এক শ্রেণির পাঠক আছেন, যারা তার পছন্দের সব কিছু পড়ে ফেলতে চায়। এরা সর্বপুস্তকভূক। বাছ বিচারহীন রিডিং খুব বেশি উপকারে আসে না। বইপড়া হলো দুনিয়ার ব্যয়বহুল কাজগুলোর ভেতর একটি। ফলে, পড়ার বই কীভাবে নির্বাচন করবেন এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সঠিক বই নির্বাচন করতে না পারা বিপুল অপচয়।
বইয়ের মূল্য থেকে সময়ের মূল্য অনেক বেশি
ব্যক্তি কী কী পড়বে তা নির্ভর করে মূলত তার বিশ্বাস ও আস্থার উপর। কোন কোন বইকে সে মূল্য দেবে তা অনেকগুলো বিষয়ের সাথে জড়িত। ব্যক্তির সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থান ও অর্জিত আচরণই নির্ধারণ করে তিনি কী পড়বেন আর কী পড়বেন না। দক্ষ পাঠকের বই সাধারণত নির্বাচিত হয়ে থাকে। এরা সব কিছু পড়বে না। এর সুবিধার হলো এই শ্রেণির পাঠক ঐ বিষয়ের ডিটেইল জানেন। অনেকগুলো বিষয়কে লেন্সের ফোকাসে এনে তারা দেখতে পারেন খুব সহজেই। এই রকম পাঠকরা নিজের আগ্রহের বাইরে পড়তে চান না। ব্যক্তি তার জানাটাকে আরও পোক্ত করতে, নিজের অর্জিত জ্ঞানকে নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচিত বিষয়ে অধিক পাঠ করেন। সুনির্দিষ্ট বিষয়ের বাইরে এদের আগ্রহ কম। একাডেমিক গবেষকের জন্য ঠিক আছে। কেননা, একাডেমির জন্য পড়াটা হলো পেশা, প্রকৃত পাঠকের জন্য তা নেশা। সেই হিসেবে গবেষকের এককেন্দ্রিকতা যদি পেশার অংশ হয়, তবে এমন পাঠ-পদ্ধতি ঠিক আছে। কিন্তু আমাদের মতো যারা মনের আনন্দে কাজের ফাঁকে ফাঁকে, চলতে ফিরতে, শুতে, ঘুমাতে বই উল্টায়, তাদের জন্য বই বাছই জরুরী বিষয়।
কীভাবে পড়ার বই নির্বাচন করব সেটা নিয়ে ভাবার আছে! বই পড়া আসলে অবসরের কাজ না। জীবনের অন্যান্য কাজের মতোই দরকারি, হিসাব কষা হতে হবে। কেননা একটা বইয়ের দাম যাই হোক জীবনের ব্যয়িত সময়ের মূল্য অসীম।
আমরা আগে ‘মনের আনন্দে পাঠ’ বলে একটা ব্যাপার শুনেছি। আমার মতে মনের আনন্দ থেকে অর্থপূর্ণ, দায়িত্বশীল জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি পাওয়ার জন্য বই পড়া দরকার। সমাজে আনন্দবাদী পাঠক থেকে সময়কে দেখতে পারার সক্ষম বই পড়ুয়া প্রয়োজন। একটা সময়ে বসে আপনি কী পড়বেন আর কী পড়বেন না তার হিসাবটাও জানতে হয়। যদিও নৃতাত্ত্বিকভাবে মানুষ পড়া ও শোনার ভেতর দিয়ে আনন্দ লাভ করে। সামজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে বই পড়াকে শুধুমাত্র আনন্দের অধিক একটা জীবন যাপনের ভেতর নিয়ে যেতে হয়। ফলে, পাঠকের জন্য বই পড়া বিনোদন, চূড়ান্ত বিনোদন এবং সাথে সাথে একটা লাইফ স্কিল। স্কিলটা সঠিকভাবে জানতে হয়। ফ্যাশন করে গরমকালে আমরা যেমন জ্যাকেট পড়ি না, তেমনি স্থান, কাল, পাত্রের হিসেবে বই নির্বাচন করতে হয়। সকলের কাছে জীবনের মানে তো এক না। ফলে, জীবনকে মিনিংফুল করার জন্য সুনির্দিষ্টভাবে পড়াকে জীবনের অংশ করে তুলতে হয়। সেই কারণে কীভাবে পড়ার বই নির্বাচন করব সেটা নিয়ে ভাবার আছে! বই পড়া আসলে অবসরের কাজ না। জীবনের অন্যান্য কাজের মতোই দরকারি, হিসাব কষা হতে হবে। কেননা একটা বইয়ের দাম যাই হোক জীবনের ব্যয়িত সময়ের মূল্য অসীম।
একই জাতীয় বিষয়াদি বার বার পড়া একাডেমিকের কাজ হলেও, খেয়াল করেলে দেখা যায় বেশির ভাগ নন-একডেমিক পাঠকের পাঠ অভ্যাস গবেষকদের মতোই। যার আগ্রহ মোঘল ইতিহাসে তিনি মোঘল ইতিহাস সংক্রান্ত যা যা পাচ্ছেন তাই তাই পড়ছেন। যিনি পদার্থবিজ্ঞানে বিশ্বাসী তিনি ব্ল্যাকহোল নিয়েই আছেন। যিনি জ্যাক লাকানের ভক্ত তিনি লাকান থেকে বের হতে পারছেন না বছরের পর বছর। মনোবিজ্ঞান আগ্রহীর পাঠ ফ্রয়েডে বা ইয়ুং-এর বাইরে যায় নাই। সমস্ত কিছু সাইকোঅ্যানালাইসিস টার্ম আক্রান্ত। যে যা জানে তাই আসলে পড়তে চায়। এর একটা সমস্যাও আছে।
মানুষ মূলত তাই পড়তে চায় যা তার বিশ্বাসকে আরো দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর করে। সিসিফাসের মিথের মতো সে একই পাথর বয়ে নিয়ে যাচ্ছে পাহারের ঢাল দিয়ে, আবার তা গড়িয়ে নামছে নিচে।
ফলে, মানুষ মূলত তাই পড়তে চায় যা তার বিশ্বাসকে আরো দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর করে। সিসিফাসের মিথের মতো সে একই পাথর বয়ে নিয়ে যাচ্ছে পাহারের ঢাল দিয়ে, আবার তা গড়িয়ে নামছে নিচে। অধিকাংশ পাঠক নিজের ভেতর নিজে আবদ্ধ। অনেক সমৃদ্ধ পাঠকের সাথে কথা বলে, তাদের ব্যক্তিগত লাইব্রেরি ঘুরে জেনেছি তারা মূলত তিন চারটি বিষয়ে বিস্তর পড়েছেন। কিন্তু তাদের সেই বিস্তর একমুখী তত্ত্ব-তালাশ বহুমুখী কমপ্লেক্স দুনিয়ার সাথে কোনোভাবেই সম্পর্কিত হতে পারে নাই। দুনিয়া এমন এক জটিল জায়গা যার ব্যাখ্যা দু’চারটা বিষয় দিয়ে করা যাবে না। ফলে, বামবাদী অর্থনীতিবিদের পাঠ সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি নিয়ে তেমন একটা নাই। ডানপন্থীরা জানেনও না মার্কসের দাস ক্যাপিটালে কী আছে। যারা জানেন তাদের কথা বলছি না। এইদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে অর্থনীতি পড়ানো হয় তা পুঁজির বাহ্যিক আবরণ। সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির পাঠের দরকার নাই যারা আমাদের কর্পোরেট চালাবে? এটাও পড়া দরকার। আমি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দোষ দিতে চাই না। পাঠকের নিজেকে নিজে আবিষ্কার করতে হয়। তিনিই খুঁজে বের করবেন তার জানা বোঝার বাইরে আর কি কি জানা জরুরি।
সেই কারণে নিজেকে নিশ্চয়তা প্রদানের জন্য মানুষ প্রবৃত্তিগতভাবে একই জিনিস বারবার পড়তে চায়। সেলফ-রিকগনিশনের কারণে মানুষ এটা করে থাকে। এই চেষ্টার সুন্দর একাডেমিক নাম হলো ‘কনফার্মেশন বায়াসনেস’। মেদ যেমন স্বাস্থ্য না, তেমনি চোখে কনফার্মেশন বায়াসের মোটা চশমাও মগজের জন্য ভালো না। আপনাকে দুনিয়া দেখতে দেবে না এই জিনিস। কনফার্মেশন বায়সনেসের কারণে মানুষের যুক্তি ঠিক মতো কাজ করে না। অনেক র্যানডম তথ্য থেকে সেই তথ্যই এই জাতীয় ব্যক্তিরা নির্বাচন করে যা তাদের পূর্বধারণাকে নিশ্চিত করে। ফলে, বড়ো বড়ো ভুল সিদ্ধান্ত এরা নিয়ে ফেলে দৃষ্টিভঙ্গির সীমাবদ্ধতার কারণে। এটা কগনিশনের বিরাট সমস্যা বলে চিহ্নিত। কনফার্মেশন বায়াসনেস সম্পর্কে শুধু জানলেই আপনি এর থেকে বের হতে পারেবন না। এর থেকে বের হওয়ার জন্য নানা উপায় আছে। তা নিয়ে পরে আলোচনা করা যাবে। আমরা এখানে বই নির্বাচন নিয়ে থাকতে চাই। ফলে, অর্থপূর্ণভাবে কোনো জিনিসকে জানতে হলে দুই পাশের পাঠই দরকার। তবে, মুদ্রার দু’পাশের পাঠ মানে একাডেমিক ভারী ভারী বই থেকে শুরু করে সামনে যা পেলামসহ কাগজের ঠোঙা পর্যন্ত পড়া না। সুনির্দিষ্ট বাছাই থাকতে হবে। যিনি যা দিয়ে জীবনের ফুলফিলমেন্ট খুঁজে পান তার বিপরীতটাও ভালোভাবে আয়েত্বে আনতে হয়।
ফলে, ননএকাডেমিক সাধারণ পাঠক কীভাবে বই নির্বাচন করবেন? মানুষের মন হলো বৃষ্টির দিনের ছাতা, তাকে না খুলতে পারলে কোনো উপকার নেই।
প্রথম নিয়ম : সব পড়বেন না। নিজেকে জেনে পড়ুন। পড়া আমাদের লাইফ স্টাইল, ফ্যাশন না, প্যাশন।
পাঠকের রকমভেদ
পাঠক দুই রকম।
দুর্ঘটনা আক্রান্ত পাঠক : এরা শুনে পড়ে, চোখের সামনে কিছু পড়লে পড়ে। কেউ একটা রেফারেন্স দিল, সাথে সাথে পড়া শুরু করে দিল আগপিছ কিছু না ভেবে। বাদামের প্যাকেট থেকে শুরু করে পাবলিক টয়লেটের দেওয়াল— কিছু বাদ যায় না এদের পড়া থেকে। এরা হলো সর্বভূক পাঠক; বইয়ের ধাঙ্গর। তারা স্বভাবে কাক। পড়ালেখার ভেতর দিয়ে এরা প্রচুর সময় অপচয় করে। পড়ালেখাটা অবসর যাপন এদের কাছে।
কেউ একটা রেফারেন্স দিল, সাথে সাথে পড়া শুরু করে দিল আগপিছ কিছু না ভেবে। বাদামের প্যাকেট থেকে শুরু করে পাবলিক টয়লেটের দেওয়াল— কিছু বাদ যায় না এদের পড়া থেকে। এরা হলো সর্বভূক পাঠক, বইয়ের ধাঙ্গর।
ঘটনা আক্রান্ত পাঠক : এরা জেনে বুঝে পড়েন। প্রয়োজন এদের বোঝাতে না পারলে এরা পড়েন না। এরা সাধারণত ননফিকশন রিডার। এবং কিছু দুর্ঘটনা আক্রান্ত পাঠক ধীরে ধীরে ঘটনা আক্রান্ত পাঠক হয়ে ওঠেন। এরাই হলো কনফার্মেশন বায়াসনেস আক্রান্ত প্রসিদ্ধ না-ডাক-ওয়ালা পাঠক। দুনিয়ার সকল কিছুর ব্যাখ্যা নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের আলোকে এরা পরিমাপ করে থাকেন। তবে প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি ভালো— এই টাইপের পাঠকরা নিজেদের সীমাবদ্ধতাকে জানতে পারলে পড়ার ভিতর দিয়ে বড়ো কিছু চিন্তা অর্জন করতে পারেন। এরা আসলে জ্ঞানী, প্রজ্ঞাবান নয়।
বই পড়া বিনোদন বটে। অনেকে পড়ার ভেতর দিয়ে আনন্দ পান। একটা সিনেমা দেখায় যে আনন্দ, একটা ভালো কবিতা পড়া মেডিটেশনের ফ্রেসনেস দেয়। সাহিত্য পড়া মানুষের দুনিয়া অনেক সজীব। ফলে, বই পড়া কারো কারো জন্য রিলিফ। অস্তিত্বকে আরও অর্থবহ করার জন্য, উদ্বীপ্ত হওয়ার জন্য আমরা আত্মজীবনী পড়ি। ব্যক্তির বিকাশের জন্য, নতুন কোনো টেকনিক শেখার ও ব্যবহারের জন্য বই হলো আমাদের মেন্টর। চূড়ান্ত পাঠক শেষ পর্যন্ত প্রজ্ঞার ভেতরে নিজেকে সমর্পণ করেন। দর্শন, মনোবিজ্ঞান, অর্থনীতি, পদার্থবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, শিল্প এমন নানা বিষয়ের বই-পুস্তকে তাদের পড়ার টেবিল, বেডরুম বা কিন্ডলের চিপ ভরে ওঠে। বিষয়গুলো এমনভাবে আত্মস্থ করেন যেন কোনো বায়াসনেস তৈরি না হয়।
দ্বিতীয় নিয়ম: পড়তে হবে বৈচিত্রপূর্ণ বিষয়ে। কিন্তু পড়ালেখা যেন কোনোভাবেই দেখার সীমাবদ্ধতা তৈরি না করে। যাই পড়ুন সচেতন ভাবে পড়ুন। বইয়ের সকল বাক্যে পূর্ণ আস্থা আনবেন না। একটা বিষয়কে নানা এঙ্গেল থেকে দেখার মন তৈরি করতে হবে পড়ার ভেতর দিয়ে।
‘যে বই শুরু করে শেষ করা যায় না, তা পড়াতে বসার কোন মানে হয় না।’ বিল গেটস বলেছিলেন তাঁর বই পড়া সংক্রান্ত বক্তব্যে। নিজের জন্য প্রয়োজনীয় বইটি নির্বাচন করে পড়তে না পারলে তার মতো অপচয় আর নাই।
‘যে বই শুরু করে শেষ করা যায় না, তা পড়াতে বসার কোন মানে হয় না।’ বিল গেটস বলেছিলেন তাঁর বই পড়া সংক্রান্ত বক্তব্যে। নিজের জন্য প্রয়োজনীয় বইটি নির্বাচন করে পড়তে না পারলে তার মতো অপচয় আর নাই। তাহলে, পাঠক কীভাবে বই নির্বাচন করে? আমাদের নির্বাচন পদ্ধতির কিছু সাধারণ নিয়ম আছে। যা বইয়ের জন্যও খাটে।
সাধারণত, আমাদের নির্বাচন পদ্ধতি পূর্বঅনুমান দিয়ে নির্ধারিত। আমারা যাতে অভ্যস্থ হয়ে পড়ি তাই আমাদের ভালো লাগে। কোনো পরিচালক বা নায়ক বা নায়িকাকে দেখতে দেখতে আমাদের অভ্যাস হয়ে গেলে তাদের নতুন সিনেমা এলে আমরা দেখে ফেলি যেকোনো উপায়ে। ‘অ্যাভেঞ্চার : দ্য এন্ডগেম’ দেখার জন্য দর্শক উন্মুখ কেননা এটা দেখার জন্য তারা অতি প্রস্তুত, উদ্বেলিত। তেমনি বইয়ের ক্ষেত্রেও তাই।
কোনো কোনো লেখকে আমরা নির্ভরশীল হয়ে যাই। তাদের বই প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে আমরা তা পড়ে ফেলতে চাই। হুমায়ূন আহমেদের এতো পাঠক, কারণ তাঁর পাঠকরা তাঁর নামের উপর নির্ভরশীল। তাকে নিয়ে তাঁর পাঠকের যে পূর্বানুমান, তা তাঁর প্রতিটা বইতে সাফল্যের সাথেই আছে। এই সাফল্য ঐ লেখকের প্রতি যে আস্থা তৈরি হয়েছে তার ফলাফল। একই জিনিস অন্য কেউ লিখলে পাঠক মজা পাবেন না। লেখক একটা ব্র্যান্ড হয়ে ওঠে। ফলে, তাঁর কোনো বইয়ের প্রচ্ছদের উপরে অন্য কারো নাম বসিয়ে কোনো হুমায়ূন ভক্তকে পড়তে দিলে কী হবে? ভক্ত পড়ে নিশ্চিত বুঝতে পারবেন এটা হুমায়নীয় স্টাইলে লেখা। কিন্তু কোনোভাবেই তার কাছে এটা তেমন ভালো লাগবে না। যেহেতু তা হুমায়ূন আহমেদের লেখা হিসাবে প্রদর্শিত না, ফলে পাঠকের অত সহজে এটা ভালো লাগবে না। লেখকের নাম একটা ঘটনা। এর নাম ব্র্যান্ড লয়ালিটি, আসলে অথর লয়ালিটি। এভাবেই অথরের ব্র্যান্ডিঙের ভেতর দিয়ে মিলিয়ন কপি বিক্রিত বেস্টসেলার লেখক তৈরি হয়। লেখকরা নিজেদের ব্র্যান্ডিং করুন। বইকে পণ্য হিসাবে দেখলে কোনো সমস্যা নাই। বরং সমাজের জন্য ভালো। একটা বই একটা জীবন পাল্টে দিতে পারে। ফলে, সমাজে ব্যাবহারিক লেখকদের ব্র্যান্ড গড়ে উঠলে তা সমাজের জন্য ভালো। সাড়ে চারশ টাকার এককাপ কফির সাথে বারোশ টাকা মূল্যের বই সমাজের মানুষ পড়তে পারলে বুঝতে হবে সমাজ শুধু অর্থনৈতিকভাবে আগায় নাই, সামাজিক ও মানবিক ভ্যাল্যুও অর্জিত হয়েছে সাথে সাথে। না-খাওয়া সমাজে শুধু বই পূজা করতে ও পড়তে দেওয়ার পরামর্শ জীব-জীবন পরিপন্থী। ফলে, বই ও অর্থের সহাবস্থান সমাজ উন্নয়ন পরিমাপের স্কেল।
তৃতীয় নিয়ম: কোনো একজন লেখককে তার ব্র্যান্ডিং বা শুধু স্টাইলের জন্য পড়বেন না, তিনি আপনার জীবনের কী কী ইতিবাচক পরিবর্তন করছেন তা খুব খেয়াল করে লক্ষ্য করুন। বই পড়া অন্তত শুধু বিনোদন না, অধিক কিছু।
বুক রিভ্যিউ বা পুস্তক সমালোচনা
বাংলাদেশে বকু রিভ্যিউ দেখে বই নির্বাচনের মতো বিড়াম্বনা দুনিয়ায় আর নাই। ধরেন কোনো পত্রিকা একুশে বইমেলা পরবর্তীতে দশটা বই নির্বাচন করল। প্রথমত, দশটা বইয়ের যে আলোচনা তারা লিখে থাকেন সেটাকে কারো কারো কাছে মনে হতে পারে মধ্যযুগের দর্শনের ক্লাস করছেন। মেটাফিজিক্যাল কথায় ভরা। দ্বিতীয়ত, সম্পাদকের ব্যক্তিগত রুচি, পরাধীনতা, শর্ট-ডেপথ, বিষয় সম্পর্কে না-জানা, কোম্পানির নীতিমালা ইত্যাদি দ্বারা এই সমস্ত সিলেকশন বায়াসনেসে পরিপূর্ণ। ফলে, সারা দুনিয়ায় বুক রিভ্যিউ বই নির্বাচনের অন্যতম সহায়ক বিষয় হলেও আমাদের দেশে এগুলো খুব একটা নাই। তবে, দৈনিক পত্রিকা বা ছোটো কাগজের পুস্তক আলোচনা কারো কারো উপকার করতে পারে।
বিষয়ভিত্তিক বই যারা পড়ে থাকে তারা বইয়ের দোকানের নির্দিষ্ট কয়টা সেল্ফ থেকে প্রয়োজনীয় বই সংগ্রহ করে। আপনার পছন্দ আপনাকে পরিচালিত করবে। এটা ভালো পদ্ধতি ঘটনা আক্রান্ত পাঠকের জন্য। যার আগ্রহ ইতিহাসে, তিনি প্রাচীন নৌ-বিদ্যা ও প্রযুক্তির উপর না পড়লেও সমস্যা নাই। সবাইকে সব কিছু পড়তে হবে তা না। সর্ববিদ্যায় পারদর্শীরা মূলত কোনো কিছু পূর্ণাঙ্গরূপে জানে না। তাদের জানার বার্কিংটা বোঝা যায়।
ভালো বই নির্বাচনের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত পাঠকের পরামর্শ খুব ভালো কাজে লাগে। যেকোনো বই কেনার আগে কয়েকজন ভালো পাঠকের মতামত নিন। এটা খুব কাজে দেয়। তবে, যার তার মন্ত্রণা শুনবেন না। এতে, দেখবেন অনেক ভালো বই রিকমান্ডেশনের অভাবে পড়তে পারেন নাই। যাদের পঠন-পাঠনের উপর আপনার বিশ্বাস আছে, তাদের সাথে কথা বলুল। আপনার জন্য যে ভালো পরামর্শদাতা, আরেকজনের জন্য তিনি ভালো নাও হতে পারেন। সবাই সবার জন্য ভালো নন। আপনার জন্য কে কার্যকর তাকে ফলো করুন। যার কথা শুনে বইটি কিনবেন বা পড়বেন তাঁর পাঠরুচি সম্পর্কে আপনার ভালো আইডিয়া থাকা দরকার। স্যোসাল মিডিয়ার যুগে এটা খুব সহজ। তবে, নিজের উপর আস্থা রাখুন।
ড্যানিয়েল কানেম্যান মনোবিজ্ঞানী। নোবেল পেয়েছেন অর্থনীতিতে। তাঁর একটা বিখ্যাত বই আছে ‘থিঙ্কিং, ফাস্ট এন্ড স্লো’। সেখানে তিনি একটা কয়েনেজ ব্যবহার করেছিলেন ‘সাঙ্ক কস্ট’ বলে। বাংলায় বলা যায় ‘ডুবে যাওয়া পঙ্কে পতিত খরচ’। বাংলা দেখে বোঝা যাচ্ছে আশা করি। অর্থাৎ সাঙ্ক কস্ট হলো এমন ব্যয় যা খরচের পর তা সুদ-আসল কোনোটাই আর ফেরার সম্ভাবনা নাই। ধরেন, বন্ধু বা বান্ধবীকে নিয়ে খুব নামীদামী একটা সিনেপ্লেক্সে গিয়েছেন। দু’জনে টিকেট কেটেছেন প্রায় হাজার দেড়েক টাকা দিয়ে। সাথে কিছু খাবারও কিনে হলে ঢুকেছেন। সিনেমা আধাঘন্টা দেখার পর দেখলেন আপনাদের দু’জনের কারোই আর ভালো লাগছে না। প্রায় দু’হাজার টাকা খরচ করে ফেলেছেন বলে দুই ঘন্টা হলে বসে থাকবেন? এই দুই হাজার টাকা হলো সাঙ্ক কস্ট। এখন আপনি যদি এই টাকা উসুল করতে হলে আরো দেড় ঘণ্টা বসে থাকেন তবে লস শুধু টাকায় না সময়েরও হবে। এই ক্ষেত্রে সহজ সমাধান হলো টাকার কথা ভুলে যান। বের হয়ে এসে দু’জনে সময় কাটান। এটাই খরচ আর না বাড়ানোর উপায়, ক্ষতি কমবে।
চতুর্থ নিয়ম: একটা বই কেনার পরে হলেও পড়ার আগে আইডিয়া নিন। টাকা দিয়ে বই কিনেছেন মানে তা পড়তেই হবে তা না। পড়তে গিয়ে যদি মনে হয় পড়া যায় না, কাজের না, বাদ দিন। এতে ক্ষতি কমবে। ঐ বইটা আমি পড়েছি বলার জন্য যদি কিছু পড়ে থাকেন তবে তা লসের উপর লস।
ব্যাক টু ব্যাসিক
‘আপনার প্রাথমিক জ্ঞান যত বেশি থাকবে, তত কম নতুন জ্ঞান আপনাকে আয়ত্ব করতে হবে।’ আমেরিকান ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী, প্রাক্তন রিয়েল এস্টেট এটর্নি ও দাতা চার্লি মুন্গারের এই কথা বই নির্বাচনের ক্ষেত্রেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাক টু ব্যাসিক। ব্যাসিক সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জানুন। জটিল দুনিয়ার বহুমুখী সমস্যা আপনি একরৈখিক উপলব্ধি দিয়ে সমাধান করতে পারবেন না। সমস্যা যখন তৈরি হয় তখন তা একা একা আসে না। নানা মাত্রার, পরস্পর সম্পর্কহীন সমস্যা তৈরি হতে পারে যেকোনো সিস্টেমে। এখন আপনাকে খুব তীক্ষ্ন একটা সিদ্ধান্ত দিতে হবে যা অনেকগুলো সমস্যাকে একসাথে সামধান দেবে। প্রখর, তীক্ষ্ন মানুষেরা এই কাজটি খুব দক্ষতার সাথে করতে পারেন। তারা পারেন কেননা কমপ্লেক্স সিস্টেম যে জটিলতাগুলো নিয়ে গড়ে উঠেছে তার মৌলিক দিকগুলো তারা খুব ভালোভাবে জানেন। ফলে, দক্ষতা ও মানবিক জ্ঞান তাদেরকে যেকোনো বহুমুখী সমস্যার সরল সমাধান দেওয়ার যোগ্যতা দিয়েছে। এই জন্য খুব সাধারণ আইডিয়াগুলো খুব গভীরভাবে জানার জন্য পড়ুন। সেই বইগুলো নির্বাচন করুন আগে, গুরুত্ব সহকারে। নানা জ্ঞানের নানা বিভাগের ব্যাসিক জ্ঞান অর্জন করলে আপনি লাভবান হবেন। যেমন ডারউইনের বিবর্তনবাদ শুধু জীববিদ্যায় কাজে লাগে না, এই বিবর্তনবাদের জানাবোঝা আপনাকে সমাজ বুঝতে সাহায্য করবে।
খেয়াল করে দেখবেন, যাদের মৌলিক জ্ঞানের উপর আয়ত্ব ভালো তারা যেকোনো ফিল্ডে ভালো করে। অ্যাপলের সিইও স্টিভ জবস জীবনের কোনো এক পর্যায়ে ক্যালিওগ্রাফি শিখেছিলেন। তিনি কোনো উদ্দেশ্য ছাড়াই ক্যালিওগ্রাফি শিখেছিলেন। তিনি ক্যালিওগ্রাফির ব্যাসিক জ্ঞানটা জানতেন বলেই আমরা আজ কম্পিউটারে সুন্দর ফন্টে লিখতে পারি। ২০০৫ সালে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির কনভোকেশনে ছাত্রদের উদ্দেশ্যে তাঁর বিখ্যাত দাশর্নিক বক্তৃতায় এই কথা তিনি বলেছিলেন। বক্তৃতাটা ইউটিউবে পাওয়া যায়। শুনতে পারেন। তিনি এও বলেছিলেন যে, যদি এটা না শিখতেন তবে তার পক্ষে কোনোভাবেই কম্পিউটারে লেখার ফন্ট তৈরি সম্ভব ছিল না। ফলে, আপনার শেখা মৌলিক জ্ঞান জীবনের কোথায় কখন কাজে লাগবে আপনি বুঝতেই পারবেন না। এই কারণে যত পারুন ব্যাসিক নলেজ বাড়ান।
পঞ্চম নিয়ম: উচ্চতর বিষয় পড়ার আগে সাধারণ বিষয়গুলোর উপর দখল আয়ত্ব করুন। এটা আমাদের জীবনে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। নানা বিষয়ের প্রাথমিক জ্ঞানটা থাকলে নানা বিষয়ে পড়া সম্ভব। যেকোনো বিষয়ের প্রাথমিক ধারণা নেওয়ার জন্য পাঠ্যপুস্তক ভালো একটা উপায়। স্কুলের বইটা ঠিক মতো পড়লে ক্ষতি নাই।
লিন্ডি ইফেক্ট
সমকালের গুরুত্বপূর্ণ চিন্তক, দার্শনিক, বেস্টসেলার বইয়ের লেখক নাসিম নিকোলাস তালেবের মতে কোনো অবস্তুগত, অক্ষয় পণ্য, সেবা, চিন্তা, ধারণা, প্রযুক্তির আয়ুষ্কাল নির্ধারণ হয় ‘লিন্ডি ইফেক্ট’ দিয়ে। অধিকাংশ ননপেরিশেবল গুডসের আয়ুষ্কাল নির্ধারিত হয় পূর্বে তা কতদিন বেঁচে ছিল তার উপর নির্ভর করে। যেমন কোনো বই বিগত পঞ্চাশ বছর রিপ্রিন্ট হয়ে থাকলে তা কোনোরূপ পরিবর্তন ছাড়াই আরও পঞ্চাশ বছর প্রিন্ট হবে বলে ধরে নেওয়া যায়। কোনো অবস্তুগত পণ্যের আয়ু তার বিগত আয়ুর সাথে আনুপাতিক হারে বাড়ে। এটাই হলো লিন্ডি ইফেক্ট। এটা পেরিশবল গুডসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। যেমন মানুষ মরণশীল। ফলে একটা শিশু জন্মের পর পর তার মৃত্যুর হার বাড়তে থাকে। তবে একটা বয়সের পর তার আয়ু বাড়তে থাকে। এরপর আবার একটা বয়সের পর তার মৃত্যুর সম্ভাবনা বাড়তে থাকে। লিন্ডি ইফেক্ট শুধুমাত্র অবস্তুগত পণ্যের ক্ষেত্রে ব্যবহারযোগ্য। বই হলো পণ্য, অবস্তুগত পণ্য।
আমরা যে ফর্মে জুতা পায়ে দেই তার আবিষ্কার হয়েছে হিমযুগে। যে চেয়ারে বসে আছি, তার ডিজাইন অন্তত মিশরীয় আমল থেকে এখন অব্দি বড়ো কোনো পরিবর্তন ছাড়াই যুগের পর যুগ চলে আসছে। রকেটে অ্যাস্টোনাট যে চেয়ারে বসে চাঁদ বা মঙ্গলে যায় তা সেই মিশরীয় প্রথম চেয়ারের প্রতিরূপের কাছাকাছি কিছু একটা। এমন বহুকিছু আছে যা অপরিবর্তনীয়। যার আয়ু দিন দিন বাড়ছে। ঠিক একইভাবে বহুদিন হলো দুনিয়ায় যে সমস্ত বই, চিন্তা, দর্শন, বিশ্বাস যুগের পর যুগ রাজত্ব করে যাচ্ছে, তা আরও অগনণ বছর রাজত্ব করে যাবে। ফলে, এই সকল অক্ষত, সোনালি জ্ঞান অর্জন করার জন্য এই সমস্ত বিষয়ে গভীরভাবে পাঠ করুন। এই বইগুলো আপনার পাঠতালিকার শীর্ষে থাকুক।
ষষ্ঠ নিয়ম: যা ক্ল্যাসিক হয়ে উঠছে তা তার নিজ গুণেই হয়ে উঠেছে। ফলে, ধ্রুপদী বিষয় পড়ায় প্রাধান্য দিন।
বইয়ের বিকল্প
দুনিয়ার খুব খুব কম লোক বই পড়ে। সমগ্র দুনিয়ার লোকদের বই পড়তে হবে এমন কিন্তু না। পঠন-পাঠন খুব এক্সপেন্সিভ একটা ব্যাপর। ভালো মানের পড়ার বস্তু সহজলভ্য না। অপ্রতুল, অধিকাংশের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। ধরেন ইচ্ছা করলেই আপনি হার্ভাডে সাইকোলজি পড়তে পারবেন না, বা, আপনার পছন্দের শিক্ষকের লেকচার শুনতে পারবেন না। কিন্তু ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের দুনিয়ায় ইউটিউবে নানা নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরদের সিরিজ লেকচার পাওয়া যায়। ইচ্ছা করলেই অক্সফোর্ডের ক্লাসরুমে যিনি দর্শন পড়ান তার লেকচার আপনি শুনতে পারবেন। দেশের নানা ফিল্ডের দক্ষ লোকদের সাথে যোগাযোগ গড়ে তুলতে পারবেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আপনার প্রিয় শিক্ষক এখন কি নিয়ে চিন্তা করছেন তা জানা আর খুব কঠিন কাজ না। নানা ফিল্ডে কাজ করা মানুষদের সারাজীবনের গবেষণার মূলভাষ্য শুনে নিতে পারবের বিশ-পঁচিশ মিনিটে। ইবুক পাবেন। অডিওবুক, পডকাস্ট আছে নানা বিষয় নিয়ে। ইবুক ও পডকাস্টের বিরাট মার্কেট গড়ে উঠছে বাইরে। আপনি এখন যাত্রাপথে গান শোনার পরিবর্তে সম্পর্কের ‘গেম থিয়োরি’ নিয়ে শুনতে পারেন। আপনার জীবনের ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য ফিল্ডের সবচেয়ে দক্ষ লোকটির মতামত শুনে নিচ্ছেন পার্কে দৌড়াতে দৌড়াতে।
আমাদের দেশের একাডেমিক ও চিন্তকরা প্রযুক্তিবান্ধব না। ইন্টারনেটে লোকাল কনটেন্ট মানে ফালতু নাটক, কিছু গান আর বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের সংবাদ। তারা বুঝতে পারছেন না একটা বই নিয়ে পাঠকের কাছে পৌঁছানো যত কঠিন, ততটাই সহজ ইউটিউবের বক্তব্য দিয়ে। চিন্তা করুন, আপনি কথা বলছেন আর মিরপুর ক্রিকেট স্টেডিয়ামে যত লোক ধরে তত সংখ্যক লোক আপনার কথা ও চিন্তা শুনছে যার যার ঘরে বসে। ভাবা যায়? এতো লোকের কাছে বই দিয়ে পৌঁছাবেন কীভাবে এই দুর্মূল্যের বাজারে। আমাদের চিন্তকরা ফেসবুক, টুইটারে স্ট্যাটাস আর দু’চারটা কবিতা লিখে জীবন পার করে দিল। কোনো শিক্ষককে দেখি নাই নিজের ক্লাসরুমের বাইরে বৃহত্তর ছাত্র সমাজের সাথে যুক্ত হয়েছেন প্রযুক্তির মাধ্যমে। নিজ প্রতিষ্ঠানের বাইরে নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ আর কীভাবে পাওয়া যাবে প্রযুক্তি ছাড়া?
ফলে, শুধু বই না, বইয়ের যে বিকল্প তৈরি হচ্ছে প্রযুক্তির কল্যানে তার সাথে অভ্যস্থ হওয়া দরকার আমাদের। আপনি কী করতে চান সেটাই মূখ্য। কোন মাধ্যমে এগুলো অর্জন করতে চান সেটা একান্ত আপনার নির্বাচন।
সপ্তম নিয়ম: মানুষের সাথে সম্পর্কিত থাকুন। প্রযুক্তিকে সন্দেহ না করে এর সর্বোচ্চ ব্যবহার করুন অর্থপূর্ণ দায়িত্বশীল জীবনের জন্য।
ঋণস্বীকার
লেখাটি খালেদ উদ-দীন সম্পাদিত সাহিত্যের ছোটকাগজ ‘বুনন’ অষ্টম সংখ্যায় প্রকাশিত। লেখক ও সম্পাদকের অনুমোদনক্রমে এখানে প্রকাশিত হলো। —সম্পাদক, শ্রী
.
কবি ও গদ্যকার। প্রকাশিত কবিতার বই: জলপ্রিজমের গান [২০১০], কাছিমের গ্রাম [২০১৬], ঊনমানুষের ভাষা [২০১৮], প্রকাশিত গদ্যের বই: কবিতাকলা ভবন: শিল্প ও সাহিত্যবিষয়ক ব্যাবহারিক চিন্তা [২০২০]। যোগাযোগ: mridulmahbub@gmail.com