শনিবার, নভেম্বর ২৩

স্মৃতির আতর মাখা রঙিন রুমাল : মেঘ অদিতি

0

Eid Motifনগরব্যস্ততা থেকে আড়াল খুঁজলে বিষাদ ছেড়ে ঘন সবুজের দিকে ছুটে চলে মন। মনের আকাশটাও তখন খুব কাছে চলে আসে। আর তাতে আঙুল বুলিয়ে বুলিয়ে ছবি আঁকতে ইচ্ছে করে। সেসময় যার কথা মনে পড়ে, সে আমার ব্যক্তিগত নদী। নাম, ব্রহ্মপুত্র। একরত্তি এক টাউনের বুকের পাশ দিয়ে নিঃশব্দে বয়ে গেছে যে। এখন যদিও নদী লিখতে বসিনি তবু তাকে মনে পড়লে অবসন্নতা কেটে যায়। রোদকুয়াশার জাল কেটে কে যেন আমার কাছে দৌড়ে দৌড়ে আসে। এই তো একটু আগেও সে ছিল, ঝুলকাটা বাহারি জামায়। দু’পাশে দুই বিনুনি দুলিয়ে কী একটা গান গাইছিল। সুরটা চেনা চেনা। চোখ বুজে তার গানের কথাগুলো বুঝতে চাইছিলাম। চোখ খুলতেই দেখি, ওমা, সে তো নেই। কোথায় গেল!

সাফল্যের দিকে ধাবিত হতে হতে বিস্মৃতির এমন এক শিখরে বসে আছি যা থেকে ফিরে আসাটা আজ ভীষণতর কঠিন। গ্লানিতে ডুবে যাই। আর সেই মেয়েটির ফেলে যাওয়া সুরটিকে আঁকড়ে ধরে সমুহ পতন থেকে বাঁচতে চাই।

অনিশ্চিতির ভেতর ঠেলে দিয়ে সে হারিয়ে যায়। মেয়েটার আদল পরিচিত। যে গানটা দুলে দুলে গাইছিল তার মায়াবী সুরটাও খুব পরিচিত অথচ আমি কিছুতেই কথাগুলো মনে করতে পারি না। বিপন্নতা বুঝি এভাবেই গ্রাস করে। ভেতরবাটি তোলপাড় হয়। ভাবি, এই জীবনে যা ফেলতে ফেলতে এসেছি, তার স্বাদ, গন্ধ সবই বুঝি ভুলতে বসেছি। সাফল্যের দিকে ধাবিত হতে হতে বিস্মৃতির এমন এক শিখরে বসে আছি যা থেকে ফিরে আসাটা আজ ভীষণতর কঠিন। গ্লানিতে ডুবে যাই। আর সেই মেয়েটির ফেলে যাওয়া সুরটিকে আঁকড়ে ধরে সমুহ পতন থেকে বাঁচতে চাই। ধীরে একটু একটু করে শান্ত হয়ে আসে চারপাশ। স্থিত হতে থাকে মন। আর তারপরই চারপাশটা কেমন ঝলমল করে ওঠে। পুবের জানলা দিয়ে কখন যেন আবার টুপ করে ঢুকে পড়ে মেয়েটা। সাথে নিয়ে আসে এক অবাক ভোরবেলা।

ঘরের ভেতরটা কেমন সবুজ হয়ে উঠেছে! সে আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। হাত মেলাতেই দেখি, চির কাঙ্ক্ষিত এক উৎসবের আমেজ মেখে ঘরটা হয়ে উঠেছে শৈশবের খেলাঘর। চোখ কচলে এবার তাকে জিজ্ঞেস করি, ও মেয়ে তুমি আমার খেলাঘরে কেন? সে হেসে কুটিকুটি। বলে, বোকা মেয়ে, তুমি তো অনেক বড়ো। তোমার আবার খেলাঘর কী? এসো তোমাকে একটা জিনিস দেখাই। বলে সে বারান্দার দিকে এগোয়। তার চলার পথ অনুসরণ করি। ভ্যবাচেকা মুখে সামনে এগোই। দেখি, বাবা-মা চা খাচ্ছে। পাশে রেকাবিতে রাখা নারকেলের বরফি। পুবের রোদ বারান্দায় লুটিয়ে পড়ে ধুয়ে দিচ্ছে জীবনের যাবতীয় ক্লান্তি। খুব প্রিয় এই দৃশ্যের ভেতর ঢুকে পড়তে পড়তে আচমকা অনুভব করি, আজ ঈদ। রোজার দীর্ঘ এক মাস পর ঈদের সকাল মানে বারান্দাতে বসে বাবা-মার চা পান। পাশে ঘন সবুজ রেকাবিতে বরাবরের মতো মায়ের হাতে করা দুধসাদা নারকেল বরফি। টেবিলের এক কোণে বাবার সিগারেট-লাইটার, মার পানের রেকাবি। এ দৃশ্য রচিত হয়ে আছে যুগযুগ ধরে; যদিও তা বছরে একবারই কেবল দৃশ্যমান হয়। আর এই দৃশ্যের আড়ালে বাজে পণ্ডিত বিলায়েত খাঁর সেতার। মেয়েটা বিনুনি দুলিয়ে আমার বাবার কোলের কাছে বসে। একটা নারকেল বরফি দাঁতে কাটতে গিয়ে কী মনে করে বাবার দিকে বাড়িয়ে দেয়। মিষ্টি করে বলে, ঈদ মুবারক পাপা। বাবা অমনি তাকে কোলে তুলে নিয়ে বলে, ঈদ মুবারক জেট পাখি!

 

আলোকে-উজ্জ্বল জীবনে-চঞ্চল একি আনন্দ-তরঙ্গ
বিপুল তরঙ্গ রে…

 

লেজঝোলা ফিঙের মতো নেচে উঠি আনন্দে। আরে! পাপার জেটপাখিটা আর কেউ নয় গো। এ যে আমি। ছোট্ট আমি! আজ আমার বড্ড খুশির সকাল। আজ ঈদ। উৎসবের আতরগন্ধে ভাসা চরাচর। ইব্রাহিম দরজি তখন বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছেন। মাকে বলছেন, এবার আমাকে বিদায় দিন বিবিসাহিবান। ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েগুলো পথ চেয়ে আছে যে। আমি ফিরলে তবে তারা সেমাই ফিরনি মুখে তুলবে। ইব্রাহিম চাচার ঘন কালো দাড়ি আর দুধসাদা দাঁতের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমার মনে পড়ে যায়, গত ক’দিন ইব্রাহিম চাচা তার সেলাই মেশিনটিকে আমাদের বাড়িতে বসিয়ে টানা সেলাই করে গেছেন। বাড়ির সব্বার নতুন জামা তৈরির দায়িত্ব যে তার। আর সে কারণেই বাড়িতে এই ব্যবস্থা। আমার জামাও তৈরি হচ্ছে। লাল, নীল, সবুজ কত রকম রঙেই যে ভরে উঠছে ববিনের সুতো। আর দিনভর চলছে সেলাই মেশিন।

নতুন জামা তৈরি হওয়া মাত্রই তার কাছ থেকে একেবারে ছিনিয়ে নিয়ে ঢুকিয়ে রাখছি দেরাজের কোণে। ওমা, ঈদের আগেই অন্য কেউ যদি দেখে ফেলে এগুলো তাহলে তো তা পুরানো হয়ে যাবে। মা ইব্রাহিম চাচার হাতে তার পারিশ্রমিক ও কিছু খাবার তুলে দেয়। উনি সালাম জানিয়ে বেরিয়ে যান। যাবার সময় আমার হাতে গুঁজে দিয়ে যান এক মুঠো মেওয়া।

সে ঘরে প্রায়ই উঁকি দিয়ে দেখতে যেতাম আমার কটা জামা হলো। আর আমার দিকে চোখ পড়লে হাত নেড়ে কাছে ডেকে তিনি বলতেন, প্রজাপতির এবার ক’খানা নতুন জামা হবে বল তো? আমিও তো তক্কেতক্কে বাজপাখির শ্যেন দৃষ্টিটি মেলে দিয়ে লক্ষ্য রাখছি। নতুন জামা তৈরি হওয়া মাত্রই তার কাছ থেকে একেবারে ছিনিয়ে নিয়ে ঢুকিয়ে রাখছি দেরাজের কোণে। ওমা, ঈদের আগেই অন্য কেউ যদি দেখে ফেলে এগুলো তাহলে তো তা পুরানো হয়ে যাবে। মা ইব্রাহিম চাচার হাতে তার পারিশ্রমিক ও কিছু খাবার তুলে দেয়। উনি সালাম জানিয়ে বেরিয়ে যান। যাবার সময় আমার হাতে গুঁজে দিয়ে যান এক মুঠো মেওয়া।

চা খাওয়া শেষে ততক্ষণে বাবা উঠে পড়েছে। এবার নামাজের জন্য তৈরি হওয়া। মা নতুন পাঞ্জাবীর গায়ে অল্প আতর মাখায়। টুপি, জায়নামাজ গুছিয়ে রাখে। খাবার ঘর থেকে ছোটো ফুপুর গলা ভেসে আসে, ভাবী, খাবার রেডি। ছোটো ভাইকে নিয়ে চলে এসো। একছুটে খাবার ঘরে দৌড়ে যাই। ঘরে তখন লুচি-পরোটার যুগলবন্দি, খিচুড়ির সুবাস, আর জরদা, ফিরনি, পায়েসের সুগন্ধে ভরে উঠেছে। আমাকে দেখেই ছোটো ফুপু কোলে তুলে নেয়। বলে, তোর পাপা নামাজে বেরিয়ে গেলেই আমরা চটপট গোসল সেরে নেব। নতুন জামা পরব। ঠিক আছে? এখন নাস্তা খেয়ে নে। বাবা আসে পরিপাটি পাঞ্জাবি পাজামায় সজ্জিত হয়ে। কী সুন্দর যে তাকে দেখায়। টেবিলে তখন যোগ দিয়েছে আমার ফুপাত ভাইরা। নানারকম খুশবু বাতাসে মিশে যাচ্ছে, সাথে মিশছে আরবি আতরের সুবাস। রাস্তা থেকে নামাজিদের মৃদু কথাবার্তা ভেসে এলে আবার দৌড়ে বাইরে। দেখি দলবেঁধে লোকজন ঈদগাহর দিকে চলেছে। একটা ছোট্ট ছেলে আমাকে দেখে হাত বাড়িয়ে তার বেলুন দিতে চায়। আর আমি তার সুরমা মাখা চোখের দিকে অবাক চেয়ে থাকি। ঘর থেকে ছোটো ফুপুর গলা ভেসে আসে। কোথায় গেলি আবার জেটপাখি? খেলিও না। আরে নতুন জামা পরবি তো। তারপর তো ঘুরতে যাবি কত কত জায়গায়। একরাশ খুশি আর উত্তেজনাকে সঙ্গী করে আবার ঢুকে পড়ি ভেতরবাড়িতে।

কাছের মসজিদ থেকে ভেসে আসে খুৎবা পাঠের আওয়াজ। গোসল সেরে পরিপাটি আমি খাবার টেবিলে হাজির হলে মা আমাকে বলে, বোনকে নিয়ে পাশের বাসা থেকে ঘুরে আয়। বোন মানে আমার ছোটো ফুপুর মেয়ে তাসকিন। সেও নতুন জামা জুতোয় শৌভিত। লুচি আর সেমাই খাচ্ছে সে মন দিয়ে। ঈদের নামাজ চলাকালীন সময় একমাত্র এই ঈদের সকালেই পায়ে হেঁটে প্রতিবেশীদের বাড়ি ঘোরার স্বাধীনতাটুকু আমরা পাই

কাছের মসজিদ থেকে ভেসে আসে খুৎবা পাঠের আওয়াজ। গোসল সেরে পরিপাটি আমি খাবার টেবিলে হাজির হলে মা আমাকে বলে, বোনকে নিয়ে পাশের বাসা থেকে ঘুরে আয়। বোন মানে আমার ছোটো ফুপুর মেয়ে তাসকিন। সেও নতুন জামা জুতোয় শৌভিত। লুচি আর সেমাই খাচ্ছে সে মন দিয়ে। ঈদের নামাজ চলাকালীন সময় একমাত্র এই ঈদের সকালেই পায়ে হেঁটে প্রতিবেশীদের বাড়ি ঘোরার স্বাধীনতাটুকু আমরা পাই। দু তিন গাল মুখে দিয়ে এক লাফে তাই উঠে পড়ি। তাসকিনের জামার ঝুলে টান দিয়ে বলতে থাকি, চ-অ-অল না, দেরি হয়ে যাচ্ছে যে। এখুনি বেরোতে হবে। নামাজ শেষ হয়ে গেলে মা আর বেরোতে দেবে না। তাসকিন উঠে পড়ে। ফুপু খাবার শেষ করতে বলে দৌড়ে আসে আমাদের দিকে। নতুন জুতো মচমচিয়ে আমরা তখন নিকটতম প্রতিবেশী বরিশালের খালাম্মার বাসায়। খালাম্মার বাড়ির দাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে মাংসের সুঘ্রাণ। আমাদের দেখেই, খালাম্মা শিল্পীকে ডাক দেয়, দ্যাখো কারা এসেছে। খালাম্মার পা ছুঁয়ে সালাম করি। দেখাদেখি তাসকিনও। শিল্পী ঘরে বসে নারকেল পাতার চশমা বানাচ্ছিল। আমরা তিনজন নারকেল পাতার চশমা পরে বাড়ির দাওয়ায় নেমে আসি। রান্নাঘর থেকে খালাম্মা চিৎকার করে বলেন, ও মনু পরবের দিন। তোমরা কিন্তু এইহানে আজ খাইবা। কে শোনে কার কথা। ততক্ষণে আমরা আবার রাস্তায়। আরও কচিকাঁচার দলও সেখানে রয়েছে। রঙিন জামায়, নতুন জুতায়, চুলের ফিতেয় আনন্দ চুইয়ে চুইয়ে নামছে। বেশ কটা বাড়ি ঘুরে যখন আমরা ফিরি তখন বাবা নামাজ থেকে ফিরেছে। এক ছুটে বাবার পা ছুঁই। মার পা ছুঁয়ে সালাম করি। তারপর ফুপু, ফুপা। বারান্দায় ভিড় করে আসে আপনজনদের হাসিমুখ। আরেক দফা চা, নাস্তা চলে। এবার বাবা বলে, তোমরা সবাই রেডি তো? তাহলে চল বেরিয়ে পড়ি। আজ বাবা ড্রাইভ করবে জানি। আর এতেও আমার ভারি আনন্দ। মা আজকের দিনে বাড়িতেই থাকে। নানারকম রান্নার দিকে তার মন। বেরোবার সময় পইপই করে বলে, দুপুরে কিন্তু বাসায় খাবে সবাই। বাবা সবাইকে নিয়ে দাদুদের দু তিন ঘর ঘুরে ফেরার সময় আমার ছোটো মামার বাড়িতে একবার ঢুঁ মারে ফি বছর। মামীর ছোট্ট ছিমছাম বাড়ির লতানে গাছের পাতায় পাতায় বনজ ঘ্রাণ ভাসে। আমাদের দেখেই মামা সাধুর দোকানে ছোট্ট মিষ্টি পানের কথা বলে আসে। মামী নানারকম খাবার পরিবেশন করে। বেলা তখন দুপুর ছুঁইছুঁই। বাড়ি ফিরে খেতে বলেছিল মা। মায়ের কথা আমি ভুলে যাই। সেমাই, কাবাব, পোলাও খিচুড়ির গন্ধে চারদিক ম ম করে। আর মিষ্টি পান! সেও তো অমোঘ আকর্ষণ। বাড়ি ফিরে আবার একটা নতুন জামা পরে আমি আর তাসকিন আয়নায় দাঁড়াই। একে অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকি। মেপে নিতে চাই কার জামাটা কত সুন্দর। দ্বিপ্রাহরিক ভোজনের ডাক ভেসে আসে। আর তখনই মনে পড়ে মার বলা কথাগুলো। এই যা!

গুটিগুটি পায়ে টেবিলের দিকে যেতে যেতে চোখ পড়ে মার দিকে। জড়িপাড় নীল শাড়ি পরে মা খাবারগুলো টেবিলে রাখছে। সকাল থেকেই নানাজন ঈদের আনন্দ বিনিময় করতে এসেছে। সবাইকেই খাবার পরিবেশন করা হয়েছে। যারা এ মুহূর্তের অতিথি তাদেরকেও দুপুরের খাবার না খাইয়ে মা ছাড়বে না। মার নাকে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে। কপালের কাছে ঝুরো চুল কিছু নেমে এসেছে। অপূর্ব দেখাচ্ছে। খাবার টেবিলে বসে আছি মিহির পিসেমশাই। মঞ্জু আর মিতালি দিদি। আমায় ডেকে মিতালি দিদি কাছে টানে, চুল বাঁধিসনি কেন রে। আয় তোর চুল বেঁধে দিই। প্রতি বছর পুজো আর ঈদে মিতালি দিদিরা আর আমরা একে অন্যের উৎসবে সামিল হই।

মামার বাড়িতেই তো খেয়েছি খানিক আগে। এইটুকুনি পেটে আর জায়গাই বা কই কিন্তু মার হাতের কোরমার স্বাদ সেও তো একবার না চাখলেই নয়। গুটিগুটি পায়ে টেবিলের দিকে যেতে যেতে চোখ পড়ে মার দিকে। জড়িপাড় নীল শাড়ি পরে মা খাবারগুলো টেবিলে রাখছে। সকাল থেকেই নানাজন ঈদের আনন্দ বিনিময় করতে এসেছে। সবাইকেই খাবার পরিবেশন করা হয়েছে। যারা এ মুহূর্তের অতিথি তাদেরকেও দুপুরের খাবার না খাইয়ে মা ছাড়বে না। মার নাকে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে। কপালের কাছে ঝুরো চুল কিছু নেমে এসেছে। অপূর্ব দেখাচ্ছে। খাবার টেবিলে বসে আছি মিহির পিসেমশাই। মঞ্জু আর মিতালি দিদি। আমায় ডেকে মিতালি দিদি কাছে টানে, চুল বাঁধিসনি কেন রে। আয় তোর চুল বেঁধে দিই। প্রতি বছর পুজো আর ঈদে মিতালি দিদিরা আর আমরা একে অন্যের উৎসবে সামিল হই। টেবিলে ততক্ষণে যোগ দিয়েছে গগন কাকা। শহীদ কাকা। বাঁধ ভাঙ্গা কথার জোয়ারে ভাসছে খুশির ফোয়ারা। ছোটো ফুপা, বাবা সব্বাইকে নিয়ে খেতে বসে গেছে।

হঠাৎ তাসকিন আমার দিকে উড়িয়ে দেয় রঙিন রেশমি রুমাল। ধরে ফেলার আগে তা গিয়ে পড়ে মিতালি দিদির হাতে। দিদি তাতে বুলিয়ে দেয় স্মৃতির আতর।

এভাবেই আনন্দকে দু’হাতে জড়িয়ে লাল, সবুজ আলোর মতো অনন্তকালের জন্য ভাস্বর হয়ে ওঠে আমাদের শৈশবের ঈদ।

শেয়ার করুন

লেখক পরিচিতি

মেঘ অদিতির জন্ম বাংলাদেশের জামালপুরে। ঢাকায় থাকেন। পেশায় গ্রাফিক ডিজাইনার। তিনি মূলত কবি। পাশাপাশি গল্প এবং গদ্য চর্চা করেন। সম্পদনামণ্ডলির সঙ্গে যুক্ত আছেন ঐহিক নামক বাংলা ভাষাভিত্তিক ওয়েব পত্রিকার। ঐহিক বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।

 

প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা সাতটি। কবিতার বই চারটি আর গল্পের তিনটি।

error: আপনার আবেদন গ্রহণযোগ্য নয় ।