ফজল শাহাবুদ্দীন (১৯৩৬-২০১৪) পাঁচের দশকের একজন অন্যতম কবি। তাঁর কবিতার বিস্তৃতি ষাটের দশক থেকে পরবর্তী ৪ দশক পর্যন্ত। তিনি ‘সাপ্তাহিক বিচিত্রা’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া কাজ করেছেন ‘সচিত্র সন্ধানী’ এবং ‘দৈনিক বাংলা’ পত্রিকায়। তিনি বাংলাদেশে বসন্তকালীন কবিতা উৎসবের আয়োজক, যার ধারা বর্তমানেও অব্যাহত। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ২৭টি। কবি ফজল শাহাবুদ্দীনের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হলো তৃষ্ণার অগ্নিতে একা (১৯৬৫), আকাঙ্ক্ষিত অসুন্দর (১৯৬৬), আততায়ী সূর্যাস্ত (১৯৭৫), অন্তরীক্ষে অরণ্য (১৯৮০), সান্নিধ্যের আর্তনাদ (১৯৮৩), আলোহীন অন্ধকারহীন (১৯৮৪)।
ব্যক্তিসত্তার সৃজনশীল বহিঃপ্রকাশ কবিসত্তার জন্ম দেয়। ব্যক্তির চিন্তা-চেতনা কবিতায় রূপলাভ করে। বিশেষত উত্তাল সময় ও রাজনীতি কবিসত্তায় প্রভাব বিস্তার করে। পাঁচের দশকের এমনই এক উত্তাল সময়ে কবি ফজল শাহাবুদ্দীনের আবির্ভাব। নৈরাশ্য ও অলীক কল্পনার বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে ফজল শাহাবুদ্দীনের কবিতা অমর হয়ে আছে। তাঁর কাছে কবিতা এক ধরনের স্বগতোক্তির ঘনিষ্ঠ উচ্চারণ। যা কেবল জাগতিক অর্থে নয়, মহাজাগতিক বা আত্মিক অর্থেও সত্য। তাঁর সকল লৌকিক ও পরলৌকিক ধ্যান-ধারণার মধ্যে কবিতা ছিল এক অবিচ্ছেদ্য উপাদান। কবি ফজল শাহাবুদ্দীনকে কেউ কেউ আখ্যা দেন ‘অন্তহীন কবি’, ‘প্রেমের ও নিসর্গের কবি’ হিসেবে। কিন্তু তাঁর বড়ো পরিচয় তিনি মুক্তিযুদ্ধের কবি। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট, চেতনা ও পরবর্তী অবস্থা তাঁর কবিতায় উঠে এসেছে।
মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী উত্তাল সময়ের সাক্ষী ফজল শাহাবুদ্দীন। এ সময়ে দীর্ঘ ও প্রলম্বিত সংগ্রাম— কখনো মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, কখনো ছাত্রদের বিজ্ঞানভিত্তিক, সর্বজনীন শিক্ষার জন্য সংগ্রাম, কখনো বাঙালি জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার প্রতিষ্ঠার তথা স্বায়ত্তশাসন আদায়ের জন্য সংগ্রাম। কখনো বা সামরিক শাসনবিরোধী সংগ্রাম, কখনো অর্থনৈতিক দাবি-দাওয়া আদায়ের সংগ্রাম এবং এই পুরো সময় জুড়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদ, ধর্মীয় কূপমণ্ডুকতার বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িকতা, গণতন্ত্র এবং বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার উপযোগী সুস্থ-সবল সাংস্কৃতিক সংগ্রামে সব রক্তঝরা বেগবান আন্দোলন প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিল এক মহাজাগরণের, যার ঢেউ গণজোয়ার তুলেছিল ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে। এই প্রতিটি সময়কে কবিতার শরীরে ধারণ করেছেন ফজল শাহাবুদ্দীন।
পশ্চিমা শোষণ ও বঞ্চনার চিত্র ফুটে উঠেছে কবিতার পঙক্তিতে। দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে সৃষ্ট পাকিস্তানের যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সাংস্কৃতিক সার্বভৌমত্ব প্রত্যাশা ছিল দৃপ্ত, তা সাতচল্লিশ-উত্তর অব্যবহিতকাল পরেই টানাপোড়েনে পর্যবসিত হয়।
পশ্চিমা শোষণ ও বঞ্চনার চিত্র ফুটে উঠেছে কবিতার পঙক্তিতে। দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে সৃষ্ট পাকিস্তানের যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সাংস্কৃতিক সার্বভৌমত্ব প্রত্যাশা ছিল দৃপ্ত, তা সাতচল্লিশ-উত্তর অব্যবহিতকাল পরেই টানাপোড়েনে পর্যবসিত হয়। এরই প্রেক্ষিতে দেখা দেয় রাষ্ট্রভাষা ও পাকিস্তানি তত্ত্ব মুসলিম জাতীয়তাবাদের বিতর্ক। এই সাংস্কৃতিক বিতর্ক পরে রাজনৈতিক কার্যক্রমের ফসল হয়ে দাঁড়ায়। রাজনীতি, সাংস্কৃতিক আবহে বিস্তার লাভ করতে থাকে। ফলে সাতচল্লিশ-উত্তর পূর্ববাংলায় প্রথমে সংগঠিত হয় রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ও স্বাধিকার আন্দোলন, পরে স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধীনতার আন্দোলন। স্বাধীনতার আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ লাভ করে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। আমিনুর রহমান সুলতান বলেন: মুক্তিযুদ্ধের আগে পূর্ববাংলার কবিতায় স্পষ্টত বুর্জোয়া মানবতাবাদী এবং মার্কসবাদী এই দুই ধারা বিদ্যমান ছিল। শুধু তাই নয়, এই দুটি ধারা মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে লেখা কবিতাগুলোর একটি ঐতিহ্য স্পষ্ট করতে পেরেছিল। যাকে বাংলাদেশের জাতীয় চেতনার জাগরণমূলক কবিতার ঐতিহ্য বলা চলে।
ফজল শাহাবুদ্দীনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। কিন্তু তাঁর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। মুক্তিযুদ্ধের সময় সকলে সশস্ত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। কিন্তু নেপথ্যে থেকেই পালন করেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। কিন্তু যারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধ চেতনায় ছিলেন, তাদের বিবেক মৃত। কবি তাদেরকে ধিক্কার জানান। আর কবি নিজে সশস্ত্র সংগ্রামে অংশগ্রহণ করতে না পারায় আক্ষেপ প্রকাশ করেন কবিতায়:
আমি শুধু কোথাও পারিনি যেতে
লন্ডনে আগরতলা কিংবা মুজিবনগরে
যদিও সুতীক্ষ্ম সেই মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প
পলাতক মাতৃভূমির মতোন নিভৃত অস্থির
হাতছানি দিয়ে ডাকে প্রতিদিন।
[কোথাও পারিনি যেতে]
‘জয়বাংলা’ বজ্রধ্বনিতে সোচ্চার কণ্ঠের প্রতি কবির যে সমর্থন তা তিনি প্রকাশ করেছেন কবিতায়—নিভৃতে। সারি সারি লাশ, ধর্ষিতা মায়ের রক্ত ভেজা মাটি, শস্যহীন মাঠে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা মাথার খুলি সবকিছুকেই রক্তালুত বিবেক নিয়ে তিনি পর্যবেক্ষণ করেছেন। তিনি ঈশ্বরকে অভিহিত করেছেন ‘খুনি ঈশ্বর’ বলে। চারিদিকে এতো মৃত্যু দেখেও ঈশ্বরের নিরবতা তিনি সহ্য করতে পারেন না। কবিও কবিতার স্রষ্টা। তিনি তাঁর সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে যুদ্ধের ময়দানে উপস্থিত হতে না পারলেও কলমের কালি তাঁর অস্ত্র হয়ে উঠেছে:
নিজবাসভূমে যেন মৃত্যুদণ্ড দেয়া
পালিয়ে বেড়ানো সন্ত্রস্ত আসামী কোনো।
[কোথাও পারিনি যেতে]
কবি শামসুর রাহমান (১৯২৯-২০০৬) তাঁর কাব্যে এক অদৃশ্য গণ্ডীবদ্ধ হয়ে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী কাব্যসমূহে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক শব্দের ব্যবহার এড়িয়ে চলতেন। সক্রিয় রাজনৈতিক অবস্থান তখন তাঁর কবিতায় অনুপস্থিত ছিল। ফলে বিবেকের তাড়না তাঁর কবিতাতেও পরিলক্ষিত। কারণ দেশের দুরবস্থার সময় কবিরা সবকিছু ভুলে থাকতে পারেন না। স্বৈরশাসনের সময় চারিদিকের শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি তাঁদেরকে তাড়িত করে। কিন্তু স্বভাবতবশত অনেকে বিপ্লবী হয়ে না উঠে বরং কবিতার আশ্রয় নেন। শামসুর রাহমান তাঁর প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে কাব্যে বলেন:
মনে হয় আমি যেন সেই লোকশ্রুত ল্যাজারাস
তিনদিন ছিলাম কবরে, মৃত-পুনর্জীবনের
মায়াস্পর্শে আবার এসেছি ফিরে পৃথিবীর রোদে
পোশাকের জেল্লা তবু পারে না লুকাতে কোনোমতে।
[প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে]
একাত্তরে বাংলাদেশের যে ভয়াবহ পরিস্থিতি ছিল তা বর্ণনা করেছেন প্রতিনি কবিতায়। মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক দুরবস্থা এবং নৃশংসতা প্রকাশ পেয়েছে কবিতার চরণে।
বাংলাদেশ আগুন লাগা শহর আর লক্ষ গ্রাম
বাংলাদেশ দুর্গময় ক্রদ্ধময় এক ভিয়েৎনাম।
[বাংলাদেশ, একাত্তরে]
‘নতুন ভিয়েৎনাম’ কবিতায় কবি তৎকালীন ভিয়েৎনামের সংগ্রামমুখর ইতিহাসের সঙ্গে বাংলাদেশর পরিস্তিতির তুলনা করেছে। এখানে কবি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত যে সংগ্রাম তা তুলে ধরেছেন। কবির ভাষায়:
রাইফেলধারী বেয়োনেটধারী শোনো
তোমাকে চিনেছি তুমি খুনি পুরাতন
আমার মায়ের কণ্ঠে চালাতে ছুরি
তুমি এসেছিলে সেই কবে ফাল্গুনে।
[নতুন ভিয়েতনাম]
কবিতায় কবি বীর বাঙালির সাহসিকতা এবং আত্মপ্রত্যয়ের বাণী উচ্চারণ করেন। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, বাঙালি সংগ্রামে ও স্বাধীনতায় কারো সঙ্গে আপোষ করেনি, মাথানত করেনি, রাজপথে রক্ত ঢালতে কুণ্ঠিত হয়নি। ১৯৭১ সালেও কেবল বুকে অপরিসীম সাহস নিয়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে। কবির ভাষায়:
রাইফেলধারী বেয়োনেটধারী শোনো
এবার তোমার রক্ত দেবার পালা
শানিত তীক্ষ্ম সাত কোটি হাতিয়ার
বঙ্গভূমিতে নতুন ভিয়েতনাম।
[নতুন ভিয়েতনাম]
কবি ফজল শাহাবুদ্দীনের কবিতা হয়ে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অকাট্য দলিল। ১৯৭১ সালের প্রতিটি ভয়াবহ দিন, আতঙ্কিত রাত, গুমোট হয়ে থাকা সন্ধ্যার বর্ণনা দিয়েছেন কবি। ‘আগস্টের সন্ধ্যারাত্রে’, ‘একাত্তরে’, ‘আততায়ী সূর্যাস্ত’ ‘স্তম্ভিত আর্তনাদ’ ‘আগস্ট ’৭১’ ‘একটি বিকেল’ ‘এপ্রিলের একটি দিন ১৯৭১’ ‘ইদানীং বাংলাদেশে’ ইত্যাদি কবিতায় তার প্রমাণ মেলে। গ্রামীণ বাংলার রূপ-প্রকৃতির মধ্যে যে স্নিগ্ধতা তা হঠাৎ করে আতঙ্ক ও মৃত্যুতে স্তব্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশ যেন অচেনা হয়ে ওঠে বাঙালির কাছে। শান্তিপ্রিয় বাঙালি আতঙ্কে দিনযাপন করে:
সেই বাংলাদেশে এখনো কি নদী আছে? ঢেউ ঢেউ
দীঘির ভাষায় এখনে কি কেউ কথা বলে আর
কদম ফুলের ঘ্রাণে এখনো কি বৃষ্টি নামে এই
বাংলাদেশে রক্তে ভেজা মানুষের ক্ষুধার্ত শপথে।
[একদিন বাংলাদেশে]
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধের যে ভয়াবহতা বিরাজ করেছিলেঅ তার উল্লেখ করেছেন কবি। কুষ্টিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মেঘনার তীর সবজায়গায় মর্টারের ভয়ানক শব্দ, শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি। বাংলাদেশ তখন মিছিলের মতো বারবার কেঁপে ওঠে। সাবেকী সূর্য তখন আর উদিত হয় না, বাংলাদেশের আকাশে রক্তমাখা। যে প্রকৃতি ছিল সবুজ, সতেজ তা হাজার হাজার লাশের দুর্গন্ধে ভরা:
বাবা মা ভাই বোন স্ত্রী পুত্র কন্যা এবং প্রিয়তমার লক্ষ লক্ষ লাশ
পচা কচুরিপানার মতো এখন স্তূপীকৃত পড়ে আছে।
[আরো একটি ঝড়]
কবির হৃদয়ে বাংলাদেশ, বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য, সন্ধ্যা, রাত্রি, সূর্যকরোজ্জ্বল দিন, সমুদ্র, শান্ত হেমন্তের শস্যভারাক্রান্ত মাঠ, শীত গ্রীষ্ম, পাহাড়-প্রান্তর, বৃষ্টিবধির বর্ষা, আদিগন্ত বিস্তৃত কুয়াশা, সবই বাঙালির দীনদশা, অন্নহীনতা, বস্ত্রহীনতা, কোটি কোটি অসহায় বিপন্ন মানুষের আত্মচিৎকার সবই জীবনের অনুষঙ্গ। তিনি হৃদয় দিয়ে ধারণ করেন দেশ ও দেশের মানুষকে। ফলে বাংলাদেশ হয়ে ওঠে তাঁর হৃদয়ের অপর নাম। সেই বাংলাদেশের দুর্দিনে কবি থেমে থাকেননি। তিনি কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক আদর্শে উদ্বুদ্ধ না হয়ে একান্ত ব্যক্তিগতভাবে অনুভব করেছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে। ‘আমাদের চৈতন্যে একটি মুক্তিযুদ্ধ’ কবিতায় কবি পূর্ব ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরে ধীরে ধীরে আমাদের অবরুদ্ধ জীবনকে উপস্থাপন করেন। আমাদের বহু প্রতিবন্ধকতা থাকার পরেও আমরা সাহসিকতার সঙ্গে ঝাপিয়ে পড়েছি। কারণ আমাদের চৈতন্যে ছিল একটি শব্দ ‘মুক্তিযুদ্ধ’:
আমাদের সামনে ছিল এক বিশাল বধ্যভূমি
নৃশংসতার এক বিশাল দেয়াল
চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছিল আমাদের
সেই দিন এই শহরে
কিন্তু সেদিন কোনো দ্বিধা কোনো শংকা ছিল না আমাদের অস্তিত্বে।
কেননা সেদিন
আমাদের চৈতন্যের সকল শিখায় সকল প্রার্থনায় প্রতিজ্ঞায়
একটি মুক্তিযুদ্ধ উচ্চারিত ছিল সর্বক্ষণ।
[আমাদের চৈতন্যে একটি মুক্তিযুদ্ধ]
কবির কাছে তাঁর স্বদেশ হলো প্রিয়তমার নিবিড়তম স্পর্শের চাইতেও অধিক গভীর এবং অন্তরঙ্গ। মাটির স্পর্শ, জন্মভূমির মৃত্তিকার ঘ্রাণকে তিনি ভালোবেসেছেন। কবি স্বদেশকে বলেছেন ‘মায়ের মতো উপমাহীন’। সেই স্বদেশ যখন দুঃসময় পার করছে তখন কবির হৃদয় ব্যথায় পূর্ণ হয়ে ওঠে। এই যন্ত্রণাকে কবি তাঁর কবিতায় স্থান দিয়েছেন। কবি চেয়েছেন স্বদেশ শত্রুমুক্ত হোক এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিটি বাঙালির হৃদয় জুড়ে থাকুক। কবি এই মাটির প্রতিটি ধূলিকণাকে বহন করে নিয়ে যেতে চান ভবিষ্যতের স্বর্ণোজ্জ্বল সিংহদ্বারে।
প্রভাষক, বাংলা বিভাগ। রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।