রবিবার, ডিসেম্বর ২২

‘নির্মল আনন্দ আর অপার জানার পৃথিবী পাঠাগার’ —কামরুল হাসান শায়ক

0
Kamrul Hasan Shayok

কামরুল হাসান শায়ক

বাংলাদেশের প্রকাশনা জগতে প্রকাশনা ও মুদ্রণ বিশেষজ্ঞ হিসেবে সুপরিচিত কামরুল হাসান শায়ক। বাংলাদেশের প্রকাশনা-শিল্পকে সমষ্টিগতভাবে বিশ্বমানে উন্নীত করার লক্ষ্যে তিনি প্রায় তিন দশক ধরে নিরলস কাজ করে চলেছেন। অসংখ্য আন্তর্জাতিক বইমেলায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তাঁর ভূমিকা প্রশংসনীয়।

পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুল হাসান শায়কের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি. দেশের অন্যতম প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভূমিকা রাখছে। এ ছাড়া দেশের প্রথম চেইন বুকশপ পিবিএস এবং বিশ্বমানের প্রিন্টিং প্যাকেজিং ইন্ড্রাস্ট্রির মাধ্যমে প্রকাশনাশিল্পে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। যিনি প্রকাশনাকে দেখেন শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির সম্মিলন হিসেবে। ভাবেন শিশুদের মনস্তত্ত্ব নিয়ে, তরুণদের উন্নত মানস গঠনে রয়েছে তাঁর একান্ত ভাবনা। তিনি বর্তমানে এশিয়া প্যাসিফিক পাবলিশার্স এসোসিয়েশন-এর কো-পাবলিশিং, ট্রান্সলেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন ওয়ার্কিং কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছেন।

তিনি ছোটোদের জন্য যেমন লিখেছেন, লিখেছেন বড়োদের জন্যও। তাঁর প্রকাশিত প্রকাশনা বিষয়ক বই তিনটি, শিশুতোষ বই দুটি এবং একটি কবিতার বই রয়েছে। তাঁর প্রকাশিত কবিতার বই ‘এলোমেলো দুঃখগুলো’ (১৯৯৮)। শিশুতোষ বই ‘জেমি ও জাদুর শিমগাছ’ (২০০৩), ‘মৎসকুমারী ও এক আশ্চর্য নগরী’ (২০২০)। প্রকাশনা বিষয়ক বই ‘মুদ্রণশৈলী নান্দনিক প্রকাশনার নির্দেশিকা’ (২০১৮), ‘পাণ্ডুলিপি প্রস্তুতকরণ, সম্পাদনা ও প্রুফরিডিং’ (২০১৯), এবং ‘পুস্তক উৎপাদন ব্যবস্থাপনা’ (২০২০)। পাঠাগার আন্দোলন, প্রকাশনায় পাঠাগারের ভূমিকা এবং মানসম্মত বই তৈরিতে প্রকাশনার ভূমিকা নিয়ে সম্প্রতি তিনি কথা বলেছেন লেখক লাবণী মণ্ডলের সঙ্গে।


লাবণী মণ্ডল : পাঠাগার—এ শব্দটিকে কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?

কামরুল হাসান শায়ক : পাঠাগার মূলত তথ্য, জ্ঞান, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পদের সংগ্রহ ও সংরক্ষণশালা। আধুনিক যুগে তথ্যসম্পদের আপাতত দুটি ফর্ম বেশ দৃশ্যমান। একটি মুদ্রিত ফর্ম, অন্যটি ইলেকট্রনিক ফর্ম। পাঠাগার বা ইংরেজি Library শব্দটি ল্যাটিন Liber (book) শব্দ থেকে এসেছে। পাঠাগার বলতে সাধারণত যেখানে পর্যাপ্ত তথ্য ও সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্পদ সংগৃহীত, সংরক্ষিত থাকে এবং চাহিদা অনুযায়ী পাঠক সেখান থেকে তা সংগ্রহ করতে পারে, সমৃদ্ধ হতে পারে তাকেই বোঝায়। পাঠাগার মানুষের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের সেতুবন্ধ। মানুষের জানার তৃষ্ণা মেটাতে এবং উন্নত সংস্কৃতি বিকাশে লাইব্রেরি বা পাঠাগার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 

লাবণী মণ্ডল : আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে পাঠাগারের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু এবং সৃজনশীল মানুষ গঠনে পাঠাগারের ভূমিকা কতটুকু?

কামরুল হাসান শায়ক : আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে পাঠাগার অত্যন্ত প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান। শক্তিশালী ও উন্নত সংস্কৃতির সভ্যতা বিকাশে পাঠাগার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা যে আজ বাংলাদেশে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনের স্বপ্ন দেখছি, তার সফল বাস্তবায়নে পাঠাগারের বিকল্প নেই।

সৃজনশীল মানুষ গঠনে পাঠাগারের নিরেট ভূমিকা অনস্বীকার্য। মানুষ জন্ম অবধি প্রাকৃতিকভাবে দুটো মৌলিক ক্ষুধায় আক্রান্ত হয়। একটি দৈহিক, অন্যটি মানসিক। যে যেমন সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করবে, সে তেমনি দৈহিকভাবে সুস্থ ও পরিপাটি থাকবে। একইভাবে মানসিক ক্ষুধা নিবারণের জন্য যে যত সমৃদ্ধ পাঠাগারের সান্নিধ্য পাবে, সে তত বেশি মানসিকভাবে সমৃদ্ধ ও সুস্থ থাকবে তথা সৃজনশীল হয়ে উঠবে। সাম্প্রতিক সময়ে পাঠাগারগুলো বই পাঠের পাশাপাশি বিভিন্ন সৃজনশীল কর্মকাণ্ড অনুশীলনের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। যেমন— বই পড়া প্রতিযোগিতা, গল্প বলা প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তিসহ বিচিত্র সৃজনশীল অনুশীলন মানুষের মেধা ও মননের উৎকর্ষ বিধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

 

লাবণী মণ্ডল : আপনি একটি সৃজনশীল প্রকাশনার সঙ্গে জড়িত। একই সঙ্গে চিন্তাশীল লেখালেখি ও গবেষণায় যুক্ত রয়েছেন। প্রকাশনার সঙ্গে পাঠাগারের সম্পর্কের বিষয়টি কীভাবে দেখেন?

কামরুল হাসান শায়ক : প্রকাশনা সংস্থা, পাঠাগার এবং পাঠকের মধ্যে ত্রিমাত্রিক একটি আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। তবে এই সম্পর্কের রসায়নটি যত বেশি ঋদ্ধ হবে, ফলাফলও তত বেশি ভালো হবে। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে পাঠাগারের নিবিড় সম্পর্কের মধ্য দিয়ে সমৃদ্ধ পাঠাগার গড়ে তোলা সম্ভব, আর এটি সম্ভব হলে এর ফল ভোগ করবে পাঠক তথা জ্ঞানপিপাসু মানুষ। প্রকাশনা সংস্থাগুলোর সঙ্গে পাঠাগারগুলোর যে পরিমাণ সম্পর্কের গভীরতা এবং সমঝোতা প্রয়োজন তা এখনা হয়ে ওঠেনি। যার ফলশ্রুতিতে অধিকাংশ পাঠাগারই সমৃদ্ধ পাঠাগারের স্বীকৃতি পায়নি। পাঠকও পাঠাগারমুখী হচ্ছে না। পাঠাগারগুলোতে প্রচুরসংখ্যক মানসম্পন্ন বই সংগ্রহে প্রকাশনা সংস্থাগুলো বহুমুখী সহযোগিতাই করতে পারে। পাঠাগারগুলোতে সমৃদ্ধ বই সংগ্রহের পাশাপাশি সৃজনশীল কর্মকাণ্ড অনুশীলন চালু করাও প্রয়োজন। এসব কর্মকাণ্ডেও প্রকাশনা সংস্থা সহযোগিতা করতে পারে।

 

লাবণী মণ্ডল : শিল্প-সাহিত্য বা সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে পাঠাগারের সম্পৃক্ততার বিষয়টিকে কীভাবে দেখেন?

কামরুল হাসান শায়ক : আমি তো মনে করি, শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে পাঠাগার মুখ্য অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতে পারে। সারাদেশে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সব পর্যায়ে পাঠাগার আন্দোলন সক্রিয় হয়ে উঠলে, তাদের কর্মসূচির মধ্যে অনিবার্যভাবে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি অনুশীলনের বিষয়টি চলে আসবে। এই অনুশীলন যত বেশি বেগবান হবে, তত বেশি আমাদের কাঙ্ক্ষিত সোনালি প্রজন্মের বিকাশ ত্বরান্বিত হয়ে উঠবে। তাই শিক্ষা, শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে পাঠাগারের সম্পৃক্ততার বিষয়টিকে আমি খুবই গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করি।

 

লাবণী মণ্ডল : দেশে বেশ কিছু বিশেষায়িত গ্রন্থাগার থাকলেও গণগ্রন্থাগারের সংখ্যা গুটিকয়েক। যেমন— রাজধানী ঢাকার জনসংখ্যা প্রায় আড়াই কোটি, অথচ এখানে গণগ্রন্থাগার মাত্র একটি। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে কেমন উদ্যোগ থাকা দরকার?

কামরুল হাসান শায়ক : বাংলাদেশে পাঁচ ধরনের গ্রন্থাগারের সাথে আমরা বেশ পরিচিত। ক. জাতীয় গ্রন্থাগার, খ. গণগ্রন্থাগার, গ. শিক্ষায়তন গ্রন্থাগার, ঘ. বিশেষায়িত গ্রন্থাগার ও ঙ. ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগার।

কার্যপরিধি বিবেচনায় গণগ্রন্থাগারের বিস্তৃতি ও সক্রিয় কার্যক্রম আমাদের সৃজনশীল শিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কারণ গণগ্রন্থাগারের কার্যপরিধির মধ্যে রয়েছে— ক. তথ্যমূলক ভূমিকা, খ. শিক্ষামূলক ভূমিকা, গ. সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ভূমিকা, ঘ. সুনাগরিক জ্ঞান ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সৃষ্টি, ঙ. বিজ্ঞানমনস্কতা সৃষ্টি, চ. কুসংস্কার, কূপমণ্ডূকতা ও ধর্মীয় গোঁড়ামির বিলোপ এবং ছ. মেধা ও মননশীলতার চর্চা।

গণগ্রন্থাগারের ওপরে উল্লিখিত কার্যপরিধির আলোকে একটি আলোকিত বিজ্ঞানমনস্ক উন্নত সংস্কৃতির বাঙালি প্রজন্ম গঠনের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঢাকা শহরের প্রতি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গণগ্রন্থাগার গড়ে তোলা উচিত। সারাদেশেও একইভাবে প্রতি ইউনিয়নে/ওয়ার্ডে গণগ্রন্থাগার গড়ে তোলার সুচিন্তিত প্রকল্প নেওয়া উচিত।

 

লাবণী মণ্ডল : ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক পাঠাগার গড়ে উঠছে। সেগুলো টিকিয়ে রাখা অনেকটাই দুরূহ হয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে প্রকাশনাগুলো কেমন ভূমিকা রাখতে পারে?

কামরুল হাসান শায়ক : ব্যক্তি উদ্যোগে নির্মিত ও পরিচালিত পাঠাগারগুলোকে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো অনেকভাবেই সহযোগিতা করতে পারে। যেমন— ক. প্রায় সময়ই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ওয়্যার হাউসের স্থান সংকুলানের জন্য দীর্ঘদিনের অবিক্রীত অনেক বই ওয়েস্টেজ হিসেবে ড্যামেজ করে বা ওজন দরে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে। গ্রন্থাগারগুলোর সাথে নিবিড় যোগাযোগ থাকলে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে এই বইগুলো নামমাত্র মূল্যে গ্রন্থাগারগুলো সংগ্রহ করতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে বিনামূল্যেও সংগ্রহ করতে পারে। খ. গণগ্রন্থাগারগুলো প্রকাশনা সংস্থাগুলোর কাছে সৌজন্য কপি চেয়ে আবেদন করতে পারে। গ. প্রকাশনা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করে পাঠাগারগুলো সর্বোচ্চ কমিশনে সারা বছর তাদের চাহিদামতো বই কিনতে পারে। ঘ. পাঠাগারগুলো যৌক্তিকভাবে প্রকাশনা সংস্থা বা সমিতির কাছে আর্থিক অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারে। ঙ. পাঠাগারগুলো অনেক সময় প্রকাশনা সংস্থাগুলোর সাথে যৌথভাবে সৃজনশীল কর্মকাণ্ড পরিচালনার উদ্যোগ নিতে পারে।

 

লাবণী মণ্ডল : গ্রামীণ সমাজে যেখানে শিক্ষার সুযোগ অনেক কম, সেখানে পাঠাগার সামাজিক পরিবর্তনে কেমন ভূমিকা রাখতে পারে?

কামরুল হাসান শায়ক : প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রদত্ত তথ্য মতে, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৩৩ হাজার। মাধ্যমিক স্কুলের সংখ্যা ২০ হাজার ৮৪৯টি। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অর্ধেকের বেশি সরকারি। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শহর কিংবা গ্রাম যেখানেই অবস্থান করুক ন্যূনতম ৫০০ বই-সংবলিত একটি পাঠাগার এবং একজন গ্রন্থাগারিক সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বরাদ্দ রয়েছে বলে জানি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভিত্তিক পাঠাগারের জন্য সরকারের সিদ্ধান্ত এবং বাজেট যদি সঠিক ও যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে গ্রামীণ সমাজেও পরিবর্তনের ছোঁয়া ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হওয়ার কথা। পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে প্রতি ইউনিয়ন বা ওয়ার্ডে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে বা নামকরণে পাঠাগার প্রকল্প নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডভিত্তিক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত পাঠাগার কার্যক্রম নিঃসন্দেহে সামাজিক পরিবর্তনে বৈপ্লবিক ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস করি।

 

লাবণী মণ্ডল : প্রতিটি গ্রামে পাঠাগার গড়ে তোলার একটি প্রচেষ্টা ‘গ্রাম পাঠাগার আন্দোলন’। ১৬ বছর ধরে এ প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এই উদ্যোগকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

কামরুল হাসান শায়ক : প্রতিটি গ্রামে পাঠাগার গড়ে তোলার প্রচেষ্টা অত্যন্ত ইতিবাচক এক বিশাল কর্মযজ্ঞ। তবে এই মহতী কর্মপ্রচেষ্টার সক্ষমতা, দুর্বলতা, সম্ভাবনা এবং প্রতিবন্ধকতাগুলো নিয়ে গভীরভাবে গবেষণা করে সূদুরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হলে কাঙ্ক্ষিত ফল ঈপ্সিত সময়ের মধ্যে পাওয়া সম্ভব বলে মনে করি।

আমি প্রায় এক দশক ধরে এই গ্রামীণ পাঠাগার আন্দোলনের প্রচেষ্টা দেখে আসছি। মাঝে একবার নেতৃবৃন্দের সাথে আমার যোগাযোগ হয়েছিল। তাঁদের কর্মযজ্ঞ এবং উদ্যমে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম; কিন্তু তারপর সেই যোগাযোগটা অব্যাহত থাকেনি। তবে তাঁদের প্রচেষ্টা অত্যন্ত পরিকল্পিত ও বাস্তবানুগ হলে ঈপ্সিত লক্ষ্যে তাঁরা পৌঁছবেন নিঃসন্দেহে।

 

লাবণী মণ্ডল : গ্রামে পাঠাগারগুলোতে পাঠকদের বেশিরভাগই শিশু-কিশোর; কিন্তু তাদের মানস গঠনের উপযোগী বই অপ্রতুল। এক্ষেত্রে আপনাদের কোনো ভাবনা বা উদ্যোগ রয়েছে কি?

কামরুল হাসান শায়ক : বাংলাদেশে গ্রাম পাঠাগার আন্দোলনকে বেশ প্রশংসার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ‘গ্রাম পাঠাগার আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠন। এই সংগঠনটি বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সঙ্গে সমন্বয় করে কিছু কিছু উদ্যোগ নিতে পারে। তেমনি একটি উদ্যোগ হতে পারে গ্রামীণ পাঠাগারগুলোতে মানসম্পন্ন শিশু-কিশোর উপযোগী বইপ্রাপ্তির অপ্রতুলতা দূরীকরণ। সারাদেশের গ্রামীণ পাঠাগারগুলোর সাথে প্রকাশকদের নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠেনি। ‘গ্রাম পাঠাগার আন্দোলন’ নামের সংগঠনটি এই নেটওয়ার্কিংয়ের কাজ এগিয়ে নিয়েছে। আমি তাই গ্রাম পাঠাগার আন্দোলনের নেতৃবৃন্দকে আহ্বান করব পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সঙ্গে বেশ কিছু উদ্যোগ যৌথভাবে নেওয়ার। এতে গ্রামীণ পাঠাগারগুলো অবশ্যই অনেক সহযোগিতা পাবে। সমাজের অগ্রসরমুখী পরিবর্তনের গর্বিত অংশীদার বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতিও হতে চায়।

শেয়ার করুন

লেখক পরিচিতি

তাঁর জন্ম টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামে। সবুজের মাঝে বেড়ে ওঠা এই লেখক ভালোবাসেন প্রাণ-প্রকৃতি ও মানুষের গল্প বলতে। দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত রয়েছেন প্রকাশনাশিল্পে। তিনি বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইন মাধ্যমে সাহিত্য ও বই আলোচনা এবং প্রবন্ধ-নিবন্ধ লিখে থাকেন। ইতিমধ্যে যৌথ সম্পাদনায় তাঁর পাঁচটি বই প্রকাশিত হয়েছে।

error: আপনার আবেদন গ্রহণযোগ্য নয় ।