সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ : এই আলোচনা তাৎক্ষণিকতার দোষে দুষ্ট এবং অতৃপ্ত।
মোটা দাগে বলতে গেলে কাজল শাহনেওয়াজের কবিতার বই আটটি। যদিও তিনি তাঁর কবিতাসমগ্রর ভূমিকায় সাতটি বইয়ের নাম উল্লেখ করেছেন। এখানে অনুল্লেখ্য বইটির নাম ‘সঙ্গীত পরিবারে সতীর আত্মহত্যা’। এ বইটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। এটাকে, পাশাপাশি রিফাত চৌধুরীর সঙ্গে যৌথভাবে ১৯৮৪ সালে প্রকাশিত ‘ছাঁট কাগজের মলাট’কে গণনায় ধরলে তাঁর কবিতার বই নয়টি। বাকি বইগুলো হলো— ‘জলমগ্ন পাঠশালা’, ১৯৮৯, ‘রহস্য খোলার রেঞ্চ’ (১৯৯২), ‘আমার শ্বাসমূল’ (২০০৭), ‘কাঠকয়লায় আঁকা তোমাকে আমার’ (২০০৯), ‘তালগাছ হাতির বাচ্চা’ (২০১১), ‘একটা পুরুষ পেপে গাছের প্রস্তাব’ (২০১৫) ও ‘একটা ব্যাঙনি আমাকে পিঠে চড়িয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে’ (২০১৮)।
‘জলমগ্ন পাঠশালা’য় প্রবেশ করেই শুরুর কয়েকটা কবিতা পড়ে নিলাম। নাম কবিতাসহ আরও যে কবিতাগুলো পড়া হলো তার মধ্যে ‘অবাস্তব’, ‘কেমন করে বলবো’, ‘একদা অজস্র স্বপ্ন তুমি ও দৃশ্যপট’, ‘থাকতো যদি দীর্ঘকায় পাইন’, ‘পদ্যের বই’ ‘সাইবারনেটিক্স’ সহ আরও কিছু কবিতা। বলে রাখা যাক, কাজল শাহনেওয়াজ ছন্দমূর্খ নন। এই কথাটা শুরুতে এ কারণে বলা যে এ নিয়ে পরবর্তীতে আর কথা বলব না। তার একটি প্রমান দিয়ে নেই প্রথমেই। যাতে পাঠকের কৌতুহল আর না থাকে। কারণ কাজল-ম্যাজিক আসলে অন্য জায়গায়। আমি মূলত সেই জায়গাটায় পৌঁছাতে চেষ্টা করব। তো কাজল শাহনেওয়াজের ‘একদা অজস্র স্বপ্ন তুমি ও দৃশ্যপট’ কবিতাটি পুরাপুরি তুলে দিয়ে এ প্রসঙ্গে ইতি টানছি।
তুমি বললে বনতুলশী, আমি বললাম ভুল
মাঠের মাঝে ফুটলো আমার নন্দনেরই ফুল।
মাঠ কুমড়ো নদী ঘেঁষে অবাক করা চোখ
আকাশ থেকে পড়লো বুঝি অপূর্ব আলোক।
সরু ফিতে কার যে চুলের নিরব অসহায়
আমার বুকের রাস্তা দিয়ে অল্প ঘেঁষে যায়।
পথের পাশে এগিয়ে গেলে অশ্বত্থের পাশে
ঈশ্বরেরই নাকের মতো মঠ এগিয়ে হাসে।
সবুজ জলাভূমি হেঁটে বাঁক ফেরালেই দেখি
বনতুলশী ঝোপে তুমি নিরবতার পাখি।
নিজেই বলি বনতুলশী, আবার ভাবি ভুল
মাঠের মাঠে এ যে আমার নন্দনেরই ফুল।
আমরা জানি কবির কন্যার নাম বনতুলশী। এ কবিতাটি পড়ে আমার একটা কৌতুহল হচ্ছে এই যে, এটা কবিকন্যার জন্মের কতবছর আগে লেখা? তাহলে কবির জীবনে যা কিছু ঘটে বা কবি নিজে ঘটান তার একটা আবছা চিত্র ঘটনার অনেক পূর্বেই কি কবিমনে আঁকা হয়ে যায়?
কাজল শাহনেওয়াজের কবিতার ভাষা তাঁর পূর্বজ কবিদের থেকে আলাদা। সত্তর দশকের যে কাব্যভাষা, সেখান থেকে কাজল নিজস্ব এক ভাষা তৈরির চেষ্টা চালিয়েছেন তাঁর প্রথম কবিতার বইটিতে। ন্যারেশনকে পুরোপুরি বাদ না দিলেও লক্ষ্য করা যায় সতন্ত্র একটা স্বর এবং কাব্যভঙ্গি তিনি গড়ে তুলছেন কবিতায়। ‘জলমগ্ন পাঠশালা’ নিয়ে কবি বলেছেন ‘আমি চেষ্টা করলাম অন্যভাবে। উপমার জগত থেকে উপমিতকে বদলে ফেলার চেষ্টা করা হল তখন। দুনিয়া বদলানোর আগে নিজেকে বদলানো। এক ধরণের সংকোচন পদ্ধতি শুরু হল, রূপকল্প ও বাকধারায়। আরেকটা জিনিস হল, একটা সামগ্রিক বিরোধিতা নেমে এল কবিতার ভিতর।’ সত্যি সত্যি আমরা দেখতে পেলাম নতুন ধারার উপমা ব্যবহার করতে। আমরা দেখতে পেলাম তাঁর কবিতার ভেতর ঢুকে যাচ্ছে নানারকম যন্ত্রাংশের উপমা। ধাতুখণ্ডের সাথে কথা থেকে সোনার গাভী এসে হীরের ঘাস খাওয়ার দৃশ্যও দেখতে পেলাম তাঁর কবিতায়। তাঁর কবিতায় ফড়িং পেশী টান করে এসে দাঁড়াচ্ছে। কণ্ঠরোধ করছে এক জোড়া হাইড্রোলিক হাত। আবার তিনি প্যারাফিন ট্রে’র গায়ে পিন দিয়ে গেঁথে ফেলছেন হাত। গভীর নলকূপের পাইপে ফিল্টার বদলানো সময়কার ঝালাই থেকে মাশরুম লিঙ্গের মতো উঠে আসতে দেখছি তাঁর কবিতায়। কী দুর্ধর্ষ!! বাংলা কবিতায় এমন সাহসী চিত্রকল্পের ব্যবহার প্রায় নেই বললেই চলে। কাজল শাহনেওয়াজ হলেন কবিতার সেই তাগড়া ও তেজী মাস্তান, যিনি সচেতনভাবে আলাদা করতে চেয়েছিলেন বাংলা কবিতায় তাঁর স্বরটাকে।
আরেকটি কবিতা পড়া যাক এবার। এ কবিতাটা ‘রহস্য খোলার রেঞ্চ’ বই থেকে।
পুরুষ মানুষের বিভিন্ন রকম সাইজ
তার জুতার সাইজ ৫। মোজা ৯।
প্যান্ট ৩২। অ্যান্ডি ৩৪।
বেল্ট দেড়। এক্সেল সার্ট।
গেঞ্জি ৩৪। লেন্স -১.৭৫।
জুতার রং কালো। মোজা ছাই লাল।
প্যান্ট ধূসর। অ্যান্ডি ডোরা কাটা।
বেল্ট কালচে খয়ের। সার্ট ফেডি পোড়ামাটি।
গেঞ্জি চাঁপা সাদা। চশমা পরীদের সোনালী।
জুতা ও বেল্ট পশুত্বকের। মোজা প্যান্ট
অ্যান্ডি সার্ট ও গেঞ্জি বিভিন্ন ধরনের
কার্পাস তন্তুতে বোনা।
শুধু চশমাটি খনিজ ধাতুর।
মোজা বেল্ট অ্যান্ডি সার্ট ও গেঞ্জি দেশে বানানো
জুতা প্যান্ট ও চশমা বিদেশে বানানো।
এই সমস্ত কিছু তার শরীরে সেলাই কওে ও স্ক্রু বল্টু দিয়ে আটানো।
পুরুষ মানুষের কতো রকমের সাইজ।
যত সাইজ ততো মাত্রা।
এই কবিতা পড়ে আমরা তব্দা খেয়ে যাই। কবিতা পাঠের যে পূর্বজ অভিজ্ঞতা, এই কবিতাটি আমাদেরকে বলছে পূর্ব অভিজ্ঞতাকে ভুলে গিয়ে তার কাছে আসতে। এতোদিন কবিতায় যে আলুলায়িত ন্যারেশন, তরল প্রেমের পদ্য পড়ে আমরা আসছিলাম, কাজল শাহনেওয়াজ সেখানে থামতে বললেন। নতুন একটা ধাক্কা দিয়ে পাঠককেও প্রস্তুত হতে বললেন। এই বইটি নিয়ে তিনি বলছেন, ‘“রহস্য খোলার রেঞ্চ” পর্বে গদ্যকে ব্যবহার করা হয়েছে যথেচ্ছ ভাবে। এই জন্য যে, ততদিনে আমি ঢুকে পড়েছি আমার ব্যথা বেদনার সাথে। উপমার মাত্রা কমে যাবার পর, চিত্রকল্পের জমিনেও হাত পড়ল। ব্যক্তিমাত্রা থেকে লিরিক বিস্তারিত হল যৌথমাত্রায়। … অল্প কয়েকটা কবিতায় নিজেকে কেটে কেটে ঢুকিয়ে দেবার রহস্য যেনবা স্পর্শ করা গেল।’ পাঠক লক্ষ করুন, কবিতার ভাষায় এক ধরণের চেঞ্জ কিন্তু শুরু হয়ে গেছে কা শা-র হাত ধরে। এই বইটি প্রকাশিত হয় ১৯৯২ সালে। ইতোমধ্যে এই সময়কালের ভেতরে ঢুকে পড়েছে আশির দশকের একদল তরুণ কবি কর্তৃক উত্থাপিত সমগ্রবাদী ইশতেহার। কাজল শাহনেওয়াজ সেই দলের না হলেও সময়ের এই অভিঘাত তাঁর কবিতাকেও স্পর্শ করেছিল বলে লক্ষ করা যায়। ইশতেহারগুলো পড়া যাক।
সমগ্রবাদী ইশতেহার
১. প্রচলিত পঙ্কস্রোত থেকে মুক্তি দিতে হবে কবিতাকে।
২. কবিতার শব্দ হবে এমন, যা পাঠকের চেতনায় আছড়ে পড়বে হাতুড়ির মতো; গুঁড়ো গুঁড়ো করে দেবে চৈতন্যের ইট।
৩. আমরা এবং একমাত্র আমরাই নির্মাণ করব শব্দের অতিব্যক্তিক সংরক্ত চরিত্র।
৪. পাঠকের জন্য কবিতা পাঠের অভিজ্ঞতা হবে মৃত্যুযন্¿ণার মতো। কবিতা শাণিত কৃপাণের মতো ঢুকে যাবে পাঠকের মনোরাজ্যে; আর পাঠক আর্ত ঘোড়ার মতো ছুটতে ছুটতে দেশকাল পেরিয়ে পৌঁছে যাবে এক আতীব্র বোধের চূর্ণিত জগতে।
৫. থুতু ছুড়ি তথাকথিত সুন্দর ও কুৎসিতের স্থূল কাব্যবন্দনায়। কেবল আমাদের অভিজ্ঞানে রয়েছে রহস্যময় সংবেদনের আবর্ত।
৬. এইমাত্র জন্মান্তর ঘটেছে প্রাজ্ঞ অশ্বত্থের, তার অনন্ত শিকড় শুষে নেবে প্রতিটি রসকুম্ভের আত্মা আর তার মহাবিস্তৃত প্রশাখার করতল অধিকার করে নেবে সমগ্র বিশ্ব এবং অবিশ্বকে।
৭. চাই চামড়া ছাড়ানো দগদগে আদিমতা আর রক্তের ফেনময় ঘূর্ণিনাচ।
৮. ক্ষেত্রবিশেষে ব্যাকরণ আগ্রাহ্য করে কবিতায় প্রয়োগ করতে হবে বিন্দুবাদী প্রক্রিয়া।
কাজল শাহনেওয়াজের কবিতায় তথাকথিত ‘পঙ্ক স্রোত’ থেকে কবিতাকে মুক্ত করার বাসনার পাশাপাশি সমগ্রবাদী ইশতেহারের প্রায় সমস্ত বৈশিষ্ট্যই লক্ষ করা যায়। এমনকি ব্যাকরণ না মানার প্রবণতাও দেখি আমরা। কা শা-র রয়েছে এক বিশেষ বানানরীতি। ‘সে’ কে নারীর ক্ষেত্রে তিনি লেখেন ‘শে’। ‘পেপে’ চন্দ্রবিন্দুহীন।
‘রহস্য খোলার রেঞ্চ’ প্রকাশের দীর্ঘ পনেরো বছর পর বের হয় কবির পরবর্তী বই ‘আমার শ্বাসমূল’। কবিতাসমগ্রের ভূমিকায় আমরা এ রকম তথ্য পাই। তবে দেখা যায় যে এর ঠিক মাঝামাঝি সময়ে, ১৯৯৮ সালে আরেকটি বই প্রকাশিত হয় যেটার নাম ‘সঙ্গীত পরিবারে সতীর আত্মহত্যা’। ‘রহস্য খোলার রেঞ্চ’ ১৯৯২। মাঝে ৬ বছরের বিরতী। কিন্তু কী এক অজানা কারণে বইটির নাম কবি কবিতাসমগ্রের ভূমিকায় উল্লেখ করেন নাই। তবে কি তিনি তাঁর পরবর্তী বই ‘আমার শ্বাসমূল’-এ পূর্বের বইটি সন্নিবেশিত করেছেন? আমার জানা নাই। এই দীর্ঘ বিরতী প্রসঙ্গে কবির ভাষ্য ‘মাঝখানের এই জীবনটা খুব এন্টি ম্যাজিক। একটা নির্মম কবিতার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল, ভাষা। তারই ইতিহাস।’
উচ্চারণে ত্রুটি ছিল, তবু শে গেয়েছিল ঠিক রবীন্দ্রনাথ।
সঙ্গীত পরিবারে সতীদাহ | আমার শ্বাসমূল
‘কাঠকয়লায় আঁকা তোমাকে আমার’ এ বইটিতে কবির একটা দারুণ রূপান্তর ঘটল। সমকাল তাঁর কবিতায় আসতে শুরু করল নারীর রূপ ধরে।
আমাকে তছনছ করে দিলে আমাকে থমকে দিলে আজ
মাত্র দশ মিনিটের দর্শনে আমার সারাটা দিনকে পথে বসিয়ে দিল
উত্তর থেকে দক্ষিণে বাসে চড়লাম
পূর্ব থেকে পশ্চিমে রিকসায় চড়লাম, হাওয়ায় উড়িয়ে দিলাম হাতপাখা
মনে হচ্ছে আমার দেহের ভিতরে এই গ্রীষ্মের তপ্ত হাওয়া ঢুকে পড়েছে।
দোকানের ছোট ছোট জেনারেটরগুলি আমার ভিতরে চলতে শুরু করেছে
ঢাকা থেকে আমি চলে গেছি সিচুয়ানের ভূমিকম্পে
ছোট ছোট শহরগুলি দেবে যাচ্ছে মাটির নিচে
আমাকে তছনছ করে | কাঠ কয়লায় আঁকা তোমাকে আমার
সমকাল এখানে নারী রূপে আসার পাশাপাশি পূর্বতন ন্যারেটিভ ভঙ্গিটাকে তিনি আবার গ্রহণ করলেন এই পর্বে। এক ধরণের রোমান্টিকতার মোড়কে তিনি রচনা করতে থাকলেন পৃথিবীর কবিতা।
আরও দুয়েকটা কবিতাংশ পড়ি আমরা, আসেন।
জংগলের মধ্যে একটা খেদা
তারমধ্যে ঘোৎঘোৎ করে ভয় পাচ্ছে আমাকে দেখে
দুজন শাদা কালো গাভীন শুয়োর
মানুষের চেয়ে আরও মানুষি ভয়ার্ত করুন কবি চোখে
কালো জনের নাম মুস্তাফা আনোয়ার, শাদা জন আবিদ আজাদ
মনঘর সিরিজ | কখন জলপাই ঝরবে | তালগাছ হাতির বাচ্চা
‘আমার গোফ আছে তাই গোফ রেখেছি
দরকার হলে দেখিয়ে দেবো ভ্রুপাকানো ডাকুলা চেহারা’
গোফ আছে তাই গোফ রেখেছি | তালগাছ হাতির বাচ্চা
কেন কাজল শাহনেওয়াজ কবিতার তাগড়া ও তেজী মাস্তান এবার টের পাচ্ছেন? তিনি এক ব্যাকরণ-ভাঙা তালগাছ। গোফো এবং ড্যামকেয়ার। তাঁর পরবর্তী বইগুলো নিয়ে কাজল শাহনেওয়াজ বলছেন “‘তালগাছ হাতির বাচ্চা’ একটা ছোট বই, কিন্তু ভেতরে ছিল বিষ্ফোরকে ঠাসা। বিদ্রুপ আর ব্যাঁকা কথার শেলাই করা শব্দভঙ্গির ভেতর দিয়ে।
‘একটা পুরুষ পেপে গাছের প্রস্তাব’ এর কবিতাগুলি আমার কবিতা যাত্রার একটা গন্তব্য। বহুস্বর বহু কোলাহল এর। এক নিখিল পুরুষ রাজত্বেও খুঁটিনাটি ঘটিত কবিতা, যা প্রচলিত মাননীয় কাব্য-ভাষা থেকে গলে পরে অতি করুন লোকালয়ের ভাষায় আশ্রয় নেয়, ক্রিয়াপদে ঢুকে পড়ে ঘটনাস্থল। ঘটনাকাল।
সবশেষে যুক্ত হল ‘একটা ব্যাঙনি আমাকে পিঠে চড়িয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে’। স্নায়ু টানটান কবিতা এসেছে দীর্ঘ পংক্তিমালায়, যতদূর টানা যায়, ততখানিই ছিন্নভিন্ন করা দেশ আর কাল। এখানে ঝুরঝুরা, এখানে নাতিদীর্ঘ! এইখানে রক্ত, এইখানে ব্যক্তিগত। ব্যাঁকা দিনের কবিতা।
আমার কাছে কবিতা মানে হলো রহস্য খোলা!
প্রতিদিন কাটার মাঝে থাকতে কেমন লাগে তা বলার জন্যই হয়তো আমার মধ্যে কবিতা জন্মেছিল।”
আগেও বলেছি, কাজল শাহনেওয়াজের কবিতা পড়তে গেলে পাঠককে পূর্বপাঠের অভিজ্ঞতা ভুলে এই কবিতার কাছে আসতে হবে। নইলে প্রচল পাঠক হোঁচট খেতে পারেন। এবং তার বদহজম হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
মেঝে থেকে মেঘ
উদ্বেগ, উদ্বেগ!
মেঝে থেকে | একটা ব্যাঙনি আমাকে পিঠে চড়িয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে
কাঁটা থেকে এভাবেই বুঝি তিনি মুক্তি খুঁজেছেন। সকল উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বুঝি তিনি এভাবেই পঙ্ক্তিতে পঙ্ক্তিতে উড়িয়ে দিয়েছেন ওই ব্যাকরণহীন তালগাছের দিকে।
ও পাঠক, তুমেই কি সেই তালগাছ? হাতির বাচ্চা?
জন্ম ১৯৮৪ সালের ২১ মার্চ বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার ভূয়াপুরে, মামাবাড়িতে। পৈতৃক নিবাস বগুড়া জেলার ধুনটে। চারুকলা বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেছেন। বর্তমানে ঢাকায় থাকেন। প্রকাশিত বই : অব্যক্ত সন্ধির দিকে [কবিতা; চৈতন্য, ২০১৫], এসো বটগাছ [না-কবিতা; চৈতন্য, ২০১৭], শ্রীদেবী অপেরা [কবিতা, তবুও প্রয়াস, কলকাতা, ২০১৯], অবিরাম বিস্মরণ [কবিতা, বৈভব, ২০২৩] এবং সম্পাদিত বই শতবর্ষে সত্যজিৎ [শ্রী, ডিসেম্বর ২০২১]। কলকাতা থেকে পেয়েছেন ‘আদম সম্মাননা-২০১৭’। সম্পাদনা করেন ওয়েবম্যাগাজিন ‘শ্রী’।