১.
তোমার লিপ্ততা জুড়ে আমিই
আগলিয়ে রাখি মৌমাছি, অপঙ্ক্তির হেম
জখমি হাওয়া বলছে,
মদিরাবিভোর মির্জার সন্দিহান চোখ হচ্ছে প্রেম
২.
তরঙ্গিণীরা কবিকে নয় পিথাগোরাসকে বিশ্বাস করে
কবির চেয়ে স্টাফড বিড়ালকে ভাবে বেশি পাশবিক
তরঙ্গিণীরা কবিকে নয়
কবিতার মজ্জাপায়ী অভিসারে মুছে চলেন গীর্জাধ্বনি
বাষ্পকুঠারে জমে ওঠা দ্বিরাগমনের মধ্যযুগ থেকে,
কবির অপমৃত্যু নিয়তিপ্রতারিত
৩.
স্পর্শ হলো জলের মন
সেই মনোবীণা থেকে মাকড়শারা
চৌষট্টি যোগিনীর দিকে মেঘাতুর সচ্ছলতার দিকে চলে গেছে
বন-অতীতের ভাষা যেভাবে
গলিত ইস্পাতে ইস্পাতে ফাগের ছটা হয়ে ওঠে
যেন খোদাকে দেখার চেয়েও
আমার নিজস্ব ইশরাত পাতালবিরহী, মাতৃরূপেণ
৪.
সাক্ষী
কেটে ফেলা গাছে থোকা থোকা আধপাকা ফল
সাক্ষী
গঘের ফসলের মাঠে ঘনিয়ে ওঠা সিজোফ্রেনিক দুপুর
সাক্ষী
সঞ্চারিত হওয়ার ছুতোয় নভোআয়ুর ক্ষয়
সাক্ষী
নীল ইগুয়ানা, তোমার শপথ
সাক্ষী
জেরক্সেসের দুয়ারে আমাদের ফেলে আসা গান
সাক্ষী
দমকলের ঘণ্টা কুড়িয়ে নিচ্ছে আগুন, সকল অযোগাযোগের
সাক্ষী
ইনগা পাথরে আঁকা সাপের ঝাঁপি, খুললেই সমুদ্রপাখি
তবু পথে-বিপথে কাঁটা বিছায়েছে কে গো?
—আমার মরণ
৫.
একটা চুম্বনের দূরত্বে মানুষ তার ঈর্ষা ছুঁতে পারেনি কখনো
মৌরিকোলাহল ঘনায়, হাসানলু প্রেমীরা ঘনায়, ঘনায় ধূ-ধূ মনীষা…
নরকসন্ধির পথে ঝুরঝুর ঝরে পরে পিচার প্ল্যান্ট কোথাও
লিপ্সার অধিক মানুষ ভালোবাসতে চেয়েছে ঠিকই
তবু মানুষের অরূপের সাথে হলো না দেখা স্বর্ণবোয়ালের
৬.
পথে দুটো মৃত প্রজাপতি উল্টে পড়ে আছে
তারা কেউ কারো কাছে আর পৌঁছাতে পারবে না
দূরে একটা ভাঁটফুল তার সর্বস্ব নিয়ে ঝুঁকে আছে
রজঃস্বলা পূর্ণিমার দিকে—
শুধু এই দৃশ্যের ছায়া পড়ুক প্রজাপতি দুটোর গায়ে,
আমার এটুকুই পুনর্জন্ম, তোমার আলেয়ায়
বাংলা কবিতায় অমিত রেজা চৌধুরীর উত্থান নব্বইয়ের দশকে। বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গে, বগুড়ায় বসবাস করেন। কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, সমালোচনা— বিভিন্ন মাধ্যমে তার বিচরণ অবাধ। একসময় দেশের প্রথিতযশা লিটলম্যাগাজিনগুলোয় লিখেছেন নিয়মিত। লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের সাথেও ওতোপ্রোতোভাবে যুক্ত ছিলেন এবং এখনও সেই বিশ্বাস লালন করেন। কী এক অজ্ঞাত কারণে গদ্যরচনার জগৎ থেকে এখন অনেকটাই দূরে অবস্থান করেন। কোনো বই প্রকাশিত হয়নি।