সদ্য বৈভব থেকে আমাদের (রাজীব দত্ত ও মঈন উদ্দিন) একটা মেটাফিকশন পাবলিশ হয়। সেই ফিকশন নিয়ে নানান রকম কৌতুহল থাকতে পারে রিডারদের, বা, যারা লিখলেন বইটা, তাদের নিয়াও নানা আগ্রহ তৈরি হইতে পারে (নাও হইতে পারে) তো সেই সম্ভাবনারে মাথায় (এবং বালিশে) রেখে এবং মূলত বইয়ের বিজ্ঞাপনের তাগিদে আমরা দুইজন দুইজনের একটা ইন্টারভিউ নিই। ফেসবুকের ইনবক্সে। সেটারই ফরমাল প্রকাশ এইখানে।
নবাগত ‘শ্রী’ এবং তার সম্পাদক বিধান সাহাকে ধন্যবাদ ‘রিউমার’ বইটার পাশে থাকার জন্য। এবং পাঠকদেরও ধন্যবাদ। এই সকল প্রশ্নের বাইরে আরো কোনো কোনো প্রশ্ন উদয় হইলে আপনারা পাবলিশার বৈভব বা রাইটারদের ইনবক্স করতে পারেন। কিছু প্রশ্ন একত্র হইলে পরে, অইগুলার সউত্তরও আবার পাবলিশ হইতে পারে।
রাজীব দত্ত: কথা শুরু করি, না? তুমি কী প্ল্যান করে ফিকশন লিখতে আসলা? তুমি তো কবিতা লিখতা জানতাম। মানে তোমার ‘রসুন চাষের ঘটনাবলী (২০২০-এ প্রকাশিত। বুকিশ পাবলিকেশন থেকে)’ দিয়েও কথা শুরু করতে পারো…
মঈন উদ্দিন: এমনে কবিতার ভিতরে তো ফিকশন থেকে শুরু করে সায়েন্টিফিক আর্টিকেলও পাবলিশ পসিবল, এইটা ডিপেন্ড করে রাইটারের ইনটেনশনের উপরে। আবার ফিকশনেও তো পোয়েট্রি থাকে। আমরা যে লাইফটা লিড করতেছি, এইটাতে তো একই সাথে ফিজিক্যাল-স্পিরিচুয়াল দুইটাই মিশে থাকে। তো, যখন এগুলা লিটারেচারে আসে— কখনো পোয়েট্রিতে আসে, কখনো ফিকশনে আসে, সেইম জিনিসগুলাই। সো, কবিতায় যে জিনিসগুলা আমি বলা স্টার্ট করছি, পরে ফিকশনে (রসুন চাষের ঘটনাবলীতে) এসেও সেইম জিনিসগুলাই বলা যায় কি না দেখতে চাইছি। তো, লিটারেচারে এখন আসলে আলাদা করে কিছু নাই, সবকিছু মিক্সড হয়ে গেছে। অডিওভিজুয়াল এসেই এই জনরাগুলার মাঝখানের লাইনটা ফেইড করে দিছে। পড়তে গেলেও আমার তাই মনে হয়, যেমন ধরেন, আপনার কবিতার বই সাবানের বনকে কখনো ফিকশন মনে হয়, আবার আপনার কোনো একটা ড্রয়িংকে পোয়েট্রি বললে কোনো ভুল হয় না। এগুলা আসলে ব্লেন্ডেড ফর্মে থাকে সব। আপনার কি মনে হয় এই ব্যাপারে? আপনার আঁকা ড্রয়িং আর কবিতা লেখার প্রসেসে কি ধরনের ডিফারেন্স আপনি পান? দুইটা সেইম ড্রাইভ থেকে আসে না?
রাজীব দত্ত: সেইম ড্রাইভ থেকে বলতে কি, আমার তো মনে হয় মানুষের অনেকগুলা সত্তা। একেকটা সত্তা একেকভাবে এক্সপ্লোর করে আসলে। মানে করতে পারে নাও করতে পারে। কারণ মিডিয়াম একটা ইমপোর্টেন্ট বিষয়। শব্দের উপর কন্ট্রোল তুলনামূলক ইজি অনেক সময়। কিন্তু ড্রইংয়ে এটা অনেক সময় ইজি হয় না। এটা আমারে নিয়ে আমার অবজারভেশন। এটাকে কন্ট্রোল না বলে, অন্যকিছু বলা গেলে বেটার হইতো। যেমন ধরো, লেখায় আমার, বিশেষ করে কবিতায়, আরো বিশেষ করে বললে ‘সাবানের বন’ (কবিতার বই, ২০১৫) বইটাতে, আমি পলিটিক্স অইভাবে ডিল করি নাই। কিন্তু আমার আঁকাতে বেশ স্বতঃস্ফূর্তভাবে পলিটিক্স চলে আসে, স্যাটায়ারও। যেইটা সাবানের বনে মে বি নাই। তবে এই রিউমারে আমি আমার আঁকার যে ফানি সাইডটা, অইটা এখানে এপ্লাই করছি।
মিডিয়ামের সাথে এক্সপ্লোর করার যে বিষয়টা বলতেছিলাম, অইটার ভালো উদাহরণ মে বি রবীন্দ্রনাথের পেইন্টিং। এত র’ এন্ড রাফ রবীন্দ্রনাথ আমরা তার গান বা লেখালেখিতে পাবো না। এটার সাথে মিডিয়ামেরও একটা রিলেশন থাকতে পারে বলে আমার ধারণা। তুমি কেম্নে দেখতেছো বিষয়টা?
মঈন উদ্দিন: হিউম্যানের অনেকগুলা সত্তা থাকে এইটা ঠিক বলছেন… ড্রয়িংয়ে কন্ট্রোল যেমন কম করা যায়, ফ্রিডমও তো থাকে বেশি। হ্যাঁ, মিডিয়ামের দিকে তাকালে টেক্সট বেশ ভারি ফিল্টার, আপনাকে অনেক কিছু চেপে যেতে হইতে পারে টেক্সটে। টেক্সট অনেকটা চোখের দিকে তাকাই কথা বলার মতো ব্যাপার। রবীন্দ্রনাথের ভিতরেও যে ফিজিক্যাল ইন্সটিংক্ট ছিল, এইটা পেইন্টিংয়ে উনি কন্ট্রোল হারা হয়ে র’ এন্ড রাফ আকারে প্রকাশ করতে বাধ্য হইছেন। কিন্তু টেক্সটে যে এইসব বলা উচিত না, বললে বরং অস্বস্তি হয়, সেটা নিয়ে রিউমারে একটা স্যাটায়ার আছে এরকম: ‘মাসিক রিলেটেড বইলা ইনফরমেশনটা মাসিমাকে জানাইতে পর্দা হিসেবে টেক্সট ফরম্যাটে যাইতে হয়, ফলত লোপামুদ্রাকে একটা চিরকূট লিখতে হয় দ্রুত।…. মাসিমা ট্রানজিস্টারে খুলনা থিকা রিলে কইরা শোনানো দীপালি তালুকদারের কণ্ঠে অনুরোধের আসরের গান শুনতে থাকলে সাডেনলি গায়ে একটা চিরকূট আইসা পড়ে।…’ তো, টিনেজারদের মধ্যে দেখবেন, প্রপোজাল হিসাবে লাভ লেটারের ফরম্যাটটা তারা ইউজ করে, তাও আবার দূর থেকে ছুঁড়ে মারলে তারা একদম সেইফ ভাবে, যদিও তারা নিজের ওইভাবে আইডেন্টিটি লুকাতেও চায় না। আমার তো মনে হয় রবীন্দ্রনাথ এখন ফেসবুক ইউজ করলে, রবীন্দ্রপাঠের ক্লু অনেকটা চেঞ্জ হয়ে যাইতো। তো এখন হলো টেক্সট, ইমেজ, কালার, সাউন্ড, লাইভ স্ট্রিমিং এসবের জমানা। এখন টেক্সটের ফিল্টারিং ফিচারটা আর থাকে না। আলাদা করে রাজনৈতিক বা প্রেমের কবিতা লেখাটা এখন বেশ ফানি, এগুলাতো এখন যেকোনো ফর্মে ব্লেন্ডেড অবস্থায় থাকতে পারে। কবিতা-ফিকশন-সায়েন্টিফিক আর্টিকেল সব এক মিডিয়ামে ডিজল্ভ হয়ে যায় এখন। আপনার করা কিছু ছোট ছোট এনিমেশন দেখছিলাম ফেসবুকে, জিআইএফ (GIF) ফাইলে, আমার তো মনে হইছে যেকোনো কবিতা বা প্রবন্ধের চাইতে ওগুলা আরো বেশি সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট ফেলতে পারে। আপনার ড্রয়িংয়ের যে ফানি সাইডটা বা পলিটিকস, রিউমারে এসব আনতে কেমন লাগলো? কোনো প্রবলেম ফেইস করতে হইছে?
রাজীব দত্ত: পলিটিকস কি আসছে রিউমারে? আসলেও আমরা যেইভাবে পলিটিকসরে বুঝতে অভ্যস্ত অইরকম কিছু মে বি আসে নাই। তাই পলিটিক্যাল লোকজন হতাশ হইতে পারেন, আই হোপ। এইটারে যে হোপ বলতেছি এইটা অবশ্যই পলিটিক্যাল। অই রকম সমস্যা ফেস করি নাই। ফ্লুয়েন্টলিই আসছে সব। তুমি কী বলবা, রিউমার কি পলিটিক্যাল?
মঈন উদ্দিন: রিউমারকে আমার কাছে ওইরকম পলিটিক্যাল কিছু মনে হয় নাই। তো, এই যে বলতেছি এইটা পলিটিক্যাল না, এইটা বলাটাও তো বড় একটা পলিটিকস। দেখবেন পলিটিশিয়ানরা আলাপ শুরুর আগে ফার্স্টেই বলে নেয় যে ‘আমি কিন্তু উনাদের ওই নোংরা পলিটিকসের ভিতরে নাই, এগ্লা বুঝিও না।’ তো, রিডাররা যদি পলিটিকসের সাথে রিলেট করতে চায়, সেটা তো পসিবল, যেভাবে হোক মিলাই দেয়া যায়। আপনার ড্রয়িংয়ের ভিতর ইলজিক্যাল কিছু বিষয় আসে, স্যাটায়ার আসে, রিউমারে যে টেক্সটগুলা ইউজ করছেন ওগুলাতেও। যে কেউ চাইলে পলিটিকসে রিলেট করতে পারবে, ইলজিক্যাল হলেও এই যে শার্প একটা নক থাকে, চোখে লাগে। এইটা আপনি কনশাসলি করেন?
রাজীব দত্ত: সবটাতো আর কনশাসলি হয় না। কিছুটা মে বি আনকনশাসনেস থেকেও আসে। যেকোনো কাজ মে বি এমন। তোমার কী অবস্থা? তোমার এই যে উদ্ভট প্রকল্প, এই প্রজেক্ট পছন্দ হইল কেন? মানে এই দিকে আগাইলা কেন? মাজেজা কী এইটার?
মঈন উদ্দিন: নিজের টাইম পর্যন্ত সব লেখক-আর্টিস্টের লেখা-জোখা আর আর্ট এইসব দেখার পর সবটাই যদি কারো ভালো লাগে, সবটাই সে একসেপ্ট করে ফেলে, তখন সে আর কিছু না লেখাই ভালো। কিন্তু যখন আপনি অন্যদের লেখা, ড্যায়ালেক্ট বা আর্টকে একসেপ্ট করতে পারেন না, তখন নিজেরেই লিখতে বসতে হয়। নিজে কিছু করার দরকার পড়ে। তো, এর মধ্যে আমার চোখে পড়া অন্যদের কোনো কাজ ওইভাবে একসেপটেবল মনে না হওয়ায় আমি আমার নিজেরটা লেখার ড্রাইভ ফিল করি। এখন দেখা গেল লেখার পর আপনার কাছে এইটা উদ্ভট কিসিমের কিছু একটা দাঁড়াল। এটা তো হয়। তাহলে হয়তো পরের জেনারেশন সেটা একসেপ্ট করে কি না আমাকে দেখতে হবে। আপনার নিজের কাজকে আপনার টাইমের জেনারেশনের চোখে এলিয়েন বলে এভয়েড করার কোনো বিষয় ফিল করছেন কখনো আপনি?
রাজীব দত্ত: আমার জেনারেশনের কারো কারো কাছে এলিয়েন বলে এভয়েড করার প্রবণতা আছে অবশ্য। আমিও এভয়েড করি অনেক সময়। তবে এলিয়েন বলে মনে হইলে, আমার কিউরিসিটি বাড়ে বেশিরভাগ সময়। আমার বিরক্ত লাগে বেশি, বেশি বেশি মানুষ ফিল হইলে। তবে মানুষ হইলে যে, ভেরিয়েশন থাকে না এমন না। মানুষে মানুষেও ভেরিয়েশন থাকে মেলা। এবং অনেক সময় এটাও ইন্টারেস্টিংও যে হয় না, তা নয়। তবে বেশি বেশি রেগুলার মানুষী অভ্যাসের মাঝে ইন্টারেস্টিং যে সব ডিফারেন্স, বেশিরভাগ সময় তা আড়াল হয়েই থাকে। যেখানে প্রমিনেন্ট হয়, ভালোই লাগে তা। আর্টে যেমন, লেখালেখিতেও। যেমন ধরো, রাইসু আর মনজুরুল ইসলামের উপন্যাসটা উদ্ভট বা অ্যাবসার্ড কিছু তা না। কিন্তু অইটা ইন্টারেস্টিং ছিল, এইটা মে বি তারা যে সিরিয়াস হইতে চান নাই অই কারণে। আমাদের এখানে একটা চল আছে, পড়ে বা দেখে যেন রিলায়েভল ফিল হয়। উনারা এটা ডিনাই করতে পারছেন। তোমার কী মনে হয়? রিউমার তো তুমিই স্টার্ট করছো প্রথমে, তারপর আমি। তোমার কি এই সোকল্ড সিরিয়াসনেসের প্রতি কোনো বিরক্তি ছিল বা অনাসক্তি? অনেকে কিন্তু এটারে একরকম চমক দেখানো মনে করে। একরকম স্টান্টবাজি টাইপের…
মঈন উদ্দিন: চমক দেখানো বা স্টান্টবাজি এগুলা লেখা বা আর্টের টুলস। লেখার ভিতর অন্যান্য আরো অনেক কিছুর সাথেও এইটা থাকতে পারে। কেউ যদি আপনার স্টান্টবাজিকে এড্রেস করে, একিউজ করে, তাইলে উনার ক্রিটিকেরও এইটা একপ্রকার স্টান্টবাজি, এটা টুলস উনার। ক্রিটিক করার টুলস। লেখায় এরকম হাজারটা টুল থাকে।
সিরিয়াসনেস তেমন ভালো কিছু না আমার মনে হয়। মানুষ অতিরিক্ত সিরিয়াস হইতে গিয়া দুনিয়াটাই বরবাদ করে দিচ্ছে, আজকে দুনিয়ার কি এক বাজে দশা দেখছেন! অতিরিক্ত রিয়েলিটির ভিতর থাকতে গিয়া তারা এক ফানি সিচুয়েশন তৈরি করল, পাবলিকরা। কী একটা সিরিয়াস অবস্থা দেখেন! ওইদিন দেখলাম বাজারে একটা কোলবালিশের দোকান, শত শত কোলবালিশ মানুষ কিনতে দোকানে ভীড় করতেছে। শিমুল তুলার খোঁজ করতেছে সবাই। তো দেখেন, মানুষ ঘুমানোর জন্য সিরিয়াস হয়ে কি এক দশায় পড়ছে। এগুলা রিউমারে বলতে গেলে ওই দোকানে বালিশের জন্য যাওয়া সবাই আপনার দিকে তেরছা এংগেলে তাকিয়ে বলবে আপনি স্টান্টবাজি করতেছেন। আপনি চমক দেখাইতে আসছেন ফিকশনে। আপনার কাছে স্টান্টবাজি মনে হইছে রিউমারের কন্টেন্ট?
রাজীব দত্ত: আমি তো বইটার কো রাইটার। আমার স্টান্টবাজি না মনে হওয়াই স্বাভাবিক। তবে কন্টেন্টের স্টান্টবাজি বা সিরিয়াসনেস নিয়ে তোমার কথা ভালো লাগছে। তোমার আগের বইটাতে ড্রয়িং ছিল। এইটাতেও আছে। ড্রয়িং করতে কেমন লাগে তোমার? করতে করতে কী মনে হয়? বা করার পর? হুট করে আঁকা শুরু করছো? নাকি আগে থেকেই?
মঈন উদ্দিন: আঁকাআঁকির প্রতি আগ্রহ তো সঙ্গদোষে হইছে। চারুকলাতে রেগুলার যাইতাম, একটা ফেসিনেশন তৈরি হইছিল তখন। তবে আঁকাআঁকিতে অন্যান্য কিছুর তুলনায় সাব-কনশাস মাইন্ডের ইফেক্টটা একটু বেশি থাকে, পোয়েট্রির মতো। যা রেগুলার ভাবি, আঁকাআঁকিতে ওগুলা বেশ প্রমিনেন্টভাবেই আসতে থাকে। বইতে আঁকাআঁকি থাকায় সুবিধা হলো, যারা বইটা পড়তে চান না, তারা জাস্ট উল্টায়া পাল্টায়া দেখে ফেলে রাখতে পারল। বই পড়তে হবে এমন না। জাস্ট দেখার জন্যও বই নাড়েচাড়ে অনেকে। বইয়ের আউটলুক, ডিজাইন বা এর ভিতরের আঁকাআঁকিও তো ভাষা। টেক্সট ছাড়া আরো অনেক ফর্মেই ল্যাঙ্গুয়েজ থাকে। বইয়ের পাতায় ড্রয়িং দেখলে টেক্সটের মোটিভই চেঞ্জ হয়ে যায়, রিডিং আরো ইনটেন্স হয় অনেক সময়। বই তো একপ্রকার ভিজুয়াল আর্টই। যেমন রিউমারে আপনার করা কাজগুলা, রিউমারের প্রচ্ছদের দিকেও তাকালেও। রিউমারে করা আপনার একটা টেক্সট ইমেজ আছে, উভয়পার্শ্বস্থ কবর অজ্ঞাত শিশুর, এটা তো খুব শার্প একটা আঘাত করে মাইন্ডে। প্রচ্ছদ নিয়ে বলেন কিছু, কিভাবে আসলো আইডিয়া?
রাজীব দত্ত: প্রচ্ছদ নিয়ে তোমার পুশ করাটা জরুরি ছিল। পুশ বলতে, তোমার বারবার বলা, ‘প্রচ্ছদটা আপনি করছেন এইটা যাতে না মনে হয়।’ মানে আমার রেগুলার কাজের মতোন যাতে না হয়। তো এ কারণে বেশ কয়েকটা রিজেক্টও হইসে। তুমি করছো, আমিও করছি। আমার প্রথমে প্লান ছিল, বেশ পুরানা বা এমন একটা ইমেজ করবো যেটার মধ্যে একটা স্টোরি আছে। স্টোরি বলতে, কিছু নিউজ আছে দেখবা, চোখে পড়লে পুরাটা পড়তে ইচ্ছা হয়। তো খুঁজতেছিলাম এমন ইমেজ। আবার ইমেজ পাইলেও তা যেন মোটামুটি বড় করতে পারি, প্রিন্টে সমস্যা হবে না। আমাদের তো ব্লার ইমেজে সমস্যা নাই, বা নষ্ট ইমেজে সমস্যা নাই। কিন্তু অই ব্লার হওয়া যেন, ছবির যে গল্পের কথা বলতেছিলাম, অইটাকে যাতে ডিসটার্ব না করে। তো এখন যেটা ফাইনাল প্রচ্ছদ, অইটার আগে আরো একটা করি। প্রায় এই টাইপের ইমেজে। কিন্তু রেজুলেশন সমস্যার কারণে বাদ দিই। পরে একটা শিশুশিক্ষার বইয়ের মলাট দিয়ে করি। যেরকম বই আমরা আগে পড়তাম। ছোটবেলায়। পরে দেখলাম অইটার আসল প্রকাশনী এখনো বর্তমান আছে। তো বাদ দিতে হয়। পরে এইটা করি। দুইটাই রেডিমেড ইমেজ। আমি জাস্ট বসায় দিছি।
মঈন উদ্দিন: প্রচ্ছদে ফটোগ্রাফির ইউজটা বাংলাদেশে কিছুটা কম দেখা যায় না? এটার কারণ কী?
রাজীব দত্ত: বাংলাদেশে ফটোগ্রাফ বা কোনো ফাউন্ড ইমেজ বসায় দিলে মনে করে আর্টিস্ট ফাঁকিবাজি করতেছে। মানে অনেকেই মনে করে। তবে ধ্রুব এষ এটাতে একটা ভালো বিপ্লব ঘটাইছেন। এখন হচ্ছে তবে অই ইউজ ধ্রুব এষ থেকে বেশি দূরে না। তবে সাহিত্যের বাইরের কাভারে ইমেজই বেশি প্রারোরিটি পাইছে। কম সময়ে হয় বলে আর বিষয়গত কারণে। বা গ্লামারধর্মী কাভার বলে। যেমন ধরো, ক্রীড়া ম্যাগাজিন, বা সিনেমা ম্যাগাজিন এসবে ইমেজ ইউজ হতো, এখনও হয়। আরেকটা বিষয়, ছবি দিয়ে কাভার করলে, প্যাটেন্ট বা ছবির স্বত্ব ইত্যদি বিষয়গুলা দেখলে, যে পরিমাণ ঝামেলা হয়, মানে অনুমতির, আর যে পরিমাণ খরচ হয়, তা ক্লায়েন্টরা দিতে চায় না। এটাও একটা বড় কারণ। যে কারণে অন্যের ইমেজ ইউজের রিস্ক না নিয়ে, অই কাজ আঁকায় সারা হয় বা ফটোগ্রাফটারে এমন এডিট করা হয় ফটোশপে যেন ফটোগ্রাফ না থাকে আর। তোমার কী ধারণা, ওভারঅল বাংলা বইয়ের কাভার নিয়ে? আমাদের কাভারটার সাথে বইয়ের কন্টেন্টের রিলেশনটা কেমন তোমার কাছে?
মঈন উদ্দিন: রিউমার বইটা আমার হাতে দেখে দুনিয়াবি বিষয়ে ব্যস্ত এক লোক আমাকে কাভারের ছবি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলেন এই দড়িটা তো কোনো কিছুর সাথে বান্ধা নাই, এই লোক ঝুলতেছে কেমনে! তো, আমি বললাম এজন্যই দড়ির উপ্রে দড়িটা যে ইনফরমেশন কপি, ইউজের জন্য না, সেটা সিল মেরে দিছে। উনি কিছুক্ষন তাকিয়ে এরপর বললেন তাইলে নিচে মাটিতে এই লোক মন খারাপ করে বসে আছে ক্যান! আমি বললাম মে বি দড়ি ছিঁড়েই পড়ছেন উনি, এজন্য মন খারাপ হয়তো। এটা শুনে উনি বুঝ পাইলেন। এই আলাপের পর আমার কাছে বইয়ের কাভার যে এর কন্টেন্টের সাথে রিলেটেড হইতে পারছে এইটা মনে হইছে।
আমাদের দেশের বুক কভারের বোঝাপড়ার একটা ছবকও এখান থেকে পাওয়া যায়। কন্টেন্ট যেমন তেমন হউক, কাভারটার এসথেটিকস যাতে ঠিকঠাক হয়, দেখে কিউট লাগে সেটার দিকে আগ্রহ সবার। কভার সুন্দর হওয়া তো ভালো কন্টেন্টের বইয়ের জন্যও ডিসক্রেডিট মনে হয় আমার। বরং কভারটা মিনিংফুল হওয়াটা ইম্পর্টেন্ট আমার সেন্সে। মানে বইটা কভার দিয়েই জাজ করা যায় যাতে। কভারের মিনিং দিয়েই বইয়ে কী কী কন্টেন্ট আছে সেটা বুঝা গেলে ভালো। সো, জাজ এ বুক বাই ইটজ কভার। বই তো একটা গ্রুপ ওয়ার্ক, একজনে লিখলেও আরো অনেকের কন্ট্রিবিউশান থাকে। সেখানে কভার মেইকারের কন্ট্রিবিউশানটা অনেক ইম্পর্টেন্ট। কভারও তাই কন্টেন্ট অফ বুকস।
কভার ছাড়াও ভিজুয়াল আর্টিস্ট হিসেবে আপনার কাজের দিকে তাকালে দেখা যায় আপনার কাজে ডিটেইলিং কম। ফাইন টিউনিং নাই। যারা সুন্দর খুঁজতে চায়, শিল্পীর রঙ তুলির আঁচড়ে যেটা ইউজুয়ালি থাকে আর কি, তারা আপনার কাজ দেখে হতাশ হয় আমার মনে হইল। আপনার কাজে হিউম্যান ফিগারও কম, যা আছে সবই ডিসটর্টেড। আপনার কাজে ল্যান্ডস্কেইপও আঁকতে দেখি নাই, আঁকলে সেটাও ডিসটর্টেট কিছু হবে অনুমান করা যায়। ডিটেইলিং বলেন বা সৌন্দর্য বলেন, এগুলা এভোয়েড করেন কেন?
রাজীব দত্ত: সুন্দর ছবির সুন্দরকে স্টান্টবাজি হিসাবে নেয়া যাইতে পারে। স্টান্টবাজিটা এমন, তুমি দুইটা ভালো কম্বিনেশনের রঙ; যেমন ধরো হলুদের সাথে নীল দিয়ে কোনো একটা পেইন্টিং করলা। বিউটিফুল। অনেকেরই পছন্দ হতে পারে। বা এমন ফটোগ্রাফিক স্কিল দেখাইয়া আঁকলা লোকজন টাস্কি খায় গেল। এগুলা কাইন্ড অফ স্টান্টবাজি লাগে আমার। বিপরীতে তুমি ডিসটর্ট কিছু যদি আঁকো, অইটা দিয়ে এর্ট্রাক্ট করাটা একটু কঠিনই আছে। যারা দেখবে, বলবে, ধুর! এইরকম তো আমিও পারি! এইটা কিছু হইছে? এরকম বিষয়টা। আর ডিটেলিংটা একরকম পাবা আমার পেইন্টিংয়ে। ডিটেলিংটা এমন, ধরো, একটা মধ্যবয়স্ক ফিগারের হয়তো বগলের লোমটাও দিচ্ছি, ইভেন কানের লোমও দিচ্ছি। বা ভুঁড়ির ভাঁজগুলাও। এসব ডিটেলিং। কিন্তু যেহেতু আমার ফিগারগুলা ডিসটর্ট, অনেকের ডিটেল মনে হয় না। বা ধরো, এসব লোম-টোম দিলেও দেখা যাচ্ছে আবার অন্য অনেক কিছু বাদ দিয়ে দিচ্ছি, দরকার নাই বলে। তো বলতে পারো দরকার হয় না বলে, ডিটেইলিং কম। ল্যান্ডস্কেপ ক্লাসে আঁকছিলাম। পরে আর আঁকার দরকার হয় নাই, তাই আঁকি নাই। তবে আঁকতেও পারি যেকোনো সময়। ভাবতেছি। তবে হিউম্যান ফিগার কম না আমার কাজে। বরং কাজ সব ফিগার বেসডই। এবার তোমার প্রতি প্রশ্ন: তুমি বা আমরা যে ভাষায় লিখি, তা নিয়ে অনেকের অবজেকশন আছে। তুমিও জানো নিশ্চয়ই সেগুলা। মানে এটাতো রেগুলার ভাষা না। বলা যায় এক প্রকার বানানো ভাষা, ঢাকাইয়াও বলে কেউ কেউ। কিন্তু ঢাকার সকলে যে এমন করে বলে তাও না। তো প্রশ্ন হইল, এই ভাষা কেন? হোয়াই নট প্রমিত বা তুমি তো সীতাকুণ্ড থাকো, সীতাকুণ্ডের ভাষা না কেন?
মঈন উদ্দিন: আমরা যে লেখাটা চুজ করছি, ওইটা কিন্তু কোনো লোকাল ভাষা না। লোকালাইজড হইতে আমরা চাই নাই। আঞ্চলিক ভাষা না হওয়ায় ঢাকার বা সীতাকুণ্ডের ভাষাও না এটা। এটা প্রমিত ভাষা তো কোনো অবস্থাতেই না। প্রমিত ভাষার প্রচুর লিমিটেশন। প্রমিত ভাষা ইউজ করে আপনি যা বলতে চান তা মে বি আর বলা ওইভাবে পসিবল না এখন, প্রমিত ভাষা ইউজ করে কিছু বললে সেটা বহুবার বলা একটা প্রচলিত কথাই হবে একচুয়ালি। নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত হওয়ার মতো ব্যাপার। প্রমিত ভাষা প্রত্যেকটা ওয়ার্ডকে স্পেসিফিক একটা মিনিং বা ভাব দিয়ে আটকাই ফেলছে, ফলে শব্দগুলা বাউন্ডারি থেকে আর বের হতে পারে না, নতুন কোনো মিনিং তৈরি করতে পারে না। লেখায় ঠিকঠাক ভাবে এক্সপ্রেস করার জন্য তাই প্রমিত আর ফাংশনাল না। তো ঠিকঠাক ভাবে লেখার জন্য একটা ইমপিউর ল্যাংগুয়েজ দরকার হয় আমাদের। ইমপিউরিটিজে ভরা এরকম একটা ভাষা দরকার হয়। প্রমিত যে যে মিনিংগুলা লুকাতে চায়, চেপে যায়, ওগুলা ঠিকঠাক ভাবে প্রকাশ করতে পারে এমন ক্রিমিনাল টাইপের ভাষা দরকার হয়, প্রচুর পাপ-টাপ করছে এই টাইপের ভাষা। লেখায় আমি যা যা বলতে চাই ওইটা বলতে গিয়া একটা ইমপিউর ভাষা বেছে নিতে হইল। আপনি এটাকে কিভাবে দেখেন? কবিতায় ছন্দ বা শুদ্ধ বানান চর্চা বা প্রমিত ভাষায় সাহিত্য চর্চার ব্যাপারটাকে কিভাবে দেখেন?
রাজীব দত্ত: কবিতায় ছন্দ নিয়ে আমার এলার্জি নাই। মানে কেউ যদি ইউজ করে আমার সমস্যা নাই। তবে ছন্দ জিনিসটা খুব টানে না। টানে না বলতে, ধরো, উৎপল বসুর নবধারাজলে কবিতাটার ছন্দে যদি তুমি কিছু লিখ (যদিও এটা কি ছন্দ আমি জানি না) মনে হবে অই উৎপলের কবিতাই পড়তেছো, বা অইটার এক্সটেনশন। তবে ছন্দটন্দ থাকলে পড়তে আরাম লাগে আর কি। কেমন একটা হেলে-দুলে ঘোরার একটা বিষয় আছে। মুখস্থ করতেও সুবিধা হয় রিডারের। তবে জীবনানন্দের মতোন জিনিয়াস হইলে পরে ছন্দ জিনিসটাকে নষ্ট করা যায়।
মঈন উদ্দিন: আপনি তো একাডেমিক্যালি ফাইন আর্টসের গ্রামারগুলা শিখছেন, মানে আঁকাআঁকির নিয়মকানুনগুলা… এগুলা থেকে বাইর হইছেন কী মনে করে? কবে থেকে?
রাজীব দত্ত: আগের প্রশ্নে প্রমিত নিয়ে একটা প্রশ্ন ছিল। প্রমিত জিনিসটা খুব লিমিটেড আর কি। মানে খোপের মতোন । তবে যারা এটাতে ইউজটু, তাদের মনে হবে না। অনেকে প্রমিততেই ভালো লিখছেন, বাংলা ক্লাসিক সবই তো প্রায় প্রমিততেই। এখনো কেউ কেউ প্রমিততেই ভালো লিখতেছেন। বিষয়টা মে বি ডিল করার উপরও ডিপেন্ড করে।
একাডেমিতে পড়তে গেলে গ্রামারগুলা শিখতেই হয়। না হলে পাশ করা কঠিন হয়ে যায়। তবে শিখলে ভালো হয় কিছু। পরে করে খাইতে গেলে। খারাপ হয় যেটা অইটা আনলার্ন করতে চাইলে।
আমার যেটা সমস্যা হয় তখন, স্কিলটা আমি এনাফ পারি এমন না। পারি অল্পস্বল্প। তো এ বিদ্যা দিয়ে যখন আঁকতে গেলাম, দেখা গেল সমস্যা হচ্ছে। ধরো, পুরা একটা ফিগারের হয়তো শুধু আঙুলটা ভালো হয় নাই। আর এটার কারণেই পুরাটা ইমব্যালেন্স লাগতেছে। এটা একটা ব্যাপার। তখন আর আমার স্কিল বাড়ানোর সময় নাই, ইচ্ছাও নাই। তো একটা ওয়ে আউট খুঁজতেছিলাম। তখন আউটসাইডার কিছু আর্টিস্টের কাজ দেখি। এবং ইমপ্রেস হই। মনে হইল এরকম বাচ্চাদের মতোন আঁকলে সুবিধা বেশি। ভুল হবার আশংকা নাই। যেটা গ্রামার মেনটেন করে আঁকলে হবার সুযোগ থাকে। তো এভাবে বাচ্চাদের ছবিও আমার পছন্দ হতে লাগল। এবং আমি ওদের থেকেই শিখতে লাগলাম।
তোমার তো চারুকলার একাডেমিক বিষয়গুলারে একরকম দূরে-কাছে থেকে দেখার সুযোগ হইছে। কী মনে হইছে ব্যাপারগুলা? তুমি ইদানিং আকাঁআকিঁও করতেছ। আর্ট নিয়ে তোমার আগ্রহ বোঝা যাচ্ছে তোমার রনি আহম্মেদ আর ঢালী আল মামুনের ইন্টারভিউ নেয়া দেখেও। তো এই সাবজেক্ট নিয়ে তোমার অবজারভেশনটা কেমন?
মঈন উদ্দিন: একটা কথা মনে পড়ছে একটু বলি, কোনো কোনো ভাষা কিন্তু উইক হয়ে যায়, মরা অনেক ভাষাও আমরা দেখছি। অনেক অনেক আগের ক্লাসিক রাইটাররা যে ভাষা দিয়ে লিখতেন এখন আমি আপনি আর ওই ভাষায় লিখি না। কারণ ওই ভাষা এখন মরা। তো, প্রমিত ভাষাও এখন প্রায় আধামরা, নন-ফাংশনাল হয়ে গেছে প্রায়। ক্লাসিক রাইটাররা যা-তা ব্যবহার করে ফেলছেন এটাকে। ফলে এটা এখন কনজার্ভেটিভ হয়ে গেছে।
আর ফাইন আর্টসের বিষয়টা, ওই যে বললাম… আমি যা বলতে চাই এটা সবসময় টেক্সটে বলতে পারা যায় এমন না, আমাকে অনেক সময় লিমিটেশন ফিল করতে হইছিল বলতে গিয়ে। এক্সপ্রেসের জন্য ফাইন আর্টসের কমপোনেন্টগুলা অনেক সময় বেশ ভালো টুলস হয়… তো তখন, আর্টিস্ট ঢালী আল মামুনের স্মেল নিয়ে কাজ করা বা সাউন্ড নিয়ে কাজ করা আমাকে ইন্টারেস্টেড করে এদিকে… আবার আর্টিস্ট রনি আহম্মেদ সুপারন্যাচারাল বিষয়টা নিয়ে কাজ করেন, সুফিজম নিয়ে, টাইম এন্ড রিলেটিভিটি নিয়ে, এগুলা টেক্সটে ডিল তো অনেকেই করছেন… কিন্তু ভিজুয়াল আর্ট দিয়ে করাটা আমাকে বেশ ইন্টারেস্টেড করে তোলে। আপনাকে আউটসাইডার কিছু আর্টিস্টের কাজ গোড়ার দিকে নাড়া দিছিল বললেন। উনারা কারা? দুয়েকজনের নাম বলবেন?
রাজীব দত্ত: প্রথমে Jean Dubuffet নামের এক আর্টিস্টের নাম মনে আসতেছে। উনার কাজই মনে হয় প্রথম দেখি তখন। কোনো একটা আর্ট হিস্ট্রির বইয়ে। অই লোক আবার আর্ট ব্রুট নামের একটা মুভমেন্টও করছিলেন। উনি মূলত আউটসাইডার আর্টিস্ট যারা, যারা হয়তো সেল্ফ থট, যারা মানসিকভাবেও হয়তো অসুস্থ, অ্যাসাইলামে থাকেন, তাদের নিয়ে কাজ করতেন। ফলে তাদের দ্বারাই ইনফ্লুয়েন্সড ছিলেন। এরকম আরেক জন আর্টিস্ট বিল টেইলর।
তোমার নেকস্ট প্ল্যান কী? কী নিয়ে কাজ করতেছো। নতুন কোনো ফিকশন কি লিখেতেছ? লিখলে অইটা কীরকম হইতে পারে? রসুন চাষ বা রিউমারের মতোন কিছু একটা? রসুন চাষ আর রিউমারের মধ্যে রিলেশনটা কেমন? বা, দুইটার মধ্যে দূরত্বটা কেমন?
মঈন উদ্দিন: নতুন কিছুর ব্যাপারে এখনো প্ল্যান করি নাই। রিউমার তো একটু ডিফারেন্ট কাজ ছিল। রসুন চাষের ঘটনাবলীর মতো রিউমারকে ওইভাবে একটা জনরার ভিতরে আটকাই রাখা যায় না। রসুন চাষের ঘটনাবলীকে নভেলা বলতে পারা গেলেও রিউমারকে ব্লেন্ডেড জাতীয় কিছু একটা বলা যায়। সামনে একটা কবিতার বই আসতেছে প্রিন্ট পোয়েট্রি ও বাছবিচার থেকে। ২০১৩ সালে বাছবিচার উনাদের অনলাইন ভার্শনে ফার্স্ট আমার কবিতা পাবলিশ করছিল।
রাজীব দত্ত: তোমার রসুন চাষের ঘটনাবলী নিয়ে পাঠক রিয়্যাকশন কেমন?
মঈন উদ্দিন: মিক্সড রিয়্যাকশন, এটাই এমনে স্বাভাবিক… রিডার্স তো এন্টারটেইনমেন্টের জন্যই পড়ে, ঠিকঠাকভাবে এন্টারটেইন করতে না পারলে বই তো ছুড়ে মারবেই। বইয়ের যে সোশাল ইমপ্যাক্টের কথা বলা হয়, এটা এই বই ছুড়াছুড়ির ভিতরেই হয়, সাইলেন্টলি।
ইন্টারভিউয়ের এখানে এসে আমরা টায়ার্ড হয়ে যাই এবং প্রশ্নও আর মনে না আসায়, এইখানেই ইস্তফা দিই।
রাজীব দত্ত এবং মঈন উদ্দিন। দুজনের জন্মই চট্টগ্রামে। দুজনই চিত্রকলার অনুরাগী। প্রথম জনের এ বিষয়ে একাডেমিক শিক্ষাও আছে। অন্যজনের পেশা অন্য হলেও নেশা লেখালেখি। দুজনেই কবিতা লেখেন, অনুবাদ করেন এবং ফিকশন লেখেন। প্রচ্ছদ শিল্পী হিসেবে রাজীব দত্ত আলাদা একটা পরিচিতি গড়ে তুলেছেন।