দীক্ষা
পথ চলতে আলো লাগে। আমি অন্ধ, আমার লাগে না কিছু।
আমি বাঁশপাতার লণ্ঠন হালকা দোলাতে দোলাতে চলে যাব চীনে, জেনমঠে
কিংবা চীন-চীনান্ত পেরিয়ে আরো দূরের ভূগোলে…
ফুলে-ফুলে উথলে-ওঠা স্নিগ্ধ চেরিগাছের তলায় বসে মৌমাছির গুঞ্জন শুনব
নিষ্ঠ শ্রাবকের মতো, দেশনার ফাঁকে ফাঁকে।
মন পড়ে রইবে দূরদেশে। সাধুর বেতের বাড়ি পড়বে পিঠে,
দাগ ফুটবে সোনালু ফুলের মঞ্জরির মতো শুদ্ধ সালংকার…
দীক্ষা নেব বটে মিতকথনের, কিন্তু
দিনে-দিনে হয়ে উঠব অমিতকথক।
নিরক্ষর হবার সাধনা করতে গিয়ে আমি হয়ে উঠব অক্ষরবহুল
এই হাসাহাসিভরা ভুঁড়িটি ভাসিয়ে গল্প বলে যাব
কখনো প্রেমের ফের কখনো ভাবের…
অথবা ধ্যানের, কিংবা নিবিড়-নিশীথে-ফোটা সুগভীরগন্ধা কোনো কামিনীফুলের।
ঝিরিঝিরি বৃষ্টি ঝরবে মঠের মেঘলা আঙিনায়
ওদিকে অদূরে লালে-লাল-হয়ে-থাকা মাঠে পুড়তে থাকবে ঝাঁজালো মরিচ
সেই তথ্য এসে লাগবে ত্বকে ও ঝিল্লিতে।
আমি সেই মরিচ-পোড়ার গল্প বলব যখন–
ঝাঁজের ঝাপটায় উত্তেজিত হয়ে তেড়ে গিয়ে যুদ্ধে যাবে সবে, এমনকি বৃদ্ধরাও।
যখন প্রেমের গল্প– কমলায় রং ধরতে শুরু করবে সোনাঝরা নরম আলোয়।
আবার যখন গাইব সে-গন্ধকাহিনি, সেই ভেজা-ভেজা রাতজাগা কামিনীফুলের–
ঘ্রাণের উষ্ণতা লেগে গলতে থাকবে মধুফল দেহের ভেতর।
মা
এই ধূলি-ওড়া অপরাহ্ণে,
দূরে, দিগন্তের একেবারে কাছাকাছি
ওই যে খোলা আকাশের নিচে একা শয্যা পেতে শুয়ে আছেন–
তিনি আমার মা।
দূর্বা আর ডেটলের মিশ্র ঢেউয়ে, ঘ্রাণে রচিত সে-শয্যা।
নাকে নল, অক্সিজেন, বাহুতে স্যালাইন, ক্যাথেটার–
এভাবে প্লাস্টিক-পলিথিনের লতায় গুল্মে আস্তে-আস্তে
জড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি।
শয্যা ঘিরে অনেকদূর পর্যন্ত ধোঁয়া-ধোঁয়া
মিথ্যা-মিথ্যা আবহাওয়া।
মনে হলো, বহুকাল পরে যেন গোধূলি নামছে
এইবার কিছু পাখি ও পতঙ্গ
তাদের উচ্ছল প্রগলভতা
অর্বাচীন সুরবোধ আর
অস্পষ্ট বিলাপরীতি নিয়ে
ভয়ে ভয়ে খুঁজছে আশ্রয় ওই প্লাস্টিকের ঝোপঝাড়ে,
দিগন্তের ধার ঘেঁষে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠা প্রাচীন মাতৃছায়ায়।
স্বপ্নভূভাগ
এবার বলো হে ফিরতিপথের নাবিক,
ওহে মাথা-মুড়িয়ে-ফেলা ভিনদেশি কাপ্তান,
সেই দ্বীপের খবর বলো
যেইখানে মানিপ্ল্যান্ট ও সোলার প্ল্যান্টের পাতারা
একযোগে চিয়ার্স-ধ্বনি তুলে পাল্লা দিয়ে
পান করে রোদের শ্যাম্পেন।
কোন প্রজন্মের উদ্দেশে তাদের সেই স্বতঃস্বাস্থ্যপান?
সেই দ্বীপদেশের কথা বলো যেখানে নারীরা
সামান্য একটি কাঠের কুটিরে
ফুটিয়ে তোলে অন্তত বাষট্টি রকমের বাৎসল্য ও প্রীতি।
প্রীতিপরবশ সেইসব কুটিরের কথা বলো, সেই
একটানা মমতালোকের কথা বলে যাও হে কাপ্তান
যে-দেশে নিশুতি রাতে রাধিকাপুরের ঝিয়ারিরা
পথ চলে শিস দিয়ে, তুড়ি বাজাতে বাজাতে।
আর আশপাশের ঝোপঝাড় থেকে
তালে-তালে পাল্টা তুড়ি বাজিয়ে সাড়া দেয়
নবীন উলটকমলের চটপটে পাতা ও পল্লব।
এবং হঠাৎই, টাশ-টাশ করে কথা বলে ওঠে
তরুণী বনবিড়ালিনীর সদ্য-বোল-ফোটা কনিষ্ঠা মেয়েটি।
তাক লাগিয়ে দেয় দ্বীপদেশের অরণ্য অধ্যায়ে।
নাবিক, অবাক সেই ভূভাগের কথা বলো
যেখানকার মাটি উষ্ণ, অপত্যবৎসল,
যেখানে মানুষ সোজা মাটিতে শুয়ে প’ড়ে
শুষে নেয় অষ্টাঙ্গে ভূতাপশক্তি সঞ্জীবন…
দেহ ও মাটিতে যোগাযোগ হয় একদম সরাসরি,
সোজা ও সহজ।
ও ফিরতিপথের নাবিক, ও মাথা-মুড়িয়ে-ফেলা প্রবীণ কাপ্তান,
তুমি সেই প্রসন্ন দ্বীপের কথা বলো, কী কী দেখলে সেখানে?
জলবায়বীয় পরিস্থিতির কথা বলো
প্রাণী ও পতঙ্গদের উল্লোল উচ্ছ্বাস
আর গাছেদের স্বতঃস্ফূর্তির খবর…
আমরাও তো চলেছি উজানে।
চলছি তো চলছিই অনিঃশেষ
উত্তর পেরিয়ে আরো দূর উত্তরোত্তর অঞ্চলে…
উগ্র লোনা বাতাসের সোহাগে, লেহনে
বিকল হয়েছে আমাদের সেক্সট্যান্ট
মর্চে ধরেছে কম্পাসে, দুরবিনে।
চলেছি তবুও।
বহু প্রত্যাশার, বহু সাধ-সাধ্য-সাধনার যোগ্য
ভূভাগ কি এরকমই দূর ও দুর্গম, যোগাযোগাতীত?
জ্বরের ঋতুতে
তখন আমাদের ঋতুবদলের দিন। খোলসত্যাগের কাল। সুস্পষ্ট কোনো সর্বনাশের ভেতর ঢুকে পড়তে চেয়েছিলাম আমরা দুজন। তার আগেই তোমার জ্বর এল। ধস-নামানো জ্বর। তুমি থার্মোমিটারের পারদস্তম্ভ খিমচে ধরে ধরে উঠে যাচ্ছ সরসর করে একশো পাঁচ ছয় সাত আট…ডিগ্রির পর ডিগ্রি পেরিয়ে…সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী তাপের সহগ হয়ে উতরে উঠছ তরতরিয়ে সেইখানে, যেখানে আর কোনো ডিগ্রি নেই, তাপাঙ্ক নেই…তাপের চূড়ান্ত লাস্যমাত্রায় উঠে ঠাস করে ফারেনহাইট ফাটিয়ে বেরিয়ে আসছে থার্মোমিটারের ফুটন্তঘন ফেনিল আগুন।
তীব্র, ধসনামানো জ্বরেও নারীরা ধসে না। হয়তো কিছুটা কদাকার দেখায়, এবং কিছুটা করালী দেবীর মতো। যত রূপসী তত করালিনী, জ্বরে।
একসময় মাথা-ফেটে-যাওয়া থার্মোমিটারকে ব্রুমস্টিক বানিয়ে তাতে চড়ে উধাও উড়ালে অস্পষ্ট অঘটনের দিকে হারিয়ে যাচ্ছ হে তুমি, প্রিয়তরা পিশাচী আমার।
জীবনে প্রথম মুখোমুখি এরকম সরাসরি স্পষ্ট বিপর্যাস…
মিটারের জ্বালাখোঁড়ল থেকে ঝরছে তখনো টগবগ-করে-ফোটা ফোঁটা-ফোঁটা লাভানির্যাস।
ডালিম
যুগের যুগের বহু বিষণ্ণ বিবর্ণ মানুষের দীর্ঘনিশ্বাসের সাথে
নির্গত কার্বন-ডাই-অক্সাইড–
তা-ই থেকে তিলতিল কার্বন কুড়িয়ে
জমাট বাঁধিয়ে, কাষ্ঠীভূত হয়ে
তবে ওই সারি-সারি দিব্যোন্মাদ ডালিমের গাছ।
বৃক্ষের সংগতি যতটুকু, তারও বাইরে গিয়ে
তবেই-না ওই টানটান বেদানাবৃক্ষ, ব্যাকুল বেদনাকুঞ্জ,
মায়াতরু…রূপাঙ্কুর…রূপসনাতন…
পাতার আড়ালে ফাঁকে-ফাঁকে ফলোদয়
থোকা-থোকা গুপ্ত রক্তকুপিত উত্তপ্ত বিস্ফোরণ
রামধনুরঙে, মগ্নছন্দে
ফলিয়ে ফাটিয়ে তোলে ডালে-ডালে লালাভ ডালিম।
বসে আছি ম্রিয়মাণ…বেদনাবৃক্ষের নিচে, পড়ন্ত বেলায়।
সামনে খুলে মেলে-রাখা একটি ডালিমফল, তাতে
প্রভূত বেদানা-দানা, নিবিড় বেদনাকোষ…আর,
বেদানার দানারা তো আর কিছু নয়, জানি–
টলটলে করুণ চোখে রক্তজমা চাবুক-চাহনি…
ভাবি,
এতসব ডালিমকোষের মধ্যে, ঠিক কোন কোষটি রচিত
আমারই সে ন্যুব্জ ব্যর্থ বিষণ্ণ পিতার বাষ্পঠাসা দীর্ঘশ্বাসের কার্বনে!
ঘনীভূত হয়ে ওই বায়ব অঙ্গার, তিলে-তিলে, অনেক বছর ধ’রে…
প্রলাপবচন
নদ এসে উপগত হবে ফের নদীর ওপর
দুই পারে জমে উঠবে কপট কাদার ঘুটঘুটে কেলেংকারি
মাঝখানে চোরাঘূর্ণি চোরাস্রোত
এলোমেলো এলোমেলো বাউরি ভাবনা এসে
পাক খেয়ে ঢুকে পড়বে বৃষ থেকে মিথুনের অধিক্ষেত্রে।
মাকাল ফলের মৃদু মনস্তাপ
করলা-লতার শ্যামলা আক্ষেপ
কোকিলস্য প্রবঞ্চনা, কাকের বাসায় উপঢৌকন
ভরা বিলের ওপর দিয়ে ভেসে আসা ভেজা-ভেজা সুর
হুদহুদ পাখির অস্থিরতা, অসমাপিকার লঘু তঞ্চকতা
একরোখা অশ্বের অস্মিতা, উগ্রবসনা আগুনের চঞ্চল রসনা…
আলগোছে সবকিছু পাশ কেটে গিয়ে
ওইদিকে বর থাকবে কনের বশে
খলনায়কের দাঁতের নিচে পড়বে কট্টরপন্থী কাঁকর
চার্জ করা হবে পশ্চিমের ব্লাস্ট ফার্নেসে
আর ঝাপটা এসে লাগবে পূর্বেরটা থেকে
খামাখা দিওয়ানা হবে রঙিলা বিড়ালিনী
ঘনঘন গণ-হাইপ উঠবে মামুলি ঘটনা ঘিরে এমনি-এমনি
হিস্টিরিয়ায় কাঁপতে থাকবে দেশকাল
সাত সাধু এক হবে, এক শয়তান সাত
দোষযুক্ত আলু নামবে হিমাগারের শ্রোণিচক্র থেকে…
এবং হয়তো আমি একদিন ঠিকই
পড়ো-পড়ো ঘরকে যোগাতে পারব
গাঁট-অলা তিন-বাঁকা শালকাঠের সমর্থন
নিশ্চিহ্নকে দেখাতে পারব কিছু লুপ্তপ্রায় চিহ্নের ইশারা
বিশেষকে কোনো ভ্রান্তিকর নির্বিশেষের আভাস
বেদিশাকে দিশার বিভ্রম…
আর দুম করে লিখে ফেলব এমন এক কবিতা একদিন,
যা পড়ে ভৌতিক সুর তুলবে একসঙ্গে সাধু ও শয়তান
সাপ-আর-অভিশাপে-গড়া মতানৈক্যে-ভরা গামারিকাঠের গিটারে
আর ‘চলে আয়’ বলে স্বয়ং ঈশ্বর টুইট পাঠাবেন দিব্য টুইটারে।
নির্বাসন
অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে আকাশ ঢাকা
গায়ে তার জ্বলে কোটি-কোটি প্ল্যাংক্টন
তারই মাঝে একা একটি শ্যামলা মেঘে
সহসা তোমার মুখের উদ্ভাসন।
হয়তো এখন আকাশ নামছে ঝেঁপে
মেঘ ও মেঘনার ছেদরেখা বরাবরে
ঝাপসা একটি আগুনের ছায়ারূপ
ঝিলিক দিয়েই মিলাচ্ছে অগোচরে।
দূর গ্রহে বসে ভাবছি তোমার কথা
এতটা দূরে যে, ভাবাও যায় না ভালো
ভাবনারা হিম-নিঃসীম ভ্যাকুয়ামে
শোধনে-শোষণে হয়ে যায় অগোছালো।
অথচ এখানে তোমারই শাসন চালু
তোমার নামেই বায়ু হয়ে আমি বই
তোমারই আবেশে বিদ্যুৎ জাগে মেঘে
তোমার রূপেই ময়ূর ফুটেছে ওই।
মধুকর আজ ভুলে গিয়ে মাধুকরী
রূপ জপে তব কায়মনোগুঞ্জনে।
মনন করছে তোমারই বিম্বখানি
ধ্যানে ও শীলনে, স্মরণে, বিস্মরণে।
গন্ধকের এই গন্ধধারিণী গ্রহে
তটস্থ এক বিকল জীবের মনে
ক্ষার, নুন, চুন, অ্যাসিড-বাষ্প ফুঁড়ে
চমকিয়ে যাও থেকে-থেকে, ক্ষণে-ক্ষণে।
নাম
তারপর চুপচাপ চলে যাব কোনো একদিন,
দূরসম্পর্কের সেই মাথানিচু লাজুক আত্মীয়টির মতো,
নিজের নামটিকেই ভুলে ফেলে রেখে, তোমাদের কাছে।
গিয়ে বার্তা পাঠাব— এসেছি তাড়াহুড়া করে,
ভুলে গেছি তাই।
পাঠিয়ে দিয়ো তো নামটিকে।
উত্তর পাব না কোনো।
কিছুদিন অনাথের মতো ঘুরে ফিরে
আমার সে-নামও নিরুদ্দেশ হয়ে যাবে একদিন তোমাদের ছেড়ে।
আমিও বিলীন, আর নামও লুপ্ত, থাকবে শুধু তিলেক শূন্যতা।
আর তা পূরণ করতে এসে যাবে অন্য এক ভাবী বিলুপ্ততা।
আন্তর্জাগতিক
…………ভিন গ্যালাক্সির মেয়ে তুমি, ভিন্ন গ্রহের মেয়ে
…………তোমায় আমি ফুটিয়ে তুলি ইচ্ছাশক্তি দিয়ে।
…………দেখতে কেমন, ভাষা কী তার, কেমন অবয়ব—
…………জড়বুদ্ধি জাহিল আমি, জানি না ওসব।
তার…….মন তৈরি রূপ তৈরি কেমন উপাদানে
………….কল্পভীরু এই কবি আর কীই-বা তার জানে!
………….জানি না তার অনুভূতি, আবেগ, স্বভাবগতি
স্রেফ…..অনুমানেই ফুটিয়ে তুলি, এমন প্রাণবতী!
ছায়াপথ ছাড়িয়ে, দূরের ওই সুরগঙ্গা, তারও ওইপারে, বহির্গোলকে,
শঙ্কু-আকৃতির এক মিটিমিটি আলো-জ্বলা ঘরে ব’সে
ভিন্ন ভুবনের মেয়ে তুমি
নির্নিমেষ চেয়ে আছ হে আমারই জানালার দিকে।
হৃদয়ের নেশা, এক আন্তর্জাগতিক নেশা…
একদিন ঘনিয়ে আসব ঠিকই দুইজনে, পরস্পরে।
তোমার আমার ঘনীভূত অভিকর্ষ দিয়ে
আস্তে-আস্তে বাঁকিয়ে ফেলব দেশকাল
দূর দুই জগতের মাঝখানে যে ব্যাকুল মহাশূন্য,
বেঁকে যাবে তা টানটান অশ্বক্ষুরাকার চুম্বকের মতো।
আলোকবর্ষের ওই মহাদূর দূরত্বই হয়ে যাবে
তুড়ি-মেরে-উড়িয়ে-দেওয়া ঘণ্টা কয়েকের পথ।
আর আমি ঠিকই সাঁতরে পাড়ি দেবো ওইটুকু মহাকাশ।
জ্যামিতির ছুড়ে-দেওয়া এক জেদি অথচ লাজুক স্পর্শকের মতো
তোমাকেই ছুঁয়ে ছুঁয়ে বয়ে যাব আমি
পৃথিবী নামের গ্রহ থেকে ছোটা হেমন্তদিনের হাওয়া।
তৃষ্ণা
তেতে-ওঠা বালুর ওপর দিয়ে হাহাকার করে ধেয়ে আসে
এক মরুসরীসৃপ, মুসাফিরের দিকে।
‘বিষ ঢালব না, ছিঁড়ে খাব না মাংস, শুধু একটু গলা ভেজাব রক্তরসে,
এমন ছাতিফাটা কহর তৃষ্ণায় প্রাণ যায়-যায়, এটুকু রহম করো হে বেদুইন’
ব’লে সেই গনগনে সরীসৃপ ঝাঁপ দিয়ে পড়ে বিদ্যুৎ গতিতে,
গোড়ালি কামড়ে ধরে রক্ত শুষে ভিজিয়ে নেয় জিহ্বা ও গলা,
তারপর নিমেষে উধাও, এক ক্ষমাহীন বিষুবীয় ক্রুদ্ধ মরীচিকার ভেতর।
কবি, লেখক, অনুবাদক। জন্ম ২৯ মে ১৯৫৯, জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলালে। পৈতৃক নিবাস সিরাজগঞ্জ। প্রকৌশলবিদ্যায় স্নাতক, ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর। তড়িৎ ও ইলেকট্রন প্রকৌশলী। বর্তমানে কানাডায় বসবাস। প্রকাশিত বই: পাখিতীর্থদিনে (১৯৯৩, পুনঃপ্রকাশ ২০১৯), নদীকূলে করি বাস (২০০১),
সরাইখানা ও হারানো মানুষ (২০০৬), আঁধারতমা আলোকরূপে তোমায় আমি জানি (২০১১), এই ধীর কমলাপ্রবণ সন্ধ্যায় (২০১৪), দেহ-অতিরিক্ত জ্বর (২০১৫), প্রজাপতি ও জংলি ফুলের উপাখ্যান (২০১৬), প্রসন্ন দ্বীপদেশ (২০১৮), গদ্যগুচ্ছ (২০১৮), শ্রেষ্ঠ কবিতা (২০১৮), পাখপাখালির গান পাগলাঝোরার তান (২০১৯) এবং ঊর্মিকুমার ঘাটে (২০২০)।