ইস্ট পাকিস্তান রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন বা ইপিআরটিসি বাস চলছে রাস্তায়, দেশ যখন পাকিস্তান, সেই বাস্তবতায়। ইপিআরটিসি বাস কোথায় পাব ২০১৮ সালে, ভূতের গলিতে, নারিন্দায়, ঢাকায়? সরকারি বাস ইপিআরটিসি বাসের দুইটা মডেল এসেছিল ঢাকায়, একটা চালান আসে আর্লি সিক্সটিজে, অন্যটা লেইট সিক্সটিজে; একটা লাল, একটা সবুজ। সেই বাস তো কবেই উধাও হয়ে গেছে। কিন্তু কাঁটাতে একটা ইপিআরটিসি বাস লাগবে। কোথায় পাব? নানারকম খোঁজাখুঁজি করে হন্যে যখন, তখন এক শুভাকাঙ্ক্ষীর পরামর্শে একদিন গেলাম জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিবহন পুলে। অনেক গাড়ি সেখানে। নষ্ট হয়ে পড়ে আছে গাড়িগুলো। যে বাসটি ইপিআরটিসি মডেলের হতে পারে, সেই বাস তো বহু আগেই নষ্ট হয়ে পরিবহন পুলে পড়ে আছে। ইঞ্জিন নতুন করে রি-স্টল করলে কি রাস্তায় নামানো যাবে? যাবে না কেন? ইচ্ছে করলেই যাবে। দরকার, চূড়ান্ত ইচ্ছে। ইচ্ছে হলো একধরনের গঙ্গাফড়িং। কথাসাহিত্যিক ফয়জুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি তখন সদ্য জনপ্রশাসন থেকে এনাদার মিনিস্ট্রিতে গেছেন বটে কিন্তু আমার দরকার তো সুমন ভাইকে মেটাতেই হবে। ফয়জুল ইসলামের ডাকনাম সুমন। আমি তাঁর লেখা গল্প পছন্দ করি। সেই যখন মুক্তকণ্ঠ পত্রিকার খোলা জানালা বিভাগে চাকরি করতাম, সুমন ভাইয়ের গল্প ছাপা হয় আমাদের খোলা জানালায়। তখন থেকেই সুমন ভাইকে চিনি।
জনাব শহীদুল জহিরের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের মানুষ তিনি। শুটিংয়ের সময় সেই বাসটির নেইমপ্লেটসহ কিছু পরিবর্তন করেছেন শিল্পী মাহমুদুর রহমান দীপন, কাঁটার আর্ট ডিরেক্টর। সেই বাস জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিবহন পুল থেকে শুটিংয়ের দিনে গেণ্ডারিয়া মিলব্যারাকের পেছনে বুড়িগঙ্গার ধার দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তায় এক সন্ধ্যায় চালানো হয়, শুটিং শেষ হয়। ঝুঁকিপূর্ণ ছিল বাস, আমরা ভাবছিলাম অনেক দিন পড়ে থাকা বাসের ইঞ্জিন মেরামত করে কাজটি করতে পারব কি না! না জানি সচিবালয় এলাকা থেকে বুড়িগঙ্গা-মিলব্যারাক পর্যন্ত বাসটি পৌঁছুতে পৌঁছুতেই ইন্তেকাল করে কি না! না করেনি। ধুকুর ধুকুর বাসটি আমাদের সহযোগিতা করেছিল। সেই বাসের ড্রাইভার ছিলেন পরিবহন পুলেরই এক ড্রাইভার। কাঁটার নথিতে তাঁর নাম লেখা আছে, টাইটেলে যাবে। সুমন ভাইয়ের নামও যাবে। কেউ এক কাপ চা এনে খাওয়ালেও প্রোডাকশনের টাইটেলে তার নাম লেখা থাকবে। কারণ, সেই এক কাপ চা দরকার ছিল প্রোডাকশনটি হয়ে উঠতে এবং সেই দরকারে চা ব্যবহৃত হয়েছে। প্রোডাকশন তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবেই। তো, ইপিআরটিসি বাসের কন্ডাক্টরের কাঁধে ঝোলানো থাকবে যে ব্যাগ, সেই ব্যাগ ছিল চামড়ার এবং বর্তমানে তা বাজারে নেই। আমিও ছোটোবেলায়, আশির দশকেও বাস কন্ডাক্টরদের কাঁধে সেই ব্যাগ ঝোলানো দেখেছি। কিন্তু বাজারে না থাকলেও কাঁটার শুটিংয়ে তো লাগবে। অনেক প্রপস তো আমরা বানিয়েছি, ব্যাগটাও বানানোর সিদ্ধান্ত হলো। ব্যাগের ড্রইং করতে ফোন করলাম চারুকলায়, শিল্পী শেখ আফজালকে। আফজাল ভাই বললেন, ‘ওই ব্যাগ দিয়ে কী করবা মিয়া?’
‘সিনেমায় কাজে লাগানো হবে।’
‘সিনেমার নাম কী?’
‘কাঁটা।’
আফজাল ভাই ড্রইং করে দিলেন। সেই ড্রইং দেখিয়ে মগবাজারের এক চামড়ার দোকানে ব্যাগ বানানো হলো বটে, কিন্তু বানানো ব্যাগের চামড়া যথার্থ না হওয়াই ব্যাগ আমার পছন্দ হলো না। মনে হলো, অরজিনাল হয়নি। তাইলে? সেই সময় কাঁটার সিনেমাটোগ্রাফার তাইজুল ইসলাম রোমানের বাবাকে চিকিৎসার জন্য কোলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। রোমানকে ফোন করলাম কোলকাতায়। বললাম, ‘আমি কোলকাতার নগর পরিবহনে ওই ব্যাগ দেখছি। একটি নতুন ব্যাগ কিনে সেটি কোনো চলতি বাসের কন্ডাকটরকে দিয়ে দিবা, তারপর তার ব্যবহার করা ব্যাগটি নিয়ে আসবা।’ অবশ্য রোমান নতুন ব্যাগ কিনেলেও ব্যাগটি কোনো বাসের কন্ডাক্টরের সঙ্গে অদলবদল করতে পারেনি। তাই ব্যাগ নতুন অবস্থায় যখন আমরা কাঁটা ক্যাম্পে পাই, নতুনত্ব ঘোচানোর কাজ পড়ল আর্ট ডিপার্টমেন্টের।
ছবিতে এক সন্ধ্যায় চলমান ইপিআরটিসির কন্ডাক্টরের কাঁধে সামান্য কয়েক সেকেন্ডের জন্য দেখা যাবে ব্যাগটি। কিন্তু তখন আমি মনে করেছি ওই ব্যাগ ছাড়া কিছু হবেই না। হ্যাঁ, তাই। প্রোডাকশন সেই তরঙ্গেই চলে। নইলে হয় না। বাঘের চোখ লাগলে বাঘের চোখই লাগবে। কীভাবে ম্যানেজ হবে, সেটি নির্দেশক হিসেবে আমি ভাবব না। আমি শুধু ভাবব, বাঘের চোখ লাগবে, ধরলাম ডিমের বদলে বাঘের চোখ একটুখানি গরম পানিতে সেদ্ধ করে লবণ লাগিয়ে খেতে হবে। না, কাঁটাতে এরকম কোনো দৃশ্য নেই। কথার কথা বললাম। কথার কথা আবার কী জিনিস? কথার না-কথা কিছু থাকে? বা অকথা?
কাঁটা ক্যাম্প মগবাজার তুমুল ব্যস্ত তখন। অডিশনের নতুন পাত্রপাত্রীদের নিয়ে নানারকম রিহার্সেল চলছে প্রায় প্রতিদিন, গ্রুপ গ্রুপ করে। তিন-চারশো লোককে তো আর একসঙ্গে একোমোডেট করা সম্ভব নয়, তাইলে হল রুম লাগবে। প্রোডাকশনের সহকারীদেরও অনেক কাজ তখন। অডিশনের পাত্রপাত্রীদের ক্যাম্পে ডাকাই এক বিশাল কাজ। টানা দুই দিন ধরে সারা দিন ফোন করে গেলে তিন-চারশো লোককে ডাকা হয়, অবস্থা এমন। ক্যাম্পে কেউ অডিশনের পাত্রপাত্রীদের ফোন কলে ব্যস্ত থাকে, কেউ প্রপস নিয়ে আছে, কেউ কস্টিউম। কেউ স্ক্রিপ্টে আমার নানান সময়ে মনে হওয়া ও বলা তথ্যগুলো অ্যাডাপ্ট করে। কেউ যায় লোকেশনের দিকে। নানারকম বিখ্যাত লোক আসেন ক্যাম্পে, তারা আসেন আমার ডাকেই। আমার মনে হচ্ছিল, আমাদের নতুন নতুন পাত্রপাত্রীদের ক্যামেরার সামনে আরেকটু ইজি করে পাওয়া দরকার। আমার কথা তো তাদের শুনতেই হয়, মুহূর্মুহু শুনতে হয়। আমি তাদের বিশ্বাস করাতে চেয়েছি, কাঁটা একটি অর্গানিক মেথডে নির্মিত ছবি হচ্ছে। এই জন্যই শেষ পর্যন্ত আমি বাজারি লোকদের এড়িয়ে গেছি এই প্রোডাকশনে। আর চার-পাঁচশো লোক কি আদতে বাজার থেকে নেওয়া সম্ভব? দু-একজন পরিচিত অভিনেতাকে আমার দরকার ছিল; বিশেষ করে মহল্লার সিনিয়র সিটিজেন, এতে করে কাঁটা প্রজেক্টের মেটেরিয়াল মেরিট যাদের মনে ধরেছে, তাঁরা নিজ আনন্দেই কাজটা করেছেন। কাঁটা চির ঋণী থেকে যাবে তাদের কাছে। তাছাড়া যেরকম সিনিয়র সিটিজেন আমার দরকার ছিল, অডিশনে তো অত সিনিয়র কেউ আসেননি, সেটা হয়তো আমরা আশাও করিনি। অভিনেতা এস এম মহসীন তো শুটিংয়ের বাইরে অন্যান্য দিনেও কাঁটা ক্যাম্পে চলে আসতেন। হাঁসের ডিম খেতেন, একবারে তিনটা। এরকম সিনিয়র সিটিজেন ক্যারেক্টারে আছেন অভিনেতা পরেশ আচার্য্য, নারিন্দার বসুবাজার পঞ্চায়েত প্রধান শাহাবুদ্দিন ভাই। শাহাবুদ্দিন ভাই অনেক জানাশোনা মানুষ, রাজনীতিতে জড়িত, ন্যাপ করেন। আজ, এ মুহূর্তে আমার মনে নেই, কীভাবে তাঁকে আমরা কাঁটা টিমে পেয়েছিলাম। সম্ভবত শুটিংয়ের জন্য একটি গলি উদ্ধার প্রকল্পে যখন সিটি কর্পোরেশনের লোকজন ও পুলিশ আসে, তখন বিচার সালিসির জন্যই হয়তো তিনি এসেছিলেন। আমরা শাহাবুদ্দিন ভাইকে একটা বড়ো ক্যারেক্টার করিয়েছি কাঁটাতে। আছেন টঙ্গির মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, তিনি অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার। অডিশনে এসেছিলেন কাঁটা টিমে। জীবনব্যাপ্ত যাত্রাশিল্পের অভিনেতা মিলন কান্তি দে, এই সিনিয়র সিটিজেনদের তালিকায় আছেন। আছেন ফরাসগঞ্জ, সূত্রাপুর, গেণ্ডারিয়া, মামুর মাজারের কয়েকজন সিনিয়র সিটিজেন। তাঁরাই তো সেলুন ঘরে বসে গল্পগুজব করে কাটাবেন। তাদের মুখেই আমরা দেখতে পাব কাঁটা-কাহিনি। তবে ভূতের গলির প্রবীণ বাসিন্দা এস এম মহসীন এই গল্পবাজদের লিডার। তার সঙ্গে ৩৬ ভূতের গলির বাসিন্দা আবদুল আজিজ ব্যাপারীর কিছু দ্বন্দ্ব থাকতে পারে, ঝগড়া হতে পারে, ক্ষমতা দেখানোর ব্যাপার-স্যাপার থাকতে পারে কাঁটায়।
এবং ফাইনালি কাঁটার বিহারি নাপিত আব্দুল আলীর চরিত্রে আমরা পেয়ে গেলাম অশোক শীলকে। পুরান ঢাকারই বাসিন্দা তিনি, কিছু প্রপসও পাওয়া গেল তার কাছে। সেলুনের ক্ষৌরকর্ম করতে করতে অভিনয় চালিয়ে যাওয়া, পার্শ্ব অভিনেতাদের সঙ্গে কন্টাক্ট রাখা—এমন একটা পরিশ্রমী চরিত্র আব্দুল আলীর। আমরা ইয়োর চয়েস সেলুন বানিয়েছিলাম গেণ্ডারিয়ার চৌধুরী আলম নগরের চৌরাস্তার মোড়ে, রাস্তার পাশে রহমানের চায়ের দোকান কদিনের জন্য উঠিয়ে দিয়ে। এর জন্য রহমানকে টাকা দিয়েছি আমরা। রহমানের দোকানের একদম গা লাগোয়া মামুর মাজার। রাজধানীর তৃতীয় বৃহত্তম মাজার মামুর মাজার। মাজার পক্ষ সেলুন বানানোর অনুমতি দিতে চায়নি প্রথমে। মাজার সেক্রেটারি বললেন, ‘১৯৭১ সালে পাকবাহিনী বুড়িগঙ্গার ধারে দাঁড় করিয়ে মামুকে কয়েকটা গুলি করছিল, একটা গুলিও ফোটে নাই। মামু খাড়ায়া ছিল, গুলি রাইফেলে জ্যামে পইড়া গেছে গা। মামুর মাজার এলাকায় ছুটিং করা যাইব না।’
মামু একজন পীর ছিলেন। তাঁর নামেই মাজার গড়ে উঠেছে। সেক্রেটারি বললেন, ‘মামু না চাইলে ছুটিং ক্যান, ফুটিংও হইব না। কথা বুঝছেন?’ মামু তো মরে গেছেন কত আগে। কিন্তু মামুর মাজারের লোকজন শুটিংয়ের জন্য মাজারের বাইরে, সিটি কর্পোরেশনের রাস্তার ধারে সেলুন ঘর বানানোর অনুমতি দিতে চায়নি। কাঁটার সিনেমাটোগ্রাফার রোমান মাজার সেক্রেটারিকে বললেন, ‘মামু না চাইলে তো আমাদের সিনেমাই হবে না। মামু চাইছে বলেই তো আমরা এখানে চলে আসছি। নইলে আমরা কোথাকার কারা, এখানে আসব কেন?’ রোমানের কথায় সেক্রেটারি কড়া প্যাঁচে পড়ে গেলেন। আমতা আমতা শুরু করলেন। আমিও রোমানের কথা থেকে সোর্স পেয়ে গেলাম। বললাম, ‘মামু সবার। মামু কারো একার না। মামু না থাকলে আমরা থাকতাম না!’ মামুবাজি করেই ওখানে আমরা শুটিং করেছি সেলুনের সেট বানিয়ে। শুটিংয়ের সেট দেখেই কাঁটার অভিনেতা অনিমেষ আইচ বলল, ‘বাহ। টোকন দা, তোমরা তো একটা রিয়েল সেলুন ঘরই পাইছ।’
পাইনি, আমরা চায়ের দোকানকে সেলুনে রূপান্তরিত করেছি ৩ দিনে। বাকি ৩ দিন শুটিং ওখানে। এই সেলুন ঘরই কাঁটা গল্পের মূল স্টেশন। চা-পুরির দোকান, বিভিন্ন গলি-উপগলি, অন্যান্য মহল্লাবাসীদের বাড়ি, আবদুল আজিজ ব্যাপারীর বাড়ি তো সেলুন ঘরের বেঞ্চে বসে বলা গল্পেরই এক্সটেনশন-ভিজুয়ালাইজেশন। কিন্তু আমরা তখনো নারিন্দায় যাইনি, আমরা তখনো মামুর মাজারে যাইনি, আমরা আছি মগবাজার কাঁটা ক্যাম্পে। ক্যাম্পে আমাদের কাঁটা টিম ও অডিশনে আসা পাত্রপাত্রীদের সঙ্গে আমরা রিহার্সেল করি। কাজ গোছাই। স্ক্রিপ্ট ব্রেকডাউনের পর ব্রেকডাউন হতে থাকে। কাঁটা ক্যাম্পে একদিন আসেন চলচ্চিত্র নির্মাতা জাহিদুর রহিম অঞ্জন ও পরিচালক অনিমেষ আইচ। আমরা আড্ডাবাজি করি। অঞ্জন’দার সঙ্গে জীবনে বহু সময় কেটেছে ত্রি-ভুবনের আলো অন্ধকারে। সিনেমা, কবিতা, চিত্রকলা সব কিছুতেই অঞ্জন’দার সঙ্গে জমে যায়। ঘনিষ্ট অগ্রজের সঙ্গে সম্পর্ক যে রকম হয় আর কী, সেরকমই। আর অনিমেষ, চারুকলা স্কুলের ছাত্র। যে স্কুলে আমিও গেছি। বোঝাপড়া আমাদের খুব ভালো। আমাকে মাঝেমধ্যেই মাঝরাতে ফোন করতেন আমজাদ হোসেন। ফোন করে কাগজে প্রকাশিত আমার কবিতা থেকে তিনি কিছু উদ্ধৃতি দিয়ে ফোনালাপ জমিয়ে দিতেন। একদা কবি আল মাহমুদ ও আমজাদ হোসেন একসঙ্গে ঢাকার কমলাপুরে ছিলেন কিছুদিন। আমজাদ হোসেনের গল্প-উপন্যাস-সিনেমার সঙ্গে আমার পরিচয় সেই ছোটোবেলা থেকেই, যখন আমি ঝিনাইদহে বড়ো হয়ে উঠছিলাম। জহির রায়হানের পলিটিক্যাল প্রোজেক্ট ‘জীবন থেকে নেয়া’র স্ক্রিপ্ট ছিল আমজাদ ভাইয়ের। ভাত দে, গোলাপি এখন ট্রেনে… কত ছবি তাঁর বিখ্যাত। আমজাদ ভাই একদিন ক্যাম্পে এলেন। অনেক কথা হলো। সেইই আমার প্রথম আমজাদ হোসেনের সঙ্গে মুখোমুখি বসে আড্ডা। আমার ইচ্ছে কিন্তু আমজাদ ভাইকে দিয়ে একটি চরিত্র করিয়ে নেওয়া। কাঁটার আবদুল আজিজ ব্যাপারী চরিত্র করতে বললাম তাঁকে। তিনি বললেন, ‘বাসায় যাই। আমার ছেলেরা যদি অনুমতি দেয়, করব। কেবল সিঙ্গাপুর থেকে ফিরলাম, আমি এখনো অসুস্থ।’
আমজাদ হোসেন তখন অনেকটাই স্বাস্থ্যহানির শিকার। হলো না। আমজাদ ভাই হাসপাতাল-বাসা করছেন প্রায় প্রায়ই। আজিজ ব্যাপারী চরিত্রে আমি কাকে নিতে পারি? ওল্ড ঢাকা একসেন্ট জানা না থাকলে হবে না, সে যত বড়ো অভিনেতাই হোক না কেন! আর ওল্ড ঢাকা ভোকাবুলারি ভালো পারবেন যার জন্মই হয়েছে পুরান ঢাকায়, তেমন একজন। ষাটোর্ধ্ব তো হতেই হবে বয়স। হাল্কা দাঁড়ি-গোঁফ থাকবে এবং যা প্রায় পাকা পাকা। শাদা শাদা কালা কালা। কোনোভাবেই ওল্ড ঢাকার ওরালিটি থেকে ঘাপলা রাখার সুযোগ নেই আবদুল আজিজ ব্যাপারীর চরিত্রে। কাঁটা ক্যাম্পে বেশ কিছুদিন রিহার্সেল হয় খুবই শক্তিশালী অভিনেতা তারিক আনাম খানকে নিয়ে। তারিক ভাইকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি যখন চারুকলায় পড়তাম, তখন থেকেই। আমিও ‘নাট্যকেন্দ্র’র সদস্য ছিলাম। ছিলাম বলতে সেই মিড নাইনটিজের কথা। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকি তখন। হল থেকে বেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মগবাজার যেতাম তারিক ভাইয়ের বিজ্ঞাপনী অফিসে। সেখানেই ‘নাট্যকেন্দ্র’র নাটকের রিহার্সেল হতো। ‘বিচ্ছু’ তুঘলঘ, হয়বদন—এসব প্রোডাকশন ছিল তখন নাট্যকেন্দ্রের। তারিক ভাই দলপ্রধান। কিন্তু কাঁটার আজিজ ব্যাপারীর চরিত্রে তারিক ভাইকে কাস্ট করার ব্যাপারে একটা সমস্যা ছিল আমার মনে। তারিক ভাইয়ের বেড়ে ওঠা দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে। তাই পুরান ঢাকা হয়তো টুয়েন্টি পার্সেন্ট পাব না তাঁর কাছে। তাছাড়া তারিক ভাই নানারকম প্রোডাকশনে ব্যস্তও, আর আমার দরকার পর্যাপ্ত সময় দিতে পারা একজন অভিনেতা।
সেই সময় তারিক ভাই দিতে পারবেন না বা পারার বাস্তবতা তারিক ভাইয়ের নেই আর। তাই রিহার্সেল করলেও, আমি মনে মনে পুরান ঢাকায় বেড়ে ওঠা সিনিয়র কোনো অভিনেতা খুঁজছিলাম। তারিক ভাইয়ের সঙ্গে বিজ্ঞাপন নির্মাণেও শিক্ষানবিশ সহকারী হিসেবে কাজ করতাম আমি, সেই সাতানব্বুই-আটানব্বুই সালে। যাই হোক, বেশ কজন সিনিয়র অভিনেতার সঙ্গে আমার কথা হয়। কিন্তু সব কিছু মিলিয়ে হয় না। ম হামিদ, প্রবীর মিত্র, আসাদুজ্জামান নূর, আমজাদ হোসেন, এ টি এম শামসুজ্জামান, সূত্রাপুরের পলাশ ভাই, লেখক বুলবুল চৌধুরী— না, মিলছে না। বুলবুল ভাই শিংটোলার মানুষ, পুরান ঢাকা জানেন বা পারেন কিন্তু তাঁকে এত বড়ো চরিত্র দেওয়ার ঝুঁকি নিতে পারিনি। তাই আরও কজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে, আবদুল আজিজ ব্যাপারীর চরিত্রে কাউকে না পেলেও কাঁটা টিম মগবাজার থেকে নারিন্দায় চলে যায়। মগবাজার ক্যাম্পে ছিলাম আমরা ৪/৫ মাস। মগবাজার ক্যাম্পেই আমরা কাজ গুছিয়ে আনি আশি ভাগ। যাকে বলে প্রি-প্রোডাকশন, সেটা মগবাজারেই হয়। সেন্ট্রাল লোকেশন আবদুল আজিজ ব্যাপারীর সেই মাটির উঠোনওলা বাড়ি পেয়ে গেলেই মগবাজার থেকে চলে যাব—এরকমই ভাবনা আমার। আর যতখানি প্রপস, কস্টিউম জোগাড় করে নেওয়া যায় তিন-চারশো লোকের। তখনো আমাদের কয়েকজন স্বপ্নার মধ্যে হয়তো একজন স্বপ্নার ঘাটতি ছিল। হয়তো একজন সুবোধের কমতি ছিল। ছিল মানে খুঁজে মিলিয়ে নিতে পারিনি। খুঁজে চলেছি। অনেক মানুষের ভিড়ে কে সুবোধ, তখন তাই খুঁজছি আমি। অনেক মানবীর ভিড়ে স্বপ্নাকে খুঁজছি আমি। ‘ছুবোধচন্দ্রের বিবিজানের নাম ছপ্নারানি দাছ।’ তারা আবদুল আজিজ ব্যাপারীর বাড়িতে ভাড়াটিয়া হয়ে আসে, ভূতের গলিতে। তারপর কী হয়? কী হলো? সে সব আপনারা দেখবেন কাঁটা ছবিতে। বড়ো পর্দায়। আর কয়েক দিন পরেই। এ বছরেই। ২০২৩ সালেই। কাঁটা একটা বড়ো প্রোজেক্ট। আর আমিও প্রোডিউসার হিসেবে কোটি টাকার মালিক হয়ে কাজটা করতে বসিনি। বাজারের প্রোডিউসারের সঙ্গে আমার মেলেনি। আমিও নত হতে যাইনি। বাজারের নটনটীদের সঙ্গে আমার মেলেনি। আমিও তেলাতে যাইনি। আমার ছবি, আমার ইচ্ছেতেই হবে। আমার কবিতা যেমন আমার ইচ্ছেতেই রচিত কবিতা। আমার ভাবনা যেমন আমারই ভাবনা। আমার স্বপ্ন, প্রণয় যেমন একান্তই আমার। কাজেই, চারুকলা স্কুলে পড়ার অভিজ্ঞতা, বহু কিছু করে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা বা সামগ্রিক লিটারেচার তুলোধুনো করে, যা আমি পাঠ করেছি, আমি মানুষের জীবন যেভাবে বয়ে যেতে দেখেছি বা দেখি, আমার সময়কে আমি লিপিবদ্ধ করতে চাই বা চেয়েই কাজ করি। কাঁটা তারই ঘনীভূত রূপ। আমার মানুষ-ভাবনার দৃশ্যমান কর্মকাণ্ড।
ক্যামেরার সামনে অভিনেতা দাঁড়াবে বা বসবে না শোবে, কাঁদবে না হাসবে—নাচবে না কুর্দন করবে, এর কোনো কিছুই নট বা নটী নির্ধারণ করবে না। করবে ডিরেক্টর। এটাই ডিরেক্টর্স মিডিয়ার সার কথা। শেষ কথাও। অতএব কাউকে অনেক বড়ো অভিনেতা বলে যে ট্যাগিং দেওয়া হয় সেটা একটা বাণিজ্যিক আদিখ্যেতা। বরং একটি পুতুল হয়ে যাওয়া ছাড়া অভিনেতা বা অভিনেত্রীদের আর কী-ইবা করার থাকে ক্যামেরার সামনে? কাজেই, আমার দরকার চলমান প্রপস। যে প্রপসকে নির্দেশ করলে নির্দেশ অনুযায়ী চলাফেরা করতে পারে, সেটাই চলমান প্রপস। সেই প্রপসই লাগে ক্যামেরার সামনে। যে যতখানি কথা বুঝতে পারা প্রপস, সে ততটা ভালো শিল্পী। ডিরেক্টরের শ্বাসপ্রশ্বাস, পাঁজরের ধুকপুকানিই নির্মিত হয় পাত্রপাত্রী বা নানারকম প্রপসের মাধ্যমে। সংলাপের মাধ্যমে। শব্দ-দৃশ্যের মাধ্যমে। এইই আমার কাছে ছবি। যাবতীয় আয়োজন শুধু নির্মাতার স্বপ্ন নির্মাণে। পাত্রপাত্রীদের নামে ছবি পরিচিতি পেলে সেই ছবি আর কতটুকু ভালো ছবি হলো? এ প্রশ্ন আমার বহুদিনের। আমি ফিল্মের কোনো সংগঠন করিনি। কবিতার কোনো সংগঠনে যুক্ত হইনি কোনো দিন। কথিত স্টারডমেও আমার ভক্তি-আস্থা নেই। স্টারডম দর্শকের অ্যাটেনশন নিতে একটা বাণিজ্যিক মিডিয়াবাজি। এর সঙ্গে ভালো ছবির কোনো সম্পর্ক নেই। নির্মাতা হিসেবে নিজের কথাটি কতটা বলা গেল, সেটাই প্রশ্ন। আমি সেই প্রশ্নে মীমাংসা চেয়েছি নিজের কাছে। নইলে, কাঁটা গল্পটিই বা চিত্রনাট্য করতে গেলাম কেন? কোটি টাকার উপরে বাজেট তবু নিজেই প্রযোজনা করতে গেলাম কেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে! আমার ইচ্ছে। আমার ইচ্ছেই একটা পাখির ইচ্ছে। আমার ইচ্ছে ভালোবাসার ইচ্ছে। কী করব?
১৯২৫ সালে ঢাকা শহরের হৃষীকেশ দাস লেনে জন্মগ্রহণ করেন ঋত্বিক কুমার ঘটক ও তাঁর যমজ বোন প্রতীতি দেবী ঘটক। তাগো ডাকনাম ভবা ও ভবি। ভবাকে আমি দেখিনি। ভবার ছবিগুলো দেখেছি। অনেকবার করে দেখেছি। একই মায়ের পেট থেকে জন্মানো যমজ ভাইবোন যে দুই দেশের নাগরিক হয়ে যেতে পারে, ঋত্বিক ও প্রতীতি দেবী তার উদাহরণ। তাই কোলকাতার ঋত্বিকের ছবিতে বাংলাদেশ মুখ্য হয়ে ওঠে। দেশভাগ তাঁর গল্পের পাটাতন হয়ে দাঁড়ায়। প্রতীতি দেবী থাকতেন সেঞ্চুরি টাওয়ারে, তাঁর মেয়ে বর্তমান পার্লামেন্ট মেম্বর আরমা দত্তের সঙ্গে। আরমা’দির ভাই রাহুল দত্ত, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নাতিছেলে। মগবাজারের কাঁটা ক্যাম্পের খুব কাছেই সেঞ্চুরি টাওয়ার। অনেকবছর ধরেই, মাঝেমধ্যেই প্রতীতির সঙ্গে আড্ডা দিতে যেতাম। অনেক গল্প হতো দিদির সঙ্গে। দিদির সঙ্গে গল্প হলে ঋত্বিকের প্রসঙ্গ তো উঠবেই। একদিন দিদিই বললেন, ‘আমার জন্য কি আর আমার কাছে আসো, আসো তো ভবার জন্য। ও তো কিছু ছবি বানিয়েছে, আমি তো কিছুই করিনি। ভবা আর আমি একসঙ্গে পৃথিবীতে এসেছিলাম, কিন্তু ও আমাকে রেখে কত আগে চলে গেছে!’ প্রতীতি দেবীর ছেলে রাহুল দত্ত প্রায় প্রায়ই আমাকে ফোন করেন। অনেক কথা হয় রাহুল’দার সঙ্গে। ষাটের ঘরের শিশু রাহুল’দা। কাঁটা টিমের কয়েকজনকে নিয়ে গেলাম ভবা-ভবির জন্মদিনে। অনেক আনন্দ হলো। কিন্তু দিদি চলে গেলেন! কাঁটা দেখা হলো না দিদির। মানুষের কতরকম আফসোস থাকে, মানুষের কতরকম অপূর্ণতা থাকে। আমারও আছে। মনে আছে, প্রতীতি’দি একদিন কথায় কথায় বলেছিলেন, ‘দীর্ঘ আয়ু অভিশাপ হয়ে যায়। আমি মরে গেলে আমার লাশ দেখতে আসবে না। আমার জীবিত মুখটাই বেঁচে থাক তোমার কাছে।’ তবু দিদির প্রয়াণের পর আমি সেঞ্চুরি টাওয়ারে যাই। তবে দিদিকে দেখব না দেখব না করেও একসময় দেখি লাশবাহী গাড়িটা একদম কাছে চলে এলো। দিদি তাঁর শরীর মেডিকেলের জন্য দান করে গেছেন।
ঋত্বিক ঘটকের ছবি ‘তিতাস একটি নদীর নাম’-এ কিশোর মালো ছিলেন প্রবীর মিত্র। ছবিতে কবরী ছিলেন তাঁর বউ। কাঁটা ক্যাম্পে এই স্বামী-স্ত্রীকে একসঙ্গে বসে দেখতে চেয়েছিলাম। কবরী আপা শিডিউল রক্ষা করতে না পেরে এলেন না, প্রবীর মিত্র এলেন। আজকের ভগ্নস্বাস্থ্যের প্রবীর মিত্র ছিলেন তিতাসের কিশোর মালো। সময় কেমন ভেঙে দিয়ে যায় শরীর, সময় কেমন অচেনা হয়ে পড়ে চোখের সামনে। প্রবীর’দাও বলেন, ‘ছবি তো করেছি তিন-চারশোর বেশি। কিন্তু ঋত্বিক’দার সঙ্গে যে তিতাস, ওইটাই আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে, বাঁচিয়ে রাখবে।’ মগবাজার কাঁটা ক্যাম্পে তিতাসের অভিনেতা প্রবীর মিত্রের সঙ্গে আমাদের খুবই আনন্দে কাটে একবেলা। বললাম, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’-এ আপনার প্রথম দিনের শুটিংয়ের শট কোনটা ছিল?’ প্রবীর দা বলেন, ‘কবরীর সঙ্গে আমার বিয়ের পর বাসর ঘরের শটটা।’ অর্থাৎ রাতের শট। কবরী নববধু সেজে দাঁড়িয়ে কাঁপছেন, তাঁর ঠোঁট শুকিয়ে যাচ্ছে, তাঁর বুক ওঠানামা করছে, তাঁর নিশ্বাস ঘন হচ্ছে। ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছে লীলাবালি লীলাবালি। তাগড়া কিশোর মালো কম্পনরত কবরীকে বুকে ধরে বিছানায় গড়িয়ে পড়ে। তরুণ প্রবীর মিত্র আর তরুণী কবরী। তাঁদের পাশাপাশি রেখে এত বছর পর দেখতে চেয়েছিলাম, কবরী আপা এলেন না। প্রবীর দা বললেন, ‘উনার তো নাক উঁচু। ঋত্বিক’দার সেটে শটের বাইরে আমার সঙ্গে একটা কথাও বলেননি।’ ইশ, করোনাকালে কবরী আপাও চলে গেলেন। একদিন জাতীয় জাদুঘরে কবরী আপার চল্লিশ বছরের কর্মের উপরে আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে আমি বলেছিলাম, ‘আমি আপনাকে ঘুমের মধ্যে দেখতাম ছোটোবেলায়। ঘুম ভাঙলেও আপনার মুখ মনে পড়ত। খালি মনে হতো, ‘আপনার জন্ম কেন এত আগে আগেই হয়ে গেছে? আর আমার কেন এত পরে জন্ম হইছে? আপনার মিষ্টি মুখটা মনের মধ্যে রয়ে গেছে আমার।’ কবরী আপা বললেন, ‘ও সব কথা বাদ, এখন আমার ছবি দ্যাখো প্রদর্শনীতে।’
কবরী আপা চলে গেছেন। প্রবীর মিত্র শারীরিকভাবে অনেকটাই ঘরবন্দি। কিন্তু তিতাস রয়ে গেছে। সেই মালোপাড়া রয়ে গেছে ঋত্বিক কুমার ঘটকের ছবির ভেতর দিয়ে। কবরীর সেই লাস্যময়ী মুখটা রয়ে গেছে। থেকে যাবে। কাঁটাকে একটি ভালো ছবি হিসেবে দাঁড় করাবার জন্য আমি প্রাণান্তকর পরিশ্রম করে যেতে তুমুল উৎসাহী আছি। উৎসাহ আমার কমেই না। আমি হয়তো বহুকাল পাতালপুরীর নির্জনতার মধ্যে ঘুমোচ্ছিলাম, আমাকে কেউ জাগিয়েছে, আমি ঘুম থেকে উঠে দেখি সে অপসৃয়মান। অবলীলা এসে অবলীলায় চলে গেছে। আমি জানি না, যিশুর মুকুটে কাঁটা কেমন, আমার মাথায় যে কাঁটা, আমার দুচোখে কাঁটা, আমার বুকের মধ্যে কাঁটা। আমি ও আমরা একটা জার্নির মধ্যে আছি। জার্নির নাম, জার্নি অব কাঁটা। অতএব, এই পর্বে টা টা…
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা ১ম পর্ব
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা ২য় পর্ব
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা ৩য় পর্ব
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা ৪র্থ পর্ব
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা ৫ম পর্ব
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা ৬ষ্ঠ পর্ব
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা ৭ম পর্ব
আরও পড়ুন : জার্নি অব কাঁটা ৮ম পর্ব
জন্ম ১ ডিসেম্বর, ১৯৭২, ঝিনাইদহ। বেড়ে ওঠা, বসবাস: ঝিনাইদহ, মাগুরা, যশোর, খুলনা ও ঢাকা। একাডেমিক (সর্বশেষ) পড়ালেখা: চারুকলা ইন্সটিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। গ্রন্থ প্রকাশনা: কবিতার বই কয়েকটি, গদ্যের বই কয়েকটি। সম্পাদিত গ্রন্থ: ২টি। ছবি নির্মাণ: ‘ব্ল্যাকআউট’ (২০০৬) আনরিলিজড। ‘রাজপুত্তুর’ (২০১৪), ‘কাঁটা’ (২০২৩) । পেশা: আর্ট-কালচার চষে বেড়ানো।