীড়ারসিক বলেছেন: ‘তাঁর ডান পায়ের শটে যদি বুলেটের বেগ থাকে, বাঁ-পায়ের শটে টর্পেডোর গতি। পাঁচ ফুট আট ইঞ্চি লম্বা লেফ্টইনের হেড করার কৌশল শিল্পীর প্রক্রিয়া। তাঁর মাথা ও পায়ের প্রতিটি পাশে থাকে পরিষ্কার করে প্রাপকের ঠিকানা লেখা।’
১৯৫৮ সালে ব্রাজিল জুলেস রিমেট কাপ (বিশ্বকাপ) জয়ী হওয়ার পর পেলেকে নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। কেমন করে তিনি শিল্পী-সুলভ কৌশল আয়ত্ত করলেন তা ভাঁজে ভাঁজে খুলে দেখার জন্য ইউরোপের ফুটবল বিশেষজ্ঞরা স্লো-মোশানে পেলের খেলার ছবি তোলেন। তাদের সে প্রচেষ্টা দেখে ব্রাজিলের ক্রীড়া বিশেষজ্ঞ বেন রাইট ওয়ার্ল্ড স্পোর্টস পত্রিকায় লিখেছিলেন: ‘যাঁরা ওই চলচ্চিত্র দেখে পেলের খেলার বৈশিষ্ট্য সন্ধানের চেষ্টা করেছেন তাঁদের সময়ের যেমন অপব্যয় হয়েছে তেমনি ওই চলচ্চিত্র তোলার জন্য যে টাকা খরচ হয়েছে সে টাকাও জলে গেছে। কারণ বৈচিত্র্যই পেলের খেলার বৈশিষ্ট্য। পেলে একভাবে দুবার আক্রমণ রচনা করে না, একভাবে দুবার ড্রিবল করে না, একই রকমে দুজনকে ফাঁকি দেয় না এবং একই রকমভাবে দুবার গোল করে না। লেফ্টইন পেলের খেলায় সব সময়ই উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় মেলে। খেলার অবস্থা, সহ-খেলোয়াড়দের অবস্থান, প্রতিপক্ষের শক্তি অনুযায়ী পেলের খেলা। সে খেলায় যতখানি শক্তির চিহ্ন ততখানি সৌন্দর্যের ছবি। ফুটবলে সৃষ্টিশীল শিল্পী পেলে। নব নব ছন্দে গড়া পেলের ক্রীড়াকৌশল।
বিশ্ব ফুটবলের দুরন্ত ঘূর্ণি পেলেকে আর বিশ্বকাপের খেলায় দেখা যাবে না—এর চাইতে দুঃখের ব্যাপার আর কী আছে?
লেখক পরিচিতি
অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানের জন্ম ১৯৪০ সালের ২৯ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ জেলার চারিগ্রামে। ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের থেকে শিক্ষাজীবন শেষে শিক্ষকতা দিয়ে তার কর্মজীবনের সূচনা। বিভিন্ন সময় মুন্সীগঞ্জ হরগঙ্গা কলেজ, ঢাকা জগন্নাথ কলেজ, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্বিবিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্বিবিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন তিনি। ২০০৯ সালে তিনি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হন। এরপর তিন মেয়াদে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিনি ওই পদে ছিলেন। পরে তাকে একাডেমির সভাপতি করা হয়। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালকের দায়িত্বেও ছিলেন। তিনি ইসলামী বিশ্বিবিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। লোকশিল্প গবেষক শামসুজ্জামানের রচিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য: ফোকলোর চর্চা, বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রচিন্তা ও বর্তমান বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলাপ ও অন্যান্য প্রসঙ্গ, মুক্তবুদ্ধি, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমকাল, বাঙালির বহুত্ববাদী লোকমনীষা, মীর মশাররফ হোসেন: নতুন তথ্যে নতুন ভাষ্যে, সৃজনভুবনের আলোকিত মানুষেরা, রঙ্গরসের গল্পসমগ্র, কিশোর রচনাসমগ্র, বাংলাদেশের উৎসব, বাংলা সন ও পঞ্জিকা, ফোকলোরচিন্তা ইত্যাদি। বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা শিরোনামে ৬৪ খণ্ডে ৬৪ জেলার লোকজ সংস্কৃতির সংগ্রহশালা সম্পাদনা এবং ১১৪ খণ্ডে বাংলাদেশের ফোকলোর সংগ্রহমালা সম্পাদনা করেন তিনি। সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০১ সালে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান। ২০০৯ সালে একুশ পদক পাওয়ার পর ২০১৭ সালে তিনি সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কার অর্জন করেন।
…