শুক্রবার, নভেম্বর ২২

রাত্রি ও অন্যান্য কবিতা : কুশল ইশতিয়াক

0

রাত্রি


ঝাউগাছের সাথে বাতাসের প্রেমের গল্প বলা যেত। হাওয়ার সুন্দর শব্দ— ঝাউগাছ ছাড়া বোঝা যেত কী? কান পাতলে শুনতে পেতে তুমি।

চোখ খুলব না এই সুবৃহৎ অন্ধকারে দাঁড়িয়ে— যেন ঝাউয়ের জগতে আমি একা। যেন ঝাউয়ের জগতে আমিও ঝাউগাছ, তোমাকে হাওয়া ভেবে ডাকি…


এমন ঝড়ের সন্ধ্যায়


প্রথমে শুধু হাওয়া এলো। দমকা। হাওয়া এলো— অতি অল্প সময়ের তরে। অতি অল্পেই হৃদয় নিংড়ানো সন্ধ্যা। অন্ধকারে থেমে থাকা ফুল দুটো একটু কাঁপল। শরীর মেলে দিলো বাধাহীন, উড়ে উড়ে কোথায় কয়েকটি পাঁপড়িও হারাল। বাতাসে ফেঁপে ওঠা দেহ, এলোমেলো, কাঁপা কাঁপা, নরম সুঘ্রাণ ছড়াল শহরের প্রতিটি বাড়ির কোণে। এই দেখা— অল্প সময়ের। আলোড়ন এই, স্বল্প সময়ের। অথচ মনে হলো দূর থেকে ভেসে আসা ইশারা, অনন্তের দিকে নিয়ে গেল জীবনের সৌরভ। এমন ঝড়ের সন্ধ্যায়, ফুলের গল্পই সব।


অন্ধকারের আয়না


১.
বহুকাল অপেক্ষার পরে
তুমি কেন নিঃসঙ্গতার ধারে এলে

২.
অন্ধকারের একটা গন্ধ আছে, সেই গন্ধ আমি মাঝে মাঝে পাই। হাওয়ার শোঁ শোঁ শব্দ হয়, কে যেন আমার কানে ফিসফিস করে। অন্ধকার কি একটা ফুল? অন্ধকারকে ভাবলে তোমার কথা মনে হয়।

তুমি অন্ধ বলে আমার প্রেমে পড়েছিলে।

৩.
কতগুলো জগত, মার্বেলের মত তোমার পায়ের কাছে গড়াগড়ি খায়।

৪.
কথোপকথনই স্বপ্ন। লোক লোকান্তরের।


কায়া


মুখ—

 

ছিঁড়ে যায়

 

বাতাসে। পাতার মতই…

 

উড়ে গেছে

 

অন্ধকার, নিথর রেখে অর্ধেক অবয়ব আমার


লালচে বিকেল


ব্ল্যাকবোর্ডে অংক করতে গিয়ে বুঝে ফেলেছিলাম নির্জনতার গাণিতিক রূপ কী হতে পারে। সে কথা আমি কাউকে বলি নি কোনোদিন। রোজ দুপুরে ক্লাসঘরে আমি একা নির্জনতা আঁকতাম।

আমাদের টিচার বলতেন, প্রতিটি অংক এক একটা পাখি। লালচে বিকেলগুলিতে এক দুইটা পাখি আমি তোমার কাছে পাঠাতাম।

শেয়ার করুন

লেখক পরিচিতি

জন্ম ১৭ জুলাই, ১৯৮৭, বরিশাল। বরিশাল জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক, নটরডেম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে স্নাতক। বর্তমানে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে কর্মরত।

error: আপনার আবেদন গ্রহণযোগ্য নয় ।