সন্তরণরাশি
বিদেশি গবেষণায় কত কিছু প্রমাণিত হয়
তোমার হাসির মানে তোমারি অভ্যন্তরে রয়
দেখে আমি পুলকিত ভূগর্ভস্থ মিষ্টিআলুর কষ
থেকে হয়ে উদ্ভূত উল্লম্ফনের ঝাঁকিতে অবশ
ছিলাম কয়েক মৃত্যু সমপরিমাণ বাসনার
পাপেটে মোড়ানো কোনো মিশনারি পরিষেবাবৎ
তোমার হাসির মানে আরো প্রাচীন শাসন ব্যবস্থার
দীর্ঘসূত্রিতায় বোনা আছি আমি এ যাবৎ
দুখি আমরা
আমরা দুজন দুইটা ভিন্ন দ্বীপের মধ্যে আটকা আছি
চিরস্থায়ী দুখের সঙ্গে সকাল সন্ধ্যা টাটকা আছি
পৃথক পৃথক অপ্রাপ্তিযোগ এই জীবনকে ব্যাকুল করে
রাখল যেন একটা ফেরি একূল থেকে সেকূল ক’রে
পুত্রহারা পিতার মতো—মায়ের মতো অবিশ্বাসে
এদিক থেকে সেদিক ঘুরে দিচ্ছে বাড়ি বুকের শ্বাসে
আমরা দুজন ব্যস্ত আছি ভিন্ন দ্বীপের কাঁকড়া খোঁজায়
না জেনেও টের পাওয়া আর কাকতালীয় দুচোখ বোজায়
কিন্তু ছিলাম পৃথক, আছি, থাকব পৃথক সম্ভবত
শাশ্বত দূর, অদূর হতে হাত বাড়াবে বংশগত
বরফশক্তি
[ইনিসীকে—]
যেন চলে গেছি ফিরে;
জাপানি ভাষায় কথা বলা কোনো রাশিয়ান নদী তীরে
ফেরা তবু একদিন বের হওয়াহীন হতে পারে তাও
বুঝলাম চেনা লাগতেই পারে
ভালুকের বিছানাও
সবকিছু খুবই মানিয়ে যাওয়ার পর থেকে শুরু হয়ে
এসে ভর করে—গায়ে ও গতরে
চোখ কান ভুরু হয়ে
অভিব্যক্তি অবধি পৌঁছে সুনশান মিশে থাকে
যেন চলে গেছি কাকে—
না নিয়েই তবু ফিরবার মতো বলা নেই কওয়া নেই
যেন যা হয়েছে একবার তার—দুইবার হওয়া নেই
দিয়ো তাকে তার করুণ অংশ
কীইবা বলো করার থাকে তার?
থাকতে যদি না পারে সে—না হয়ে ছারখার!
চলতে যদি লাগেই কোনো টলতে থাকার পরিস্থিতি
ভাবতে গিয়ে হওয়াই লাগে দ্বিধার দ্বিখণ্ডন
তখন তাকে চিনতে পারো একটা ভাঙা মন—হিসেবে
তোমার নিজের টুকরাগুলি মিশিয়ে দেবার স্থান
কীইবা বলো করার থাকে—সবচেয়ে করুণ অংশটাকে
নিজেই গিয়ে ধরতে যদি চায়?
দিয়ো তাকে তার করুণ অংশ—ধ্বংসাবশেষ
আইসা তোমার সাথেও কিছু
করতে যদি চায়
টিনের ছাদের একটা ট্রলার
একটা ট্রলার একটা ট্রলার
…….. বইসা আছি তোমার জন্য
তুমি আমার বনবিভাগকে
…….. কইরা ফেলো হন্য তন্য
আমার কিছু ভাল্লাগে না
…….. শুধু তোমার আলকাতরায়
প্রাণের মধ্যে আঠার মতো
…….. কালো কালো গড়াগড়ি
মন মহাশয় উদাস উদাস
…….. ভাঙা কাঠের দোকানপাটে
বইসা বইসা চা খাওয়া আর
…….. তোমার জন্য অপেক্ষাকে;
যে যাই বলুক আমার মতে
…….. এ-সবকিছুই হওয়ার ছিল
আটকে থাকা বাতাস মাত্র
…….. দখিনদিকে বওয়ার ছিল
সেই বাতাসের প্ররোচনা
…….. মাইখা তোমার টিনের ছাদে
আইসা তোমার প্রপেলারে
…….. কল্লা আমার কাইটা ফেলো
কিন্তু ট্রলার, একটা ট্রলার
…….. আলকাতরার গন্ধ এবং
সুরমা সুরমা তীক্ষ্ণ ফলার
…….. রিফ্লেকশন, কোথায় তুমি
জন্ম ও বেড়ে ওঠা ফেনীতে। পেশাগত কারণে ঢাকায় বসবাস। ঢাকার শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি মিডিয়ায় সাহিত্য ও ফিচার সম্পাদক হিসেবে এক দশক কাটিয়ে বর্তমানে থিতু হয়েছেন প্রকাশনা ব্যবসায়। প্রকাশিত বই : ‘ওই অর্থে’ (কবিতা; শুদ্ধস্বর, ২০১৪) ‘সকলই সকল’ (কবিতা; শুদ্ধস্বর, ২০১৫) ‘ইয়োলো ক্যাব’ (গল্প; ঐতিহ্য, ২০১৬), ‘ঘরপলায়নসমূহ’ (আত্মজৈবনিক; ঐতিহ্য, ২০১৭), ‘কেটে যাচ্ছে মালিহা জেরিন’ (কবিতা; ঐতিহ্য, ২০১৮) ‘অবিরাম মদিরা’ (গল্প; বৈভব, ২০১৯)