‘সিনেমা প্যারাডাইসো’ মুভিটা দেখতে গিয়ে ফিরে ফিরে মনে পড়ে আমার সিনেমা হলবঞ্চিত শৈশব। আমাদের নব্বই দশক, বাসায় সাদাকালো টিভির বাস্তব আর স্বপ্নে রঙিন সিনেমা হল। কুমিল্লা শহরে নামকরা হল বলতে ‘দীপিকা’। তো, একদিন এক সদাশয় আত্মীয় ঘোষণা দিলেন আমাদের পরিবারের সবাইকে সেখানে নিয়ে সিনেমা দেখাবেন। আমাদের ভাইবোনদের আর পায় কে! উতরোল উল্লাসে রিকশায় করে, ভুল হল-কল্পনার পঙ্খিরাজে চড়ে সিনেমা হলের দুয়ারে গিয়ে দেখি বিদ্যুৎ বিভাগ যেন চুক্তি করেছে সেই রাতে শহরজুড়ে আর ইলেকট্রিসিটি না আসার। হায়, এভাবেই আমার প্রথম হলে বসে সিনেমা দেখার আকুতি আহত হলো। বুঝলাম জীবন ফিল্মি আবার ভীষণ খটখটে বাস্তবেরও নাম। সে যাই হোক, কান্দিরপাড় কলেজরোডে একটা বন্ধ সিনেমা হলের সাইনবোর্ড আবিষ্কার করলাম একদিন পথে চলে যেতে যেতে, ‘লিবার্টি সিনেমা হল।’ উপরে বুনো ঘাসের জঙ্গল আর নিচে হোসিয়ারি পণ্যের পসরা দেখে ভাবতেও কষ্ট হতো এখানে একদা মুক্তি পেয়েছে জহির রায়হানের ‘কাচের দেয়াল’। একটা বন্ধ সিনেমা হল মানে যেন কত রূপালি হাসিকান্নার ধূসর সমাধি৷ শহরের নিষিদ্ধ গন্তব্য ছিল ‘রূপকথা হল৷ ‘ ইঁচড়েপাকা ছেলেপেলে সে-ই হলে খাট্টামিঠা সিনেমা কতটা দেখতে পেত জানি না, তবে আমরা যারা সেখানে যাওয়ার মতো সাহসী ছিলাম না তাদের বুকের ভেতরে সেখানের আলোছায়ার কথা চিন্তা করে ভাবনা কত যে লতাপাতার জন্ম দিতো! পাতার বাঁশি বাজিয়েই যেন আমাদের শহরে এলো একদল দেবদূত৷ তারা টাউন হল বা শিল্পকলার খোলা মাঠে প্রজেক্টর-সহযোগে দেখাতে লাগল একের পর এক সিনেমা— সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’, বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ‘চরাচর’, তারেক মাসুদের ‘মুক্তির গান’, ‘মুক্তির কথা’। এর আগে তো পাড়াপ্রতিবেশী মিলে ভিসিআরে কখনও দেখেছি ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ কিংবা ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ কিন্তু সেটা সিনেমা হলের যোগ্য বিকল্প ছিল না মোটেও৷ ওই যে, শহরের শিল্পমনা অগ্রজেরা খোলা মাঠে যে সিনেমা-সম্ভোগের ব্যবস্থা করলেন, তাতেই যেন ঘোলের স্বাদ দুধে মিটল৷ মনে হলো, এই তো আমার উন্মুক্ত সিনেমা হল৷ দরদালানের হলের কী দরকার তবে! কিন্তু দরকার তো আছে৷ সিনেমার ভেতরে যে বিস্তার তা হলের চারদেয়ালকে দর্শকের সদ্যজাত দৃষ্টির বিভায় চুরমার করতে চায়। উন্মুক্ত অঙ্গনে সে চ্যালেঞ্জ থাকে না।
এর আগে তো পাড়াপ্রতিবেশী মিলে ভিসিআরে কখনও দেখেছি ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ কিংবা ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ কিন্তু সেটা সিনেমা হলের যোগ্য বিকল্প ছিল না মোটেও৷
তারপর উচ্চশিক্ষার চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমিও মফস্বল টাউন থেকে চলে আসি আজদাহা মহানগর ছাপিয়ে সবুজ জাহাঙ্গীরনগরে৷ মনে আছে সেখানে গিয়ে ক্লাস শুরুর আগেই বন্ধুবান্ধব মিলেঝুলে ঢাকার ‘বলাকা হল’-এ দেখতে আসি তারেক মাসুদের ‘মাটির ময়না’। শুনলাম বলাকা হলের নাম নাকি ভাষাবিজ্ঞানী অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল হাইয়ের দেওয়া। তাঁর প্রিয় রবীন্দ্রনাথের কবিতাবইয়ের নামটি তিনি হলের মালিকপক্ষকে দিয়েছিলেন। আমি হলের ভেতর ‘মাটির ময়না’ দেখি৷ সিনেমাঘরের সীমায় বসে অনুভব করি আনুর অশেষ উড়াল। সোনার পিঞ্জরায় মৃত্তিকার ময়নার হাঁসফাঁস নিজের ভেতরেই টের পাই ভীষণ। সিনেমা-শেষে হল থেকে বেরিয়ে এসে সামনের নীলক্ষেত আমার কাছে প্রতিভাত হয় খোয়াবনগর হিসেবে। সিনেমা হলের শক্তি অনুধাবনে আসে।
তারপর জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাস তো বিরতিহীন চলচ্চিত্র উৎসবের আখড়া। নিজেও কিছুদিন যুক্ত থাকি ‘চলচ্চিত্র আন্দোলন’ বলে একটি সংগঠনে। জাঈদ আজিজ, মাহবুব ইরানের মতো বোদ্ধারা বইপত্র দেন। আমি বুঝে না বুঝে পড়ি আইজেনস্টাইনের তত্ত্ব, সত্যজিৎ রায়ের ‘বিষয় চলচ্চিত্র’, সুরমা ঘটকের ‘ঋত্বিক’। ক্যাম্পাস থেকে দূরে সেনা অডিটোরিয়ামে একদিন একটা চলতি সিনেমা দেখে আসি আর বুঝি এইবার আর প্রথাগত সিনেমা হলে বসে বদ্ধতা ভাংচুরে চলবে না। কারণ ক্যাম্পাসের জহির রায়হান মিলনায়তন ছিল সিনেমা হলের চেয়ে একটু ব্যতিক্রম। অবয়বেও, প্রদর্শনেও। এখানেই যেন আমার সিনেমা হলের অভাব দূর করে কতো কে! ‘রোমান হলিডে’ থেকে ‘ম্যালেনা’, ‘অশনি সংকেত’ থেকে ‘যুক্তি তক্কো গপ্পো’, ‘এ ওয়াক ইন দ্য ক্লাউড’ থেকে ‘ব্রোকব্যাক মাউন্টেন।’ ঘরে বসে একা একা সিনেমা দেখার চেয়ে একসঙ্গে সিনেমা দেখার আনন্দ হলো প্রতিটি দৃশ্যের অভিঘাতে পাশের সিটে বসা মানুষটির অভিব্যক্তির দৃশ্য অনুভবে; কেবলি দৃশ্যের জন্ম হয় আর আমি ধ্রুপদী আর সমকালীন চলচ্চিত্রিক ক্ষুধায় ক্যাম্পাসের ফিল্ম-সোসাইটি করা ভাইদের রুমে নিশি-ঢুঁ মারি৷ জনসমক্ষে প্রদর্শনের আগে তাঁরা রাত-জেগে সিনেমা দেখত। তাঁদের সদাশয়তায় দেখেছি কত কী! অকালগত অমিতদার রুমে বসে দেখা ‘পিয়ানো টিচার’ দেখার অভিজ্ঞতা ভুলি কী করে! আলফ্রেড ইয়েলনিকের নোবেল পাওয়া বইটি নিয়ে তখন জোর আলোচনা; যেটা হয়, বই বা সিনেমার আলোচিত অধ্যায় পড়া বা দেখার মোহমায়া কেউ-ই তো ত্যাগ করতে পারে না৷ তো, ‘পিয়ানো টিচার’ প্রতিটি দৃশ্যে আমাদের ভেতরের কাতর, লিপ্সু, খঞ্জ, বোবা আর ধ্বংসপ্রবণ সত্তাকে দেখাতে থাকে যে আমি ফের বুঝি সিনেমার শক্তি। সিনেমাগল্পের মূল বইয়ের গুরুত্ব নিশ্চয়ই অনেক তবে দৃশ্যের প্রত্যক্ষ-অভিজ্ঞান যখন আবদুল মান্নান সৈয়দের গল্পের মতো বলে ‘চলো যাই পরোক্ষে’ তখন সিনেমাকে আলাদা মার্কস দিতেই হয়।
জাহাঙ্গীরনগর থেকে ঢাকায় এসে সিনেমা দেখেছি হলের বিকল্প নানা ঘরে; প্রেসক্লাব মিলনায়তনে কিংবা কমিউনিস্ট পার্টি অফিসের মুক্তি ভবনে। মনে আছে ভরসকালে ‘মোটরসাইকেল ডায়েরি’ কিংবা অন্ধকার সন্ধ্যায় ‘ফাদার অফ এ সোলজার’ দেখার স্মৃতি। মনে হচ্ছে আরে, পল্টনে না তো; আমি তো চে গুয়ে ভারার সাথে আমি তো ঢুকে যাচ্ছি বলিভিয়ার জঙ্গলে অথবা রাশিয়ার কোনো বিপজ্জনক সমর-সীমান্তে।
‘মাটির ময়না’ দেখার অভিজ্ঞতা নিয়ে আমার একটা এলেবেলে লেখা তারেক মাসুদের মনোযোগ পেলে তিনি আমাকে ব্রিটিশ কাউন্সিলে ‘অন্তর্যাত্রা’ দেখার আমন্ত্রণ জানান।
‘মাটির ময়না’ দেখার অভিজ্ঞতা নিয়ে আমার একটা এলেবেলে লেখা তারেক মাসুদের মনোযোগ পেলে তিনি আমাকে ব্রিটিশ কাউন্সিলে ‘অন্তর্যাত্রা’ দেখার আমন্ত্রণ জানান। চরিত্রদের ইনার জার্নিটা ব্রিটিশ কাউন্সিল মিলনায়তনের মায়াবী শাদাটে পরিসরের সাথে যেন অন্তর্লীন ছিল।
ক্যাম্পাসের রুমমেট বড়ভাই ইফতি ভাই একবার নিয়ে গেলেন তার পুরান ঢাকার নবাবপুরের বাসায়। দেখালেন ‘মানসী সিনেমা হল’ ;যার নাম নাকি স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের দেয়া। আমি ভাবি, বিরল ভাগ্যবান বটে রবি ঠাকুর। এক শহরে তার বইয়ের নামে দুই দুইটা হল ‘বলাকা’, ‘মানসী’!
টিএসসিতে ‘অন্তহীন’ আর পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে ‘সাঁঝবাতির রূপকথারা’ দেখার অভিজ্ঞতাই বা ভুলি কেমনে?
দ্বিতীয়টি দেখেছি মূল উপন্যাসের লেখক জয় গোস্বামীর উপস্থিতিতে৷ সিনেমটা দেখতে দেখতে গাছের সাথে, পাখির সাথে, নদীর সাথে কথা বলার অলীক সব রং পেয়েছি যেন শাহবাগের দঙ্গলে বসেও। মেঘে মেঘে রোদের বেলা বাড়ে। পড়াশোনা শেষে সিনেমা হলের চেয়ে জীবন বেশি ঢুকে পড়ে বাস্তবের অপরিসর মেসবাড়িতে। কী আশ্চর্য, একটা ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হয় মিরপুর সাড়ে এগারোতে, পূরবী সিনেমা হলের কাছে৷ বাসা নিতে হয় কারওয়ানবাজারে পূর্ণিমা হলের পাশে কিংবা রায়েরবাজার মুক্তি সিনেমা হলের পেছনে। মনে আছে, রুমমেট শামীম-শাকিলসহ মুক্তি হলে কোনো চালু ঢালিউডি ছবির ম্যাটিনি বা নাইট শো দেখতে গিয়ে মশার অভিনয় হজম করে চলে আসতে হয়েছিল। যেমনটা, যমুনা ব্লকবাস্টারে দর্শকবিরল এক শো-শেষে খালি হলে এসির দাপটে কাবু হতে হয়েছিল।
বসুন্ধরায় স্টার সিনেপ্লেক্সে হুমায়ূন আহমেদের ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ বা নাসিরউদ্দীন ইউসুফের ‘গেরিলা’ দেখে বের হওয়ার পর বাইরের গোটা ঢাকাকে ঘেটুপুত্রের চোখের পানিতে ছাওয়া হাওরাঞ্চল কিংবা মুক্তিসেনানী বিলকিসের রক্তাক্ত-লড়াকু বাংলা বলে প্রতিভাত হয়েছে আমার কাছে।
জাতীয় জাদুঘর, সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে সৈয়দ আখতারুজ্জান ভাই আর আমি সদ্য ভুটান-ফেরত আগ্রহে ভুটানি চলচ্চিত্র উৎসবে প্রবেশ করি৷ দেখি ‘ফুটবল’ সিনেমাখানি। ভিক্ষু-আবাস, মুণ্ডিতমস্তক ছেলের দল আর নিজেদের টেলিভিশনে বিশ্বকাপ ফুটবল দেখার আনন্দবেদনার মঠ-কাব্যে নিজেদেরও ঠিক আবিষ্কার করতে পারি। উপরন্তু মনে হচ্ছিল স্ক্রিনের অবয়ব ভেদ করে ঢুকে পড়ছি কিছুকাল আগে ঘুরে আসা পাহাড় ও জলের জঙ্গলে। শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে ঋতুপর্ণ ঘোষ উৎসবে ‘আবহমান’, ‘দহন’, ‘দোসর’, ‘বাড়িওয়ালি’ দেখি আর নিঃসঙ্গ বাড়িওয়ালির বেদনায় বোধ করি আমাদের আত্মার ভেতরের আবহমান উদ্বাস্তু এলাকা। শিল্পকলাতেই সুচিত্রা সেনের চলে যাওয়ার পর সুচিত্রা ফেস্টিভ্যালে হিন্দি ‘দেবদাস’ দেখতে মানুষ যখন মেঝেতে বসে পড়ল তখন আবার বোঝা গেল সিনেমার শক্তি আর সম্মোহন।
সিনেমার শক্তি আরও ভালভাবে টের পেতে আমরা ক’জন শাহবাগে পিজির পেছনের আড্ডাধারী- সিনেমা লাইনেরই লোক হারুন ভাই, সেজুল ভাই, যোজন, ইমতিয়াজ হাসান শাহরিয়ারসহ আরও ক’জন মিলে একবার একটা ফেসবুক গ্রুপ খুলি; ‘হলে গিয়ে সিনেমা দেখা আন্দোলন ‘। দু’এক ছুটির দিন ঢাকার মধুমতি হলের মতিঝিল-তীর থেকে ‘অভিসার হল’ পর্যন্ত চলে আমাদের আন্দোলন-অভিসার। আন্দোলনের উত্তেজনা বেশিদিন স্থায়ী হয় না তবে একটা প্রত্যক্ষ আফসোস তৈরি হয়– আমাদের এত সুন্দর হলগুলোতে আমরা কেন যে সিনেমা দেখতে যাই না!
ভারতের গুজরাট থেকে কলকাতার দক্ষিণে হলে বসে দেখা হয়েছে সিনেমা কতক৷ সুশান্ত সিং রাজপুতের ‘ব্যোমকেশ বক্সী’ হলে দেখে যখন রমানাথ মজুমদার স্ট্রিটের মহল হোটেলে ঢুকে শুনলাম এখানের এঁদো-অন্ধকারে সেই সিনেমার একটুখানি শুটিং হয়েছে তখন যতটা আলোড়িত হয়েছি, তারও বেশি আন্দোলিত হয়েছি যখন জানলাম এই ভবনের একটা কক্ষেই একসময় আবাস ছিল ব্যোমকেশ-স্রষ্টা শরদিন্দুর।
হুমায়ূন আহমেদের ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ বা নাসিরউদ্দীন ইউসুফের ‘গেরিলা’ দেখে বের হওয়ার পর বাইরের গোটা ঢাকাকে ঘেটুপুত্রের চোখের পানিতে ছাওয়া হাওরাঞ্চল কিংবা মুক্তিসেনানী বিলকিসের রক্তাক্ত-লড়াকু বাংলা বলে প্রতিভাত হয়েছে আমার কাছে।
আমার সিনেমা হল আবার অনেকের বাসাবাড়িও। গ্রীন রোডে বিক্রমাদিত্য বাবুর চিলেকোঠা-ঘেঁষা বাসা আর তার ল্যাপটপও হয়ে ওঠে আমার অনুপম সিনেমা হল। ‘লাঞ্চবক্স’ থেকে ‘ভূতের ভবিষ্যৎ’, ‘শ্যাডোস অব টাইম থেকে ‘আহা’ অথবা ‘ফড়িং’ থেকে ‘নো ওয়ান কিলড জেসিকা’— কত সিনেমার সূত্রে কত জায়গায় যে চলে গেছি, তার ইয়ত্তা নেই কোনো। মজার কথা হলো বাবুর ল্যাপটপে দেখা হয়েছে ‘ল্যাপটপ’ সিনেমাও৷ যেমন বন্ধু শুভ্র সুমনের ল্যাপটপে শেষ বড়দিনে অঞ্জন দত্তের ‘বড়দিন’ নামের ছোটো দৈর্ঘ্যের সিনেমা দেখা হয়েছে। ছোট্ট ল্যাপটপটি নিজেই যেন গায় গান মুনমুন সেন বা অঞ্জনের স্বরে ‘আজ বড়দিন…’। কলেজবন্ধু উরুজ সুদূর ফিনল্যান্ড থেকে নানা সিনেমার লিঙ্ক, ট্রেলার বা সাজেশন পাঠায় মেসেঞ্জারে। সে-মোতাবেক দেখা হয় কত সিনেমা! প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে চ্যাটবক্স এভাবে হয়ে ওঠে এক অপার্থিব সিনেমাঘর।
আর এখন যে টুকরো লেখা লিখছি এই মুঠোফোনে তার অতি ক্ষুদ্র চৌকোণে যখনই দেখছি ‘বেহুলা’ থেকে ‘কিল মাই ডার্লিংস’; তখন সেটাই হয়ে উঠছে আমার সিনেমা হল।
সেই যে কুমিল্লার লিবার্টি হল; তার বন্ধ দরোজায় ধাক্কা দিতে দিতে এই আমিই যেন ‘সিনেমা প্যারাডাইসো’-র সেই সুদূর বিদেশি-বালক, যে তার স্মৃতির শহরের হারিয়ে যাওয়া হলের সিনেমার ফিতেগুলো জীবনভর জড়ো করতে থাকে, কোনো এক ভবিষ্যত কাট-শটে তার নিজের জীবন-চলচ্চিত্রটা ধীরেসুস্থে বসে দেখবে বলে।
জন্ম ২১ ডিসেম্বর, ১৯৮৪ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর, বাংলা একাডেমিতে কর্মরত। কবিতার বই আছে বেশ কিছু। লেখালেখির সূত্রে পেয়েছেন কয়েকটি পুরস্কার ও সম্মাননা, ঘুরেছেন বিশ্বের বেশ কিছু দেশ। piasmajid@yahoo.com