অথৈ দুপুর
একদিন পৃথিবীতে তুমিও থাকবা না
আমিও থাকব না।
তবে কি অন্যরা থাকবে?
না, তারাও না।
সাগর থাকবে না, নদী থাকবে না
ফলে কোনো যদিও থাকবে না আর।
একে অপরের সাথে দেখা থাকবে না
এই লেখা থাকবে না
সন্ধ্যা থাকবে না, রাত থাকবে না
ফলে আর আসবে না ভোর।
পথ থাকবে না, হাঁটা থাকবে না
ঘটনা থাকবে না, ঘনঘটা থাকবে না
মানুষ থাকবে না, মানুষের মন থাকবে না।
গ্রাম থাকবে না, বন থাকবে না
এমনকি থাকবে না শহর।
আমরা যে থাকব না সেটা তো কিছুটা নিকটে,
অন্যগুলো দূর—
পৃথিবীর সব গিয়ে তবু যেন থেকে যাবে অথৈ দুপুর!
পুষ্প
আমার বাগানে ফুল ফোটে
ফোটে বারান্দায়ও ফুল
আমার ছাদেও ফুল ফোটে
বিছানাতে শুইয়া থাকলে
ফুল উপরে ওঠে।
এত্তো ফুলের কোলে থাকা
একটা জীবন মোটে আমার
একটা জীবন মোটে।
সিকিম
বইমেলা তো বইমেলা
বই দেখি না, মেয়ে—
ধোঁয়ার টানে কোনায় গেলে
কোকিল ওঠে গেয়ে।
হট্টগোলে যায় না শোনা
দোনামোনায় থাকি
মুখেতে মাস্ক ফলেই কি-না
ফিগারে চোখ রাখি
লুক দিলে কি হুক খুলিবে
গাল হবে টুকটুক?
সিকিম দেখার মতো করে
দেখছি তোমার বুক!
ঘর নয়
বাড়ি ফেরার পথে ভাবি কী সর্বনাশ বাড়ি!
দুইটা রুমের কামরা আমার থাকবে অন্ধকারই।
চাবির মোচড় গচর-গচর খুলবে তালার হা’টা
লাইট জ্বালিয়ে দেখব ঘরে হয়নি দেয়া ঝাঁটা
ঘর ভাবতে গিয়ে ভাবি কী সর্বনাশ ঘর!
একলা রুমে পর্দাগুলো কাঁপবে কী থর্থর!
চায়ের পানি ফুটবে যখন চা পাতা না পাবো
আয়নাতে চোখ—বলবে সে কে, কী ভাবো কী ভাবো!
গান ছেড়ে হায় প্রাণটা কী চায়! আধশোয়া বিছনায়
দুইটা রুমের আবাস শালার—ঘর হবে সে চায়!
ঢেকে রাখার এমন ফাঁকা
যেন কোনো পাতার কাছে গেলে
হাওয়া আসবে জানলা-কপাট ঠেলে
কাঁপবে কোনো নতুন পত্র পিছল তনুর ঠোঁটে
মেঘলা দিনের মন্থরতা একাই নিজে ওঠে
জ্বালায় বড়ো নালায় ফেলে ডোবায় কারাগারে
একটা জীবন ভাগ করে কে মারছে বারে বারে!
পড়েই আছি সরেও আছি নিকট শুধু স্মৃতির
নিজের কাছে নিজের কেন—কিসের পরিমিতি!
ও সে ডাকতে গিয়ে জাগতে বলে রাখছে কোথায় কাকে
খোলার পরে ছড়িয়ে পড়ে ফলে আবার ঢাকে
ঢেকে রাখার এমন ফাঁকার মধ্যে স্রোতের তাড়া
চারার থেকে গাছ হয়েছে, গাছের থেকে চারা!
জন্ম: ২০ ডিসেম্বর; খেজুরা, বাকেরগঞ্জ, বরিশাল। স্নাতকোত্তর (অর্থনীতি)। প্রকাশিত বই: কবিতা— মেঘ সামান্য হাসো [ঐতিহ্য, ২০১৫] পুষ্প আপনার জন্য ফোটে [জেব্রাক্রসিং, ২০১৮ ও বৈভব সংস্করণ, ২০২০] আকাশ চাপা পড়ে মরে যেতে পারি [বাতিঘর, ২০২০] ই-মেইল : michhilkr@gmail.com