দুর্বোধ্য
আড়াল করেছিলে বিরহগীত
চিহ্ন মুছে দিয়ে অকস্মাৎ
ঘুঙুর যেতে যেতে হারালে পথে
অথচ বলেছিলে নবীন ভোরে
হলদে পাখিটির ডানার নীলে
ভুলবে অবসাদ ক্ষতের দাগ
ভুলেছ, বলো?
রাগ মালকোষ
শীতল নদীকে কুয়াশা দিয়েছ
জন্মেছে ভীরু ব্যথা
প্লাবনে জুড়েছ শ্রাবণ গল্প
কবিতারা রূপকথা
আকাশে উড়ছে ক্যাসিনোর ঢঙে
মেঘেদের ঘর-বাড়ি
জমিনে ফুটছে বারুদগন্ধা
আগুনের তরবারি
ব্যবধান সে ও বিস্তর আছে
আছে শত প্রতিকথা
অধিকারে কার স্বর নিভে যায়
দুর্মর মনোব্যথা
মুহূর্ত মুছে মুহূর্তে বাড়ে
সর্বনাশের দিন
রক্তজোয়ার হয় অনিবার
প্রতিরোধ দ্বিধাহীন
কুয়াশার জাল ছিঁড়েছে হঠাৎ
স্ফূরিত হে মহারোষ
বাতাসে ভাসছে পুষ্প গীতিকা
ঋতুরাগ মালকোষ
পরাজয়
এলানো রোদ দুপুর নির্জনে
পথের শেষে অল্প থেমে আছে
মোহের চেয়ে অধিক অনুরাগে
বইছে নদী অচেনা দূরদেশে
পাখির ডানা ঝাপটে মরে সুখে
ভিজে ঘাসের মুক্তো দুলে যায়
তারায় ভরা আকাশ শামিয়ানা
আমায় দেখে মুখ লুকিয়ে চায়
হঠাৎ দেখি রাত ঢেকেছে আলো
বুকের মাঝে জমাট শিলাক্ষত
জল উজানো বৃষ্টি ভেজা দিনে
আমায় কে যে করছে প্রতিহত
থামাতে চেয়ে হানছে শতবাধা
আঘাত করে আনে বিপর্যয়
ব্যথায় নু’য়ে পড়ছে জয়গাথা
কোথায় তুমি, দেখাও বরাভয়!
পিউকাঁহা
ভুল ছিল কিছু
নিশ্চিত করে জানি
ফুলেরা কখনো মিথ্যে বলে না
দ্বিধাহীন আজ মানি
চেয়েছিলে প্রীতি
আলোর উদ্ভাসন
আগুনের আঁচে পুড়ে গেল ডানা
ভুলেছ সম্ভাষণ
নিভৃত যাতনা
ভুলে যদি আসো ফের
খর শীত কেটে আলোর ডানায়
মিল দেব হরফের
দূরের ডানায়
ভিড় করে আসে স্পৃহা
বসন্ত এলে গেয়ে যাব দোঁহে
এসো প্রেম পিউকাঁহা
একটি মৃত্যু
সয়েছি কতবার কলহ উত্তাপ
এবার ভেঙে যাক সকল ভয়
সকল আয়োজন গোপন উল্লাস
মিলিয়ে যাক ওই শূন্যতায়
স্বপ্ন ভুলে যারা তীর্থে চলেছিল
অতীত মুছে গেছে তাদের আজ
বিগত জীবনের তামাদি দিনরাত
আগুনে ঝলসায় ঋক্ষরাজ
বাজছে দ্রুত লয়ে মরণ এস্রাজ
হাসছে শেষ হাসি পদ্মনাভ
সমুহ ধ্বংসের জয়ের উল্লাসে
কাঁপছে আসমান, মর্ত্যধাম
মেঘ অদিতির জন্ম বাংলাদেশের জামালপুরে। ঢাকায় থাকেন। পেশায় গ্রাফিক ডিজাইনার। তিনি মূলত কবি। পাশাপাশি গল্প এবং গদ্য চর্চা করেন। সম্পদনামণ্ডলির সঙ্গে যুক্ত আছেন ‘ঐহিক’ নামক বাংলা ভাষাভিত্তিক ওয়েব পত্রিকার। ঐহিক বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা সাতটি। কবিতার বই চারটি আর গল্পের তিনটি।