বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১

নির্বাচিত দশ কবিতা: গৌতম চৌধুরী

0

অতিকথা

উৎসর্গ : রাণা রায়চৌধুরী | কামরুজ্জামান কামু


১.
শূন্যের উপর দিয়া সাইকেল চালাইয়া যাইতেছে এক জলফড়িং
তোমরা সন্দেহপ্রবণ
বলিবে, চাকার নিচে নির্ঘাত সূক্ষ্ম একটি সুতা টাঙানো রহিয়াছে
আছে তো আছে। দেখিতে কি পাইতেছ?
বিশ্বসংসারের দায় তো সে নেয় নাই
হাত দুইপাশে মেলিয়া প্যাডেল ঘুরাইতে ঘুরাইতে
ঢেউ-খেলানো শূন্যের উপর দিয়া দিব্য দুলিতে দুলিতে চলিতেছে
ফুর্তিতে চোখ-মুখ আলো হইয়া উঠিতেছে
তোমরাও লও না কেন সেই ফুর্তির একটু ভাগ
উঠিয়া আস এই শূন্যের উপর
দ্যাখো, উঁচু-নিচু শূন্যের উপর দিয়া তোমরাও পারিবে
ওইভাবে সাইকেল চালাইয়া দিতে
দুই হাত দুই পাশে মেলিয়া প্যাডেল ঘুরাইতে ঘুরাইতে
দিব্য মেঘলা প্রান্তর পার হইয়া যাইবে
শহরগুলিতে যাহারা যুদ্ধ করিতেছিল
তাহারাও তোমাদের ওইভাবে দেখিয়া থমকাইয়া যাইবে
সদর দপ্তর হইতে এত্তেলা আসিবে– গোলাবর্ষণ বন্ধ হইল কেন?
জলফড়িং ফুর্তিতে হাসিয়া উঠিবে পিঁ পিঁ
কীভাবে যেন সেই হাসির শব্দে দুনিয়ার সব পরমাণু বোমা নিষ্ক্রিয় হইয়া গেল
হায় হায়, দ্যাখো, দুনিয়ার সকল প্রেসিডেন্ট উঠিয়া আসিয়াছে
তাহাদের নিজ নিজ প্রাসাদের ছাদে
আর দেখিতেছে শূন্যের উপর চলমান তোমাদের সাইকেল
তাহারা এখন হাসিবে কি কাঁদিবে বুঝিয়া উঠিতে পারিতেছে না
একবার সবাই মিলিয়া হাত নাড়িয়া দাও উহাদের দিকে
দ্যাখো দ্যাখো, উহারাও সাইকেল আনাইয়া লইতেছে
একবার শূন্যে উঠিয়া আসিলে, উহারাও ফুর্তিতে খিলখিল করিয়া হাসিবে
ক্ষেপণাস্ত্রগুলি অমনই ভোঁতা হইয়া যাইবে
কামান-বন্দুক-গুলি-গোলা সব বিলকুল বরবাদ!
প্রেসিডেন্টগুলি হাসিতেছে, কেবলই হাসিতেছে…

১৫-০৫-২০১৭


২.
হায় রে তত্ত্বকথা! এই দিয়া তুই কি বাজাইবি বীণা?
গাধার রচিত সংগীততত্ত্বের পাতা উলটাইয়া বলিলেন গুরু
গাধা আর কী করে, নদীতীরে আসিয়া ম্লানমুখে বসিয়া রহিল অনেকক্ষণ
তাহার পর একটি একটি করিয়া পাতা ছিঁড়িয়া, নৌকাবানাইয়া ভাসাইয়া দিল
খাল-বিল-দহ-নালার দেশ আমাদের
নৌকাগুলি ভাসিতে ভাসিতে দিকে দিকে জলে-পানিতে ভাসিয়া গেল
মাঝি মাল্লারা একে একে দখল করিল সেইসব নৌকা
তাহাদের আর কসুর কী! ঘাটে ঘাটে যাত্রী বেশি, নৌকা কম
মানুষ বোঝাই করিয়া ফেরি পারাপার হইতে লাগিল সেইসব নৌকায়
কাগজের হইলে কী হয়, তত্ত্বকথায় ঠাসা। দিকভুল হইবার জো নাই
কাজেই ভালোই পরিষেবা দিতে লাগিল তাহারা
একদিন এক ফকির উঠিয়াছে সেই এক নৌকায়
বাতাসে তাহার দাড়ি উড়িতেছে
আর গুনগুন করিয়া কী এক সুর ভাঁজিতেছে সে
গানের সুরে আকাশ-বাতাস-মানুষ-জল সব মিলিয়া মিশিয়া একাকার
গান শুনিয়া সবাই যখন বিভোর, হঠাৎ ঘ্যাঁচ করিয়া থামিয়া গেল নৌকা
লোকজন বলে– সামাল সামাল
মাঝি বলে– চড়া নাই বালু নাই, কোথায় ঠেকিল নৌকা!
নৌকা বলিয়া উঠে– গান থামাও হে ফকির, গান থামাও
কোনও একটা তত্ত্বকথাকে আঁকড়াইয়া ধরিয়াই আমাদের জলে ভাসা
তোমার মতো সবকিছু আওলাইয়া দিলে এই নৌকাজনম চলিবে?
গাধা এইসবের কিছুই জানে না
সে এখন আর একখানি বহি লিখিতেছে– বীণা বাঁধিবার সহজ উপায়…

১৬-০৫-১৭


৩.

জ্ঞানী বলিয়া নহে, বুড়া-কাক বুড়া বলিয়াই
তাহাকে আজ সভাপতি করিয়াছে ছোকরা-ছুকরির দল
বুড়া সেকথা আমলে লয় নাই
এদিকে তরুণেরা ভাবিয়াছিল, এ-বুড়া বসিয়া বসিয়া ঢুলিবে
আর সভার পুরা সময়টা তাহারাই আমোদ করিবে
কিন্তু জাগিয়া যখন আছে, কিছু বলিতে দিতে হয়
বুড়া কোনওদিন কোনও সভায় বক্তৃতা দেয় নাই
আজ যে তাহার কী হইল!
কে যেন ভিতর হইতে সাজায়ে গুছায়ে দিতে লাগিল কথা
সে বলিতে লাগিল– আমরা আর কয়দিনই বা আছি?
তরুণেরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। কিন্তু মনে রাখিও–
মানুষের উচ্ছিষ্টের দিকে তাকাইয়া বসিয়া থাকিলে চলিবে না
কাকেদের আকাশে কি কোনও ভাগাভাগি আছে?
মানুষই এই দুনিয়াকে ভাগ করিয়াছে
এখনও কেবল মারামারি কাটাকাটি করিয়াই চলিতেছে
এই বিষয়ে আমার একটি প্রস্তাব আছে
যখনই উহাদের কোন্দল করিতে দেখিবে
যে যেখানেই থাক’, উহাদের মাথায় বিষ্ঠা করিয়া দাও
তবে যদি উহাদের চৈতন্য ফিরে
এই অবধি বলিয়াছে বুড়া, এমন সময় কোন্‌ এক মানবশিশুর গুলতি হইতে
সাঁ করিয়া একটি ঢিল সটাং আসিয়া লাগিল তাহার মাথায়
মুখ থুবড়াইয়া সে সোজা গিয়া পড়িল মঞ্চের নিচে
সভাস্থ কাকেরা সমস্বরে হা হা করিয়া উঠিল …

২২-০৭-২০১৭


৪.

জীবাশ্ম কি ভাবিতে পারে! কথার খাতিরে ধরা যাউক পারে
একটি ডাইনোসরের জীবাশ্ম
শ্যাওলা-ধরা এক পেল্লায় পাথরখণ্ডের গায়ে লেপটাইয়া, এখন ভাবিতেছে–
আমাদের হাতে পৃথিবীর ভবিষ্যৎ কী-এমন হুমকির মুখে ছিল?
সমুদ্রের ভিতর উল্কাপাত হইয়া সেই যে ভূগর্ভ ফাটিয়া গেল
লাভা উদ্গীরণ হইয়া সেই যে ধূমে-ভস্মে আসমান ঢাকিয়া গেল
সেই যে তাহার পর বিপুল অন্ধকার নামিয়া আসিল
আর প্রবল ঠান্ডায় সেই যে আমরা বিলুপ্ত হইয়া গেলাম–
ইহাতেই নাকি সব স্তন্যপায়ীদের বাড়বাড়ন্ত হইল!
ফলত এই যে ক্রমে মানুষ আসিল
আসিল তাহার দুনিয়াজোড়া মাস্তানি
আর এই যে আবহমণ্ডল ক্রমেই গরম হইয়া যাইতেছে
এই যে পৃথিবীর বেশির ভাগ অচিরেই নোনা জলে ডুবিয়া যাইবে
আর বাকি সবাইকে এই নরককুণ্ডে ফেলিয়া এই যে
সামান্য কিছু মানুষ পলাইবে গ্রহান্তরের দিকে–
আমরা কি ইহাদের হইতেও হিংস্র ছিলাম?
ভাবিতেছে, একটি জীবাশ্ম, ডাইনোসরের
কিন্তু জীবাশ্ম কি ভাবিতে পারে…

২২-০৭-২০১৭


৫.

কিছুই করিবার নাই
নিছক অভ্যাসবশে এক ঠ্যাং হাঁটু অবধি জলে ডুবাইয়া
মরা নদিটির ধারে বসিয়া থাকে বক
মাছ ধরিতেও আর ইচ্ছা করে না
সে শুধু আলোর খেলা দ্যাখে
দ্যাখে, প্রহরে প্রহরে কীভাবে রং পাল্টাইয়া যায় এই সামান্য জলের
এত কারসাজি, সে যদি কিছুটাও ডানায় করিয়া উড়াইয়া লইয়া যাইতে পারিত!
ভাবিতে ভাবিতে মন একই সাথে আনন্দ ও বিষাদে ভরিয়া উঠে
এমন সময় পাড় হইতে দুইজন মানুষের কথোপকথন কানে আসে তাহার
একজন আরেকজনকে হাসিতে হাসিতে বলিতেছে–
এই যে নদীটা দেখিতেছিস, ওই বামদিক আর এই ডানদিক
দুইদিকেই এক মাইল করিয়া কিনিয়া লইতেছি, পরশুদিন বায়নামা
নদীর সাথে কি এই আলোর ঝিলিমিলিগুলিও কিনিয়া লইবে লোকটা!
এই প্রথম চিল হইতে সাধ হইল তাহার
চিল হইয়া লোকটির মাথায় ঠুকরাইয়া দিতে পারিলে বেশ হইত
ভাবিয়াই লজ্জা পাইল বক
নদীতে পড়িয়া-থাকা আকাশে তখন গভীর বেগুনি রং ধরিয়াছে …

২৮-০৭-২০১৭


৬.

গিন্নিমার বঁটির মুখ হইতে লাফাইয়া
ছাইমাখা কৈ তড়বড় করিয়া উঠিয়া আসিয়াছে তালগাছের চূড়ায়
দুই-চারিজন অবাক হইয়া সেই ছাইমাখা রূপ দেখিতেছে
কেহ বা হাতজোড় করিয়া প্রণামই ঠুকিয়া দিল
ভিড় বাড়িতেই লাগিল
এইসব ছাইভস্ম দেখিয়া তোরা কি ভাবিতেছিস যোগী হইয়াছি আমি
আর যোগবলে উঠিয়া আসিয়াছি এই তালগাছের মাথায়?
হা হা হা, সমবেত জনতার দিকে তাকাইয়া হাসিল কৈ
লোকে ভাবিল ইনি নির্ঘাত সিদ্ধপুরুষ কোনও
হয়তো স্বয়ং মৎস্য-অবতারই বা হইবেন
এতসব কাণ্ড দেখিয়াও, গিন্নিমা-র হুলা বিড়ালটি তবু ভড়কায় নাই
ভিড় ঠেলিয়া আগাইয়া গোঁফ চাটিয়া সে আওয়াজ করিল– মিঞাও
তালগাছ ঢের উঁচু, চূড়ায় পৌঁছাইবার ক্ষমতা তাহার নাই
তাহাতে কী! এই ভিড় সামলাইবে কে?
এই, তোমরা সব লাইন দিয়া দাঁড়াও
আর এই প্রণামীর বাক্সে চারি আনা করিয়া ফেল
কৈ-এর লেজ হইতে একটু ভস্ম ঝরিয়া পড়িল
হুলার কপালের ঠিক মাঝখানে
তিলক পরিয়া হুলা হাঁকিল– জয় মছলি অবতারের জয়
জনতা সাড়া দিল– জয় বিল্লি মহারাজের জয়…

২৯-০৭-২০১৭
২০-১০-২০১৭


৭.

মনের পশুকে বলি দিবার জন্য তাগড়াই এক বলীবর্দকে
অনেক কাহন দিয়া কিনিয়া, নাকে দড়ি পরাইয়া টানিয়া লইয়া যাইতেছে
খুশি-উজল পরহেজগারের দল
ক্ষুধা ও পুণ্য একই ছুরিতে হাসিল করিবে তাহারা
ষণ্ড বাবাজীবন টের পাইতেছে সবই
চলিতে চলিতে ঘাড় নাড়াইয়া নাড়াইয়া সে ভাবিতেছে–
না বলিয়া কিছুই নাই এই দুনিয়ায়, পুরাই বেবাক এক হাঁ
পুরাই এক ত্রিভূবনকম্পিত মুখবিবর
পানি, না কি আন্ধার, না কি অষ্টম মাসের গর্ভের মতো শূন্য
পাক খাইয়া খাইয়া ছুটিতেছে
ব্যথা নাই বেদনা নাই দুঃখ নাই ভিরকূটি নাই
খোল করতাল বাজাইতে বাজাইতে সবাই দৌড় দিতেছে
দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য সেই ব্যাদানের দিকে
উপায় নাই নিরুপায় নাই গলায় সুর আছে কি নাই
চিল্লাইয়া মিল্লাইয়া গান ধরিয়া সবাই ছুটিতেছে
এত হুড়াহুড়ির কোনও অর্থ নাই, এই কথা না-জানিয়াই
লম্ফঝম্প করিতেছে বেবাক
যে যেইখানে খাড়াইয়া আছে, সকল জায়গাই যে ওই গহ্বরের ভিতরে–
কথাখানি আমলে না-নিয়াই ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিতে ঘুরপাক খাইতে খাইতে
গ্রহাণুপুঞ্জ যত, যত তারকামণ্ডলী, অগ্নিপুচ্ছ ধূমকেতু
সকলেই ধিরি ধিরি নাচিতে নাচিতে তালে তালে পা ফেলিয়া চলিতেছে
সে-ই বা থামে কেন? কেনই বা শিং-বাগায়ে ঢুঁসা লাগায় বড়ভাইদের পেটে?
না বলিয়া যখন কিছুই নাই এই দুনিয়ায়
আসমান হইতে জমিন তক যখন পুরাই বেবাক এক হাঁ
দাও বেচারাদের খুশি করিয়া
হাজার হউক, গাঁটের অনেক কড়ি খসিয়াছে তাহাদের …

২৫-০১-২০১৮


৮.

আজ অসময়ে সূর্যের আলো কমিতে আরম্ভ করিয়াছিল
আত্মার ক্ষয় কি চোখে দেখা যায়?
এই প্রশ্ন কাহাকে করিবে সে!
তাই নিজেকেই বিড়বিড় করিয়া শুধাইতেছিল ঝিঁঝি পোকাটি
ঝিঁঝি পোকা না-হইয়া সে কি হরিণও হইতে পারিত?
হরিণ কেবলই ইতস্তত ধাবমান
হরিণের চোখে সন্ত্রাসের ছায়া গভীর করিয়া আঁকা
ঘটনার সেই ঠাসবুনট হইতে দুই মুহূর্ত বাহিরে আসিয়া দাঁড়াইয়াছে ঝিঁঝি
আকাশের মরিয়া-আসা আলোয় চোখে পড়িল
উলটা দিকের গাছের ডালে শালিখ তাহার হলুদ ঠোঁট ঘষিতেছে
এমন সময় সূর্য হঠাৎ কালো হইয়া উঠিল
আকাশে ফুটিয়া উঠিল নক্ষত্রপুষ্পের ঘ্রাণ
এই রাত্রি অলীক
তবু একবার ডাকিয়া উঠিল ঝিঁঝি …

১৮-০২-২০১৮


৯.

বানরের ছানাটি ছোটকাল হইতেই বড় চঞ্চল
দলছুট হইয়া এদিক সেদিক শটকাইয়া পড়া অভ্যাস
একটু দূরে গিয়া কোনও গাছের মগডালে চড়িয়া
গলা দিয়া নানান ধ্বনি বাহির করাটা তাহার একপ্রকার খেলা
কিন্তু কে না জানে সব খেলার স্বাধীনতা সর্বত্র মিলে না
কাজেই দলের জ্যাঠামশায় একদিন তাহাকে ডাকিলেন
একথা সেকথার পর বলিলেন– আচ্ছা, বলো তো
বাঘ কি কখনও গাধার মতো ডাকে?
নিজের মতো করিয়া না-ডাকিলে কাহাকেও কি চিনা যায় নাকি!
না, তাহা যে যায় না, মানিতেই হইল ছানাকে
তাহা হইলে তুমি গলা দিয়া এতরকম শব্দ বাহির কর কেন
ছানা চুপ
তাহার পর খানিক মরিয়া হইয়া বলিল– সত্য কথা বলিব জ্যাঠা?
দিনের পর দিন একই রকম শব্দ করিতে আমার ভারি একঘেয়ে লাগে
প্রাণে কোনও উৎসাহ পাই না
হয়তো তাই গলার স্বর থাকিয়া থাকিয়া আপসেই বদলাইয়া যায়
জ্যাঠা তো জিন্দেগিতে এমন কথা শুনেন নাই
বানরদের ভিতর কোনও পাগলাগারদও নাই
থাকিলে এই বেআদবটিকে সেইখানেই ঢুকাইতেন
কী আর করেন, দাঁত কিড়মিড় করিয়া অভিশাপ দিলেন– জাহান্নামে যাও
জ্যাঠা পুণ্যাত্মা বানর, কাজেই অভিশাপ তৎক্ষণাৎ ফলিল
সেই হইতে বংশপরম্পরায় আমরা এই জাহান্নামেই আছি…

০২-০৬-২০১৮


১০.

একটি সর্বৈব মিথ্যাকে আশ্রয় করিয়া কাটিয়া গেল এতগুলি দিন :
খোলস ছাড়িবার পর সাপ কি এইভাবে ভাবে?
তেমনটাই যদি ভাবে, তবে তাহার কাছে মিথ্যা হইয়া উঠিয়াছিল কোনটি–
সদ্য ছাড়িয়া-আসা খোলস
না কি মাটির নিচে কাটাইয়া-আসা তিন মাসের কুণ্ডলী-পাকানো ঘুম?
সুযোগ থাকিলে, আরও কিছু প্রশ্ন তুলা যায়
যেমন, ওই লম্বা ঘুমের সময় সে কি স্বপ্ন দেখিয়া কাঁপিয়া কাঁপিয়া উঠিত?
সেসব কি খুব ভয়ের স্বপ্ন ছিল, না আনন্দের?
খোলস ছাড়িবার আগে তাহার কি খুব যন্ত্রণা বোধ হইত?
সাপ সম্ভবত বধির
এতগুলি প্রশ্নকে পিছনে রাখিয়া সে আঁকিয়া বাঁকিয়া চলিয়া গেল
হয়তো আবার কোনও নতুন মিথ্যার আশ্রয় খুঁজিয়া পাইয়াছে সে
যাহাকে এখন ঘোর সত্য বলিয়া ভাবিতে কোনও বাধা নাই …

১৬-০৬-২০১৮

শেয়ার করুন

লেখক পরিচিতি

জন্ম ১৮ ফাল্গুন ১৩৫৮, ২ মার্চ ১৯৫২, কানপুর, উত্তর প্রদেশ, ভারত। শিক্ষা : উচ্চ মাধ্যমিক। পেশা : লেখালেখি। প্রকাশিত বই : কবিতা— কলম্বাসের জাহাজ [১৯৭৭, উলুখড়, হাওড়া] হননমেরু [১৯৮০, উলুখড়, হাওড়া] পৌত্তলিক [১৯৮৩, উলুখড়, হাওড়া] অমর সার্কাস [১৯৮৯, আপেক্ষিক, হাওড়া] চক্রব্যূহ [১৯৯১, আপেক্ষিক, হাওড়া] নদীকথা [১৯৯৭, যুক্তাক্ষর, হাওড়া] আমি আলো অন্ধকার [১৯৯৯, অফবিট, কলকাতা] সাঁঝের আটচালা [২০০২, কীর্তিনাশা, কলকাতা] আধপোড়া ইতিহাস [২০০৪, কীর্তিনাশা, পুরুলিয়া] অক্ষর শরীরে মহামাত্রা পাব বলে [২০০৬, কীর্তিনাশা, পুরুলিয়া] নির্বাচিত কবিতা [২০১০, সংবেদ, ঢাকা] আখেরি তামাশা [২০১৩, ছোঁয়া, কলকাতা] ঐতরেয় [২০১৩, রূপকথা, ক্যানিং] উজানি কবিতা [২০১৪, মনফকিরা, কলকাতা] ধ্যানী ও রঙ্গিলা [২০১৫, চৈতন্য, সিলেট] কলম্বাসের জাহাজ (২য় সং) [২০১৬, রাবণ, কলকাতা] বনপর্ব [২০১৬, সংবেদ, ঢাকা] কে বলে ঈশ্বর গুপ্ত? [ধানসিড়ি, কলকাতা, ২০১৬] বাক্যের সামান্য মায়া [ভাষালিপি, কলকাতা, ২০১৭] রাক্ষসের গান [চৈতন্য, সিলেট, ২০১৭] কবিতাসংগ্রহ [প্রথম খণ্ড, রাবণ, কলকাতা, ২০১৭] ইতস্তত কয়েক কদম [কাগজের ঠোঙা, কলকাতা, ২০১৮] বাজিকর আর চাঁদবেণে [পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি., ঢাকা, ২০১৮]  দীনলিপি [শুধু বিঘে দুই, আন্দুল, ২০১৯]   গদ্য— গরুররচনা (বৈ-বই বা ই-বুক) [২০১২, www.boierdokan.comখেয়া : এক রহস্যময় বিপরীতবিহারের ঝটিকালিপি [কুবোপাখি, কলকাতা, ২০১৭] বহুবচন, একবচন [বইতরণী, কলকাতা, ২০১৮] সময়পরিধি ছুঁয়ে [ঐহিক, কলকাতা, ২০১৮  অবাক আলোর লিপি [অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, নয়াদিল্লি, ২০১৯]    নাটক— হননমেরু [মঞ্চায়ন : ১৯৮৬] অনুবাদ— আষাঢ়ের এক দিন [মোহন রাকেশের হিন্দি নাটক, শূদ্রক নাট্যপত্র, ১৯৮৪] যৌথ সম্পাদনা— অভিমান  (১৯৭৪-৯০), যুক্তাক্ষর (১৯৯২-৯৬), কীর্তিনাশা (২০০২-০৫)  ই-মেইল : gc16332@gmail.com

error: আপনার আবেদন গ্রহণযোগ্য নয় ।