.
আন্তঃসম্পর্কীয়
পাহাড় ও প্রস্তরের বিস্তৃতিতে
সিসিফাসের জীবন যাপন করে
মনে প্রশ্ন জাগতে লাগল
সব পরিচয়ই শেষমেষ
ক্যানো ভীষণ আত্নঘাতী
ক্রমশ ওজন বেড়ে কারো নাম
বয়ে নেওয়ার তুলনায় যথেষ্ট ভারী
অথচ
বুদ্ধের কথা মেনে নিলাম শুরুতেই
সকল প্রকার মায়া থেকে
যথাসম্ভব তফাতে থাকি
প্রমাণস্বরূপ
তুমিও ভাবতে পারো প্রথম সন্ধ্যার কথা
হাত নেড়ে ডাকতেসো আর আমি
দেখেও না দেখার ভান করে
অন্য দূরত্বে দাঁড়িয়ে আছি
আপেলগাছ
বেহেশত বিতাড়িত আদমের
আপেলের কাছে দোষস্বীকার আছে
ক্ষমার প্রশ্নে লাল তীব্রতায় নতজানু মাথা
কিন্তু আপেলের প্রজ্ঞা উস্কানিমূলক
ইশারায় দূরত্ব সংক্ষেপনের জন্য ডাকে
যা পছন্দের তা যেমন আছে তেমনই ভালো
আপেলের শরীরে পাখিদের আঁচড়
বাতাসের সাথে জটিল দোলনগতি
যেকোনো মুহূর্তে বিচ্যুতির আশংকাসহ
স্ফীত আপেলের রক্তিম চাতুর্য ভালো লাগে
আপেলগাছ নীরবে
জিঘাংসা গোপন করে ব্যথার ছায়ায়
সুকৌশলে ডালপালা ছড়াতে থাকে
পর্যটন
সমুদ্র তীরবর্তী সরু ইউক্যালিপটাসের নিচে যাই
মনের ভেতরকার সকল বক্রতাসহ
সেই বক্রতার খাঁজে শক্ত করে বাঁধতেসি হ্যামক
জ্বরের ঘোরে দরকার ছিল লবণের হাওয়া
সাথে ইউক্যালিপটাসের ফুলের রেণু উপশম
ঢেউ যেখানে গতির সমার্থক, সেখানে স্থবিরতা নিয়ে
তাকিয়ে থাকলাম আকাশের বিশালতায়
যখন সন্ধ্যায় ফিরতে থাকি বাড়ির পথে
পাইনের সারি সারি কফিনের ছায়া জেগে থাকে ভেতরে
ফিলিং স্টেশনে থেমে থেমে সিগারেট খাই
যেখানে নিষেধাজ্ঞা জারি, সেখানে
আগুন জ্বালাতে ভালো লাগে
ভাষাবিলুপ্তি
ট্রমা থেকে দূরে
এখন সংলগ্ন বাতাসের দিকে মুখ
আত্মার খোলসের অতি নিকটে
ক্রীতদাস হয়ে বসে আছে যে
ভাষার কূটনীতি এখন
কোনো কাজে লাগতেসে না
পাথরে খোদাই শোকগীতি
সংবাদবাহী নদীর হাওয়াকে উদ্দেশ্য করে
ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিতেছি সেই কথা
প্রায়শই পিতা বলতেন
জখমের দিনেই দুনিয়া স্বাভাবিক
বিপরীত গন্ধমের বন
আদিমাতার শুষ্ক জঠরে
প্রত্যহ নৈঃশব্দ্যের বেদীতে গলা রেখে
পাপের পিচ্ছিল প্রসবে একটু একটু করে
ধরণীর অতল গহব্বরে পা ফেলো বৎস
পেরিয়ে যাবে অসহনীয় ক্লান্তিকর দীর্ঘ দিন
আসহাবে কাহাফের মতো তৃপ্তির ঘুম
সমূদয় ভাষাবিজ্ঞান ও
ফাঁসিকাঠের বিলুপ্তির ভেতরে
উপকথার মেঘ
পুবদেশীয় উপকথার মেঘগুলা
ঘুরতেছিল ফাঁকা আসমানে
একটা রেইনট্রি গাছের আড়ালে চলে
যাওয়া অবধি
সেদিকে দৃষ্টি রাখল চোখ
যোগাযোগহীন নই কিন্তু
একটু ফুলের টোকা পেলে দাবি করি
আমরাই সেই বিরহী যক্ষ, প্রশ্নের খানিকটা পরেই
পুনরায় স্বজনহীন; বিজন অন্তিম পাহাড়ে পিঠ
ঠেক দিয়া নির্বাসিতের ভূমিকায়
অদেখা কণ্টক রাজ্যের প্রাদেশিক অন্ধকারে
তীব্র এসিডের দিনে সেইসব কথা আজও প্রাসঙ্গিক
কেতকীর বন, অবন্তী নগর, শিপ্রা নদী পার হয়ে
অলকার কুশল সংবাদ সমেত মেঘ
এইভাবে প্রায় অনেকদিন প্রতীকী বর্ষাযাপনের পর
ছাপড়ার ঢেউটিন বিদীর্ণ করা কুত্তাবিলাই বৃষ্টি নামে
মনোলোগ নাড়িয়ে দিতে প্রলম্বিত সময়ে
তখনও শেষরাত, যখন জীর্ণ মফস্বলের মানুষেরা
বাস করতে থাকে অর্ধেকটা ঘুম আর অর্ধেকটা
পৌনঃপুণিক স্মৃতির জাগরণে
জন্ম ৭ জুন, গাজীপুর। কবিতা ও গদ্য লিখেন। ভাষা ও মনস্তত্ত্ব বিষয়ক নিরীক্ষাধর্মী প্রচেষ্টার ব্যাপারে উৎসাহী।