বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১

ইঁদারার আত্মকথা : হাবিবুল্লাহ ফাহাদ

0

Motif-01‘জল নেবে গো, জল?
ও মা! জল কোথায়? এ যে হাজামজা কুয়ো!’

সারা দিন এমনই প্রলাপ বকে ইঁদারা। পাগল হলে যা হয়। যেমন বকে মানুষ পাগল হলে। ওরও হয়েছে তাই। একসময় কী কম ছিল তার? সবই ছিল। যৌবনে জল ছিল। রূপ ছিল। কী বিশাল বপু ছিল! এখন আর কী, লোকে দেখে ভড়কে যেত। কী দানব একটা! খাইখাই করছে। যা পাবে খেয়ে নেবে তাই। অবশ্য ওই সময়ের ভড়কে যাওয়া মানুষগুলো এখন আর কেউ নেই। কবেই মিলিয়ে গেছে পঞ্চভূতে। মানুষ কী অত দিন বাঁচে! বাঁচে না। ইঁদারা বাঁচে। এই যেমন বেঁচে আছে। সব হারিয়ে। পাগল হয়ে।

ইঁদারাটির যৌবন দেখা মানুষেরা না থাকলেও, গল্প আছে। মুখে মুখে। প্রপিতামহ থেকে পিতামহ, তার থেকে বাবা। পূর্ব প্রজন্ম থেকে, পাহাড়ের ঢাল বেয়ে জলপ্রপাতের মতো গড়িয়ে গড়িয়ে, সেই গল্প এসে পড়েছে উত্তরপ্রজন্মে।

বুড়ো বয়সের গল্প কি আর কেউ শোনে? শুনতে চায়? বলতেও চায় না। দাদুরা যে নাতি-নাতনিদের গল্প শোনান তাও তো বয়সকালের, কী পালোয়ান ছিলেন তার গল্প। ডানপিটে ছেলেবেলার। আর যৌবনের সাহসী সব গল্প। জরাগ্রস্ত সময়ের গল্প কি কেউ বলে? তবে ইঁদারার যৌবনের গল্পটা শোনার আগে তার হালফিলের কথাটা শুনে নেওয়া যাক একবার।

ইঁদারার বয়স কত হবে? অনুমান করা যায় বটগাছটা দেখে। গাছটার বয়স কত আর, দেড়শ বছর হবে হয়তো। ইঁদারাটা তারও আগের। কোথাও তো লেখা নেই! অত আগের কথা কি লেখা থাকে? জনশ্রুতি আছে।

গায়ে চাদর জড়ানো ছবিটার মতো। পুষ্টঝুরিগুলো জড়িয়ে আছে গাছের গায়ে। তার মাঝে উঁকি দিচ্ছে কাশফুলের মতো শুভ্র পরগাছা। বৃষ্টি-জলে ধুয়ে গেছে পায়ের তলার মাটি। বুড়ো শরীরের শিরার মতো জেগেছে শিকড়গুলো।

পানবটের ওধারে তার অর্ধেক বয়সের অশ্বত্থ। দুজনে হাত ধরাধরি করে আছে। সবুজ পত্র-পল্লবের ছাউনি তুলেছে ইঁদারার ওপর। আচমকা তাকালে শতবর্ষী গাছটাকে মনে হয় বিদ্যাসাগর। গায়ে চাদর জড়ানো ছবিটার মতো। পুষ্টঝুরিগুলো জড়িয়ে আছে গাছের গায়ে। তার মাঝে উঁকি দিচ্ছে কাশফুলের মতো শুভ্র পরগাছা। বৃষ্টি-জলে ধুয়ে গেছে পায়ের তলার মাটি। বুড়ো শরীরের শিরার মতো জেগেছে শিকড়গুলো। যেন পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছে অনেকগুলো অজগরের ছানা। গাছ দুটোর বয়স যে কম হয়নি, শিকড় দেখে তা সহজে অনুমেয়।

ইঁদারার গা ঘেঁষেই এক লম্বা আমগাছ। বট-অশ্বত্থ-আম বিরিক্ষির ঘনপাতার ছায়ায় বেশ আরামেই আছে সে। পাতার ফাঁক গলে সূর্যের আলো এসে তিরের মতো বিঁধে গায়ে। মন্দ লাগে না। বরং তিনশ বছরের পুরোনো শরীরের স্যাঁতস্যাঁতে ঘায়ে পড়ে মসৃণ প্রলেপ। ইঁদারাটাকে এক দেখায় পরিত্যক্ত বলেই ধরে নেবে যে কেউ। সাইফারই বটে। তবে জরাগ্রস্ত মানুষের মতো তারও যে এখনো প্রাণ আছে, বুঝতে হলে আসতে হবে কাছে। দেখা যাবে পলেস্তারা খসে পড়া দেওয়াল। ভাঙা ইটের ক্ষয়িষ্ণু বেষ্টনি। মনে হবে, ফোকলা দাঁতে হাসছে কোনো বুড়ো। তার গায়ে মখমলের মতো শ্যাওলার চাদর। দগদগে ঘাঁয়ের মতো পোড়া ইটের ফাঁকে ফাঁকে কালো পিঁপড়ের দঙ্গল। মাটিতে দেবে যাচ্ছে বিশালাকৃতির গোল অবয়ব। বট-অশ্বত্থের ডালে বসা পাখিদের মলে ছিটছিট নকশা তোলা মুখটায়। টকটকে লাল বটফল পাখির ঠোঁট লেগে পড়ে থেতলে গেছে কোথাও। তাতে ভিড় করছে লালচে-কালো পিঁপড়েরা। অন্নের সন্ধানে।

কাছে গিয়ে উঁকি দিলে, চোখ খুব বেশি দূর যায় না। সুযোগও নেই। আবর্জনার স্তূপে ইঁদারার পেট ফুলে ঢোল। এবার গলা ভরার অপেক্ষা। তার মাঝে উঁকি দিচ্ছে কাককালো জল। পুবের দেওয়ালে একটা চারকোনা গ্রানাইট পাথর। শিংয়ের মতো বেরিয়ে আছে। দাঁত বের করে আছে দেওয়ালের ইটগুলোও। নিখুঁত হাতে শ্যাওলার আস্তরণে মোড়া। বুড়ো মানুষের শরীরে, হাতে-পায়ে কড়া পড়লে যেমন হয়। তেমনি কোথাও ঢোল কলমির সংসার। হালকা বেগুনি ফুল তিরতির করে দুলছে মৃদুমন্দ হাওয়ায়। দেখে বিশ্বাস হবে না, এর জলে বেঁচে উঠত মরা। এও কি সম্ভব? বিশ্বাস হওয়ার মতো?

সেইসব দিন মনে করে ইঁদারার আফসোস হয় খুব। মানুষের বিশ্বাস এত ঠুনকো! মনে মনে বলে। কেউ দেখেনি, তাতে কী? সে তো দিব্যি আছে। যত পাগলই হোক, সে কি ভুলে গেছে সেইসব কথা? পক্ষাঘাতে নির্জীব প্রৌঢ়ের মতো পড়ে থেকে সেইসব স্মৃতি হাতড়ে বেড়ায়। নিজেকেই নিজের গল্প শোনায়। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে দুলতে থাকা মানুষকে গল্প বলে কী হবে? কার এত দায় পড়েছে, নিজের খেয়ে বোনের মোষ তাড়ায়? কে বিশ্বাস করল, কে করল না, তাতে তারও কিছু আসে যায় না। অবিশ্বাসী কে কখন রে-রে বলে তেড়ে আসে! তার চেয়ে নিজের কাছে নিজের গল্প বলাই নিরাপদ। খুনখুনে বুড়ো ইঁদারার গলাটাও বেশ মিনমিনে। কাছে গিয়ে নিবিড়ভাবে কান পাতলে সে গল্প আপনিও শুনতে পারেন। খুকখুক করে কাশতে কাশতে বহু বছর আগের সেই স্মৃতি-পুঁথি খুলে বসে ইঁদারাটা।

মাছের পিঠে করে আগমন। সঙ্গে ছিলেন তার শিষ্যরা। সেই সুলতানের সঙ্গে লড়াই হয় পরশুরামের। লড়াই কী, সেই তুমুল যুদ্ধ। সেই স্মৃতি মনে করে কেঁপে ওঠে ইঁদারার গলা। মৃতদের রক্তে লাল হয়েছিল তার জল। কী যে রক্ত! বিকৃত দেহ।

পরশুরাম এক রাজা ছিল। পুণ্ড্রবর্ধনে ছিল রাজত্ব। সেখানে মাছের পিঠে চড়ে করতোয়ায় ভেসে এসেছিলেন এক ধর্মপ্রচারক। বাল্‌খ দেশ থেকে। তার শাহ্ সুলতানের নামের পরে যুক্ত হয় মাহিসাওয়ার। হেতু, মাছের পিঠে করে আগমন। সঙ্গে ছিলেন তার শিষ্যরা। সেই সুলতানের সঙ্গে লড়াই হয় পরশুরামের। লড়াই কী, সেই তুমুল যুদ্ধ। সেই স্মৃতি মনে করে কেঁপে ওঠে ইঁদারার গলা। মৃতদের রক্তে লাল হয়েছিল তার জল। কী যে রক্ত! বিকৃত দেহ। মুণ্ডু আছে, ধর নেই। ধর আছে, মুণ্ডু নেই। হাত আছে, পা নেই। পা আছে, হাত নেই। সেই রণক্ষেত্রের কথা বলতে গিয়ে হিম হয়ে আসে বুড়ো ইঁদারাটার শিরদাঁড়া। গায়ের শ্যাওলাগুলো কাঁটা দিয়ে ওঠে। ‘লাখে লাখে সৈন্য মরে কাতারে কাতার…।’

ইঁদারাটা হাঁপ ছেড়ে ফের বলতে থাকে, ‘মাহিসাওয়ারের সঙ্গে নরসিংহ ওরফে পরশুরামের যুদ্ধের প্রধান অস্ত্রই ছিলাম আমি। ভাবছ একটা কুয়ো কী করে অস্ত্র হয়? পানি ছাড়া কী দিতে পারে সে? পারে, ক্ষমতা থাকলে পারে। কী এক অলৌকিক ক্ষমতা ছিল আমার। আমার তো নয়, নরসিংহের। মন্ত্রবলে আমার জলকে করেছিল মৃত্যুঞ্জয়ী সুধা। বীর নরসিংহের জীবনে যুদ্ধে পরাজয় বলে কিছু ছিল না। কাতারে কাতার সৈন্য মারা পড়লেও শূন্য হয়নি তার বাহিনী। এক একটি নিষ্প্রাণ, ছিন্ন দেহ আমার গভীর জলে ফেলে দিলেই হতো। শীতল জলে পুনর্জীবন পেয়ে উঠে আসত ওপরে।’

দেওয়ালের গায়ে ছোটো ছোটো পাদানিগুলো দেখিয়ে ইঁদারা বলতে থাকে, ‘এই যে ধাপগুলো দেখছ, একটার পর একটা ধাপ গিয়ে ঠেকেছে আমার তলানিতে। কী যৌবন ছিল আমার! ডাকাবুকো টাগরা জোয়ানগুলোর ক্ষতবিক্ষত দেহ মন্ত্রজলে ফের আগের মতো রূপ পেত ফিরে।’

ভরা যৌবনের সেই দিনগুলোর কথা বলতে বলতে আপ্লুত হয়ে পড়ে সে। শৌর্য-বীর্যের স্মৃতিগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠলে সেই প্রাণস্পন্দন ফিরে পায় যেন। বয়সের ভারে কাতর, মলিন ইট-সুরকির বুকটা টান করতে গিয়ে কঁকিয়ে ওঠে জরাগ্রস্ত শরীরের কলকব্জা। ‘সকাল-বিকাল কত প্রণতি পেতাম আমি। কত যত্ন-আত্তি।’ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, ‘শত শত প্রহরী থাকত আমার নিরাপত্তায়। কেউ যেন একফোঁটা জলও স্পর্শ করতে না পারে। নরসিংহের অনুমতি ছাড়া। তখন ঘনপাতার এত বড়ো সংসার ছিল না। আকাশ মুখ দেখত আমার টলটলে জলে। এভাবে দেখতে দেখতে একসময় অন্তরীক্ষের সঙ্গে প্রেম হলে গেল আমার। কত রং যে ছিল ওর। কখনো নীল অপরাজিতা। কখনো কাশফুলের মতো ধবধবে। মেঘমেদুর বিরহী আকাশকে দেখলেই ধক উঠত বুকের ভেতর। মনটা বেজায় খারাপ থাকত সারা দিন। জোছনা ধোয়া একেকটা রাত ছিল অবিচ্ছেদ্য মিলনের। প্রেমময় সেই দিনগুলো মনে পড়লে এখনো রোমাঞ্চিত হই। প্রেম—সে তো এমনই!’

অসম প্রণয়ের গতিই হয়েছিল এই প্রেমের। অন্তরীক্ষের সঙ্গে বন্ধনটা টুটে যায় ধীরে ধীরে। শোভিত পত্রপল্লবের বিস্তার বাধা হয়ে দাঁড়ায় ইঁদারা আর আকাশের মাঝে। আরও ছিল একজন। শীলাদেবী। পরশুরামের বোন। বোনের জন্য কিছুতেই বারণ ছিল না পরশুরামের। প্রতিদিন ভোরের আলো ফুটলে ইঁদারার দেখা হতো তার সঙ্গে। ওর শীতল জলে কাটত তন্দ্রার ক্লান্তি। কী চেকনাই তার রূপ। কাচের মতো চকচকে চোখ। পাতলা ঠোঁট। সুডৌল বাহু। হাতের আঙুলগুলো কচি সজনের মতো লকলকে। কান্তি দেহ। ভরা বুকে থিতু অঙ্গসৌষ্ঠব। মিছরি-ভাঙা দাঁতগুলো বেরিয়ে পড়ত হাসলে। কী গভীর মায়া ছিল তার চাহনিতে। একটা সময় ইঁদারার রাত-ভোর হতো শীলাদেবীর প্রতীক্ষায়। শীলারও যেন হয়েছিল তাই। প্রেমে পড়েছিল ইঁদারার। সেই সুরটিও কেটে গেল হঠাৎ।

সেসব বিরহে আজও কাতর প্রায় শুষ্ক, শূন্য ইঁদারা। এলোমেলো পাঁজরের হাড়গুলোর ভেতরে এখনো হারানো প্রণয়, বিরহের দাঁগ কেটে আছে। খানিক থেমে থেকে দম নেয় সে। ফের পরশুরাম আর মাহিসাওয়ারের যুদ্ধে ফিরে যায়। ‘মাহিসাওয়ার একসময় হতাশ হয়ে পড়লেন। ক্লান্তি চলে এলো মনে। কী করে সম্ভব! এত এত সৈন্য কোথায় পাচ্ছে পরশুরাম? তলোয়ারের আঘাতে আঘাতে শতছিন্ন দেহগুলো ফের ফিরেওবা আসছে কীভাবে? সুলুক সন্ধানে জানতে পারেন আমার মন্ত্রজলের কথা। কীভাবে মৃত সৈন্যরা জীবিত হয়ে ফিরে আসছিল, বেরিয়ে আসে সেই গোপন। তারপর—।’ বলতে গিয়ে থেমে যায় সে। না নিজের যৌবন হারানোর সেই ক্ষণ মনে করতে চায় না সে। সেই থেকে তার বার্ধক্যের পথে যাত্রা ধীরে ধীরে।

সুলুক সন্ধানে জানতে পারেন আমার মন্ত্রজলের কথা। কীভাবে মৃত সৈন্যরা জীবিত হয়ে ফিরে আসছিল, বেরিয়ে আসে সেই গোপন। তারপর—।’ বলতে গিয়ে থেমে যায় সে। না নিজের যৌবন হারানোর সেই ক্ষণ মনে করতে চায় না সে।

ভেতরের দেওয়ালের একপ্রান্তে উঁকি দিচ্ছে কচি ডুমুর। সবুজ পাতার বুকে হলুদে দাগকাটা শিরাগুলো কাঁপে তিরতির। খেয়াল করলে দেখা যায়, সেখানে বাসা বেঁধেছে একটা জোড়া টুনটুনি দম্পতি। চিরিৎ চিরিৎ ডানার শব্দ। যেন পাখি দাম্পতি কান পেতেছিল ইঁদারার আত্মকথায়। বাকিটা শোনার জন্য উদ্‌গ্রীব।

মাহিসাওয়ার চিলের ঠোঁটে গো-মাংসের একটা টুকরো দিয়ে চালান করে দেন ইঁদারার দিকে। চিলটা ঠিক উড়ে এসে টলটলে জলের বুকে ফেলে যায় মাংসটা। আবর্জনা, ইট-সুরকিতে যতটা ভরে গেছে ইঁদারা, ততটাই ছিল জল। টুকরোটা ঠোঁট থেকে ছেড়ে দিলে কেবল টুপুস করে একটা শব্দ হলো মাত্র। ধীরে ধীরে ভরা জলের বপুটা শুকিয়ে কাঠ হতে থাকল। সেই থেকে আর কোনো শব এখানটায় ফেললে জীবন ফিরে পেত না। অসাড় জিয়ৎ কুণ্ডু রূপ নিল পরিত্যক্ত ভাগাড়ে। প্রধান অস্ত্র হারিয়ে একটা সময় নিঃস্ব হয়ে পড়লেন পুণ্ড্রের রাজা নরসিংহ। একে একে ধরাশায়ী হলো সব সৈন্য। মারা পড়লেন তিনিও। কাকের কলরবের মতো চার দিকে ছড়িয়ে পড়ল রাজার প্রয়াণের খবর।

ঘটনা এখানেই শেষ নয়। হাজামজা জিয়ৎ কুণ্ডের মনের গভীরে দগদগে হয়ে আছে আরও একটি বেদনা। যে কথা সে কখনো বলেনি কাউকে। আজও বলে না মুখ ফুটে। কিন্তু বেদনাঅশ্রু বলে দেয় তার মনের খবর। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে বিহ্বল হয়ে পড়ে বোন শীলাদেবী। কী করবে, শত্রুর হাতে ধরা দিবে? তাতে কি প্রাণ বাঁচবে তার? যে প্রাসাদের ইটপাথরে, রাজ্যের ধূলিকণায়, জলে-স্থলে, গাছ-বিরিক্ষিতে পরশুরামের স্পর্শ-স্মৃতি সেই বেদখল ভূখণ্ডে কী করে বাঁচবে সে! তার চেয়ে করতোয়ার অতল জলে খুঁজে নিয়েছে মুক্তি। সেই থেকে করতোয়ার ঘাটটিও একটা নাম পেয়েছে, শীলাদেবীর ঘাট। ইঁদারার মনে এখনো সেই ব্যথা, দগদগে ঘাঁ হয়ে আছে। তার টলটলে জলের আয়নায় শীলাদেবীর যে মুখটি আঁকা ছিল, তা এখন কেবলই স্মৃতি। সেই স্মৃতি মনে পড়তেই ভেতরটা হু হু করে ওঠে তার। তখনই হয়তো প্রলাপ বকে, ‘জল নেবে গো, জল? ও মা জল কোথায়?…।’

শেয়ার করুন

লেখক পরিচিতি

গল্পকার। জন্ম ১৯৮৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর। পেশায় সাংবাদিক। ঢাকা টাইমস ও সাপ্তাহিক এই সময় পত্রিকার প্রধান প্রতিবেদক। প্রকাশিত উপন্যাস : ‘জলপাই রঙের দিনরাত’, ‘বসন্ত রোদন’। গল্পগ্রন্থ : ‘বজলু জানে লাশের পরিচয়’, ‘দরজার ওপাশে ভোর’, ‘দানামাঝির বউ’। জীবনীগ্রন্থ: ‘আমাদের বঙ্গবন্ধু’। সম্পাদনা : ‘তিন যোদ্ধার মুখোমুখি’, ‘আলাপের সুবাসে সনজীদা খাতুন’, ‘স্বকৃত নোমানের কথামালা : গহিনের দাগ’।

error: আপনার আবেদন গ্রহণযোগ্য নয় ।