নবায়ন
বিরতিহীন দীর্ঘ তুষারপাতের পর
চুপিসারে তাপমাত্রা বাড়ছে।
বরফের স্তূপ গলতে শুরু করেছে;
ক্রমে সমস্ত শুভ্রতা শুষে নিয়ে
পৃথিবীকে গিলে ফেলছে—
একটি উজ্জ্বল চিতাবাঘ।
নপুংসক
সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে
দ্বীপে একজন মানুষ বসে আছে;
ঢেউয়ের তোড়ে ভাসিয়ে নেওয়ার হুমকি দিয়ে
পাপড়িসমেত গোলাপের লালের প্রলোভন দেখিয়ে
মানুষটিকে বাগে আনতে চাইছে সমুদ্র।
তারপরও মানুষটি বলেই চলেছে—
সমুদ্র একটি অতি শারীরিক ব্যাপার…
বস্তুত
আমি যখন নিজেকে হাত দিয়ে স্পর্শ করি,
বুঝতে পারি সেটা আমি নই।
আয়না পৃষ্ঠে শরীরের যে প্রতিবিম্ব ফুটে ওঠে,
বুঝতে পারি সেটাও আমি নই।
আমি স্রেফ একটি তরঙ্গ,
যেটি এই লেখার মধ্য দিয়ে
চোখ হয়ে আপনার নিউরনে প্রবেশ করছে।
দূরত্ব
একজনের কাছে ছিল শব্দ,
আরেকজনের কাছে ছিল নীরবতা,
দুজন মিলে রচনা করেছিল—
দূরত্ব।
নৌকো ও আকাশ
ক.
বহু সাধ করে আমরা ডুবে আছি পতনের তলে।
খ.
আলোর লম্ফঝম্প নাই; আমাদের সোনার রাজহাঁস কীভাবে বাড়ি ফিরবে আমরা জানি না। স্ফটিক এই রাতের ঘরে শেষ মোমবাতির আলো জ্বলে চলেছে, হালকা আলোর ঢেউয়ে কতগুলো নৌকোকে বাঁধনহীন পাতলুনের মতো এদিক ওদিক উড়তে দেবো আকাশের ডিমের দিকে; আকাশ নিজেও অজ্ঞ গন্তব্যের ভূগোলে; অতএব, নৌকোগুলোকে আমরা আকাশেই উড়তে দেবো যতক্ষণ না তারা চাঁদের শরীর থেকে আলোর লহরীসহ সোনার রাজহাঁসকে ডেকে না নিয়ে আসতে পারে।
নৌকো আর আকাশকে আমাদের অধীন করে দিন, প্রভু। এখান থেকে আমরা যাত্রা ঘোষণা করেছি, যেখান থেকে শেষের শুরু মাত্র।
জন্ম ১৯৯২ সালের ৮ আগষ্ট। পৈতৃক নিবাস ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার মুন্সিনগর গ্রামে। কৈশোর কেটেছে পুরান ঢাকার ওয়ারী ও নবাবপুরে। প্রকাশিত কবিতার বই ‘বেপথু এই পথে’। এটি তাঁর প্রথম কবিতার বই। বাংলা কবিতার পাশাপাশি ফরাসি সাহিত্য নিয়ে আগ্রহী। বর্তমানে ফ্রান্সের La Régie autonome des transports parisiens(RATP)তে কর্মরত।