বইটার নাম কী হতে পারতো—এমন প্রশ্নের সম্মুখিন হয়ে অনেক কিছুই ভাবছি। নাম তো একটা থাকেই, কানা ছেলে হলেও পদ্মলোচন যেমন; তবে নাম ছাড়াও আমার একটি বই প্রকাশিত হয়েছিল, নাম অত গুরুত্বপূর্ণ কিছু না। কবিতার নাম দিয়ে কবিতা বা কবিকে আমি মনে রাখি না, রাখি তার নকশা দিয়ে। তাই নাম একেবারেই বাহ্য বিষয়। ‘কয়েকটি সুর্য পেরিয়ে’ নামটি মহাবিশ্ব নিয়ে ভাবনা-চিন্তার ফল। আমার চেনা পৃথিবীর বাইরে তাকাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু চোখ তো বারবার পৃথিবতেই ফিরে আসে। ‘অনেক নক্ষত্র পেরিয়ে’ লিখলে হয়তো ব্যাপারটা পরিষ্কার হতো, তখন হাতের কাছে একশ লেবুর শক্তিযুক্ত ভিম লিকুইডও ছিল না, তাই অপরিষ্কারই থাকল। থাকুক।
কেন এই বইটা জরুরী? খুবই জরুরী, কারণ বাইবেলের আগে বা পরে এমন একটি বই লেখা হয়নি। হোমারও পারেননি, রবীন্দ্রনাথও না—যিশু যেমন সবার পাপ কাঁধে নিয়ে ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন, তেমনি আমি সকল কবির অক্ষমতা ঘোচাতে এই বইয়ের কবিতাগুলো লিখেছি। এছাড়াও এই কবিতাগুলো বাঙালি জাতিসত্তার সঙ্গে মিশে গেছে কিনা এই মর্মে কোনো বৃদ্ধের কাছ থেকে শংসা বচনও আনতে পারি। অবশ্য পাঠক চিরকালই যথেষ্ট মূর্খ, তাদের পেছনে প্রমাণ হাজির করে কী লাভ। কবে লেখা শুরু করছিলাম? দিনক্ষণ মনে নেই। একটা বই ছাপার পর পরিণামহীন শূন্যতা ঠেকাতে নিজেকে আবার কবিতায় নিক্ষেপ করেছিলাম। দু-হাজার উনিশ সালে শেষ কবিতার বইটি প্রকাশিত হয়ে থাকলে মার্চ মাস থেকেই লেখা শুরু হয়ে থাকবে। প্রেসে দেওয়ার আগ পর্যন্তও যা থেকে রেহাই পাইনি।
পুরোটা শেষ হতে দু-হাজার উনিশ সালের সালের মার্চ থেকে দু-হাজার একুশ সালে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় তো লাগলোই। এরমধ্যে একটি গল্পের বই বেরিয়েছে, আরো একটি কবিতার বই যন্ত্রস্থ, কিছু একাঙ্কও লিখে সময় নষ্ট করতে হলো। লিখতে গিয়ে কত ভাবনাই তো কাজ করেছে, করছে, সেসবের তো ইয়াত্তা নেই। এখন ভাবনা হচ্ছে, প্রচুর বৃষ্টপাত হলে বইটা পানিতে ভেসে যেতে পারতো। বইটার জলচিকিৎসা দরকার।
পাঠকের উদ্দেশ্যে বলবো, যিনি বাইবেল পড়েননি তিনি আমার বই স্পর্শ করবেন না, আর যদি পড়ে থাকেন তাহলে বাইবেল নিয়েই থাকুন।
বিজ্ঞাপন
প্রিয় লেখক, ২০২১ গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত আপনার বইটি নিয়ে লিখুন ‘আমার বই’ বিভাগে। লেখা পাঠান আমাদের ইমেইলে। সঙ্গে আপনার এবং বইয়ের পরিচিতিমূলক তথ্য এবং ছবি। লেখা পাঠানোর মেইল : editor.sreebd@gmail.com
জন্ম মাদারিপুর জেলা সদরের কুলপদ্বি গ্রামে। বাংলাভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। কবিতার বই : আর্তনাদও এক বায়বীয় ঘোড়া, অসুখের শিরোনাম, দুপুর, ব্যক্তিগত পরিখা, নামহীন, ব্যটারি-চালিত ইচ্ছা, অহেতু বুদ্বুদ। গল্পের বই : বড়দের মাছমাংস। সম্পাদনা : তিন বাঙলার শূন্যের কবিতা।