পারস্পরিক
কে কার মুখের দিকে চেয়ে আছি
আমি ও শুন্যতা
মাঝখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে তোমার নাচঘর
খুব রাতে ভেসে আসে সুর…
কবি
এসব আমার নয়
এসব তোমারও নয় কিছু
তারাদের ফাঁড়িপথ, রাতের উপমা
ছায়াঘন বিকেলের ছবি
তবু, এসো
বসো এইখানে, পৃথিবীর
লুপ্তপ্রায় ভাষাদের কবি!
প্রত্যক্ষ
দেখো, গুটি গুটি পায়ে কারা এসেছে তোমার জলসায়
অবাক তাকিয়ে থাকা, ঈষৎ গজিয়ে ওঠা মাথা নিচুদের আভা…
আদ্যপ্রান্ত যারা গুলিয়ে ফেলেছে কালশীটে
অনিঃশেষ খিলানের ভাষা…
আমিও তাদের মতো, রাতের দুন্দুভি…
টান টান, রোদের দু-পিঠে শুকোনো
বিনম্র চামড়ায় ঠাসা!
অনুরূপ
তোমারও কি ব্যঞ্জনা ছিল এসবের, নাচঘর
নিঝুম করোটি! যেসব মৃত নক্ষত্রের আলো এই অব্দি
এসে পৌঁছোয়নি এখনো…দাঁড়িয়ে রয়েছে
তাদের নিস্পলক ট্রলি
এ থেকেও লেখা হচ্ছে রাতের উপমা, সারি সারি
গোধূলি রঙের চেয়ার, এ থেকেও আমাদের
অভিন্ন শহর, লুকোনো জেব্রাক্রসিং
তোমারও কি তর্জমা ছিল এসবের
মুখ ফিরিয়ে থাকা আমাদের
খোদিত শিল্পকলা, রুদ্ধশ্বাস
গানের কেবিন!
শয়ন
ঘুমন্ত মাংসপিন্ড নিয়ে শুয়ে আছে
গানের দরদ, এর এক পাশে শিকারের দাগ
রাতের কুহক
এসবের অল্প দূরেই
প্রেম থেকে মোহ থেকে মুক্ত হয়ে
নক্ষত্রের উল্টো দিকে ঝুলে আছে কয়েকটি বাঁদুড়
চলে যাবার আগে
কাদের ফুঁটিয়ে তুলেছে
এই সব বিরল উপমা
দূর থেকে এনে যাকে
বসিয়েছে নাচের ভঙ্গিমা
অবিকল কাঠের স্থপতি
জন্ম ১৯৬৫ সালের ২৭ অক্টোবর। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাশহর মনুভ্যালি চা বাগানে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এমএ। প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ : ‘উনকথন’, ‘খন্ড পাড়ায় জলবার্ষিকী’, ‘ধর্মগোধূলী’, ‘নিরিবিলি সেন্ট আইটিমস’, ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’, ‘বিকেলের হার্টক্রেন’, ‘সন্ধ্যে রঙের সাইকেল’ ও ‘বালুকণা রায়’। পেশায় তিনি ত্রিপুরা সরকারের তথ্য দপ্তরের একজন সহ-অধিকর্তা।