জৈববেদনা
একবার দাঁড়াও
এই গাছের নিচে
বাকলে হাত রাখো
দেখো টের পাও কি না
পিঁপড়ের প্রাণ
কেমন আকুল হয়ে
ব্রক্ষাণ্ডের পিঠে পেতেছে সংসার
ও মন, একবার পাতার নিচে
সবুজের সুড়ঙ্গ বেয়ে যাও
দেখো ছুঁতে পারো কি না
শিকড়ের জৈববেদনা
টুরিস্ট পুলিশ
ক্ষেপে উঠেছে জল
দানব মাছগুলো
লুকিয়ে পড়েছে আরও গভীরে
এই ভিড়ে
চোখ মেলেছো তুমি
বুড়ো রোগাটে
অথচ শাবলের চেয়ে ধারালো হাতে
বালি খুঁড়ে
তুলে আনছো গান
উদাসীন টুরিস্ট পুলিশ কি
এই গান গাইতে পারে
মেরিন ড্রাইভের পথে
এই ঘুম ঝুলে আছে পাতার নিচে
পোকার সাথে
হাজার মাইল দিয়েছে পাড়ি
মৃত্যুদূত দানবের পায়ের ফাঁকে-ফাঁকে
কোথায় পরিজন
কোথায় সেই আপন গাছের গুড়ি
হর্ন, তুমি আর বেজো না
পায়ের গোড়ালিতে বিউগলের সুরে
বধির আর স্তূপ হয়ে থাকো
বালির মিথুন ভাষ্কর্যে
যতক্ষণ না প্রবল কোনো ঢেউ এসে গুঁড়িয়ে দিয়ে যায়
মেরিন ড্রাইভের পথে লাল কাঁকড়ার পিঠে
হেঁটে যাচ্ছে লাল চাঁদ উদ্বাস্তু পায়ের সমান্তরালে
গন্ধেরসে
পাতাদের কি আছে
শত্রু-শত্রু বন্ধু-বন্ধু খেলা?
ফুলের?
ঘরের কাছেই এত আয়োজন
ভাবছি তবু
দূরের
গন্ধেরসে সিক্ত জিভ
রঙের আসন
তলে
পায়ের নিচের মরানদী
উপচে উঠুক
জলে
হে সাদাচুল-কিশোরীলতা
প্রেম নেই বিরহ নেই
তবু এক একাকী শালিক
প্রহর গোনে
সন্ধ্যায়
হাসনাহেনার ঝোপে
উলটে আছে সময়
নিস্পন্দ রাতের গুহায়
খুলে পড়েছে যার
চোখের মণি
আজ সে প্রেত
ঠোঁট ঠুকরে বাজায়
শরীরবেহালা
সেই সুরে
হে সাদাচুল-কিশোরীলতা
এমন করে দুলছো কেন
আমার জানালার শিকে
জন্ম মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় উত্তর সাহাপুর গ্রামে ১৮ আগস্ট ১৯৭৮ সালে। ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন। এছাড়াও পপুলেশন, রিপ্রোডাকটিভ হেলথ, জেন্ডার অ্যান্ড ডেভালপমেন্ট বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেছেন। সম্পাদনা করেছেন ছোটোকাগজ ‘ফলক’ এবং ‘চর্যাপদ’। প্রধানত কবিতাচর্চা করলেও ছোটোগল্প এবং প্রবন্ধও লিখেছেন। বিমূর্ত ধারার ছবি আঁকার পাশাপাশি চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রতি রয়েছে বিশেষ ঝোঁক। এছাড়াও লিখেছেন বেশ কিছু চিত্রনাট্য, মঞ্চনাটক ও গান। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো: ‘গ্লাসের শেষবিন্দু জল’, ‘রাতের বাসগুলো’, ‘বিড়ালের সঙ্গে’, ‘আহত চড়ুই’, ‘অনন্তর জেগে থাকে দীঘল পিপাসা’। অনুবাদগ্রন্থ: আরবি ভাষার কবি ফুয়াদ রিফকার নির্বাচিত কবিতা: ‘বেদনার্ত গাঢ়পাতাগুলো’, নতুন আরবের কণ্ঠস্বর: ‘কাসিম হাদ্দাদের নির্বাচিত কবিতা’ এবং নোবেল বিজয়ী কবি ‘টমাস ট্রান্সট্রোমারের নির্বাচিত কবিতা’।