রাত পড়ে আছে
রাত পড়ে আছে,
দীর্ঘ একা রাত। অন্ধকারে—তার গায়ে
তারাদের দাগ লেগে আছে।
রাত এভাবেই পড়ে থাকে, নিশ্চুপ।
শব্দহীনতার মনোরম গন্ধে
ম ম করে চতুর্দিক৷ কেউ না জানুক—
কেউ কেউ জানে। তুমি থাকো
বা না থাকো, রাত ঠিক জেগে থাকে
অনন্তের দিকে। সুপ্রাচীন মরুর রাত।
ফাঁকে ফাঁকে লেগে থাকে চাঁদের দাগ।
শেডস
এই পৃথিবী—এত ফুলে ফুলে ভরপুর কেন
যেন আমিও তোমার দিকে ফুটে আছি
এখনও ঝরিনি, ঝরব যেভাবেই হোক—
ফুল কতদিন থাকে? গাছে? পাতার উল্লাসে
আমি ভাবি—আমি তো ফুল নই। ফুলই আমার মতো
বৃক্ষের পুরোনো, নিজে ঝরে না—
বৃক্ষ ঝরিয়ে ফেলে, ঝরায়
কোনো কোনো বৃক্ষেরও থাকে প্রজাপতির মতন পাখা—
এই অন্তরীক্ষ, কেন এত গ্রহ-তারা-নক্ষত্রে ভরা?
তোমার চারপাশ ভর্তি নতুন আলোয়, প্রতিদিন—
আমি এক কালো কোয়াসার হয়ে
তোমাকে কত কথাই তো বলি—আর কত কথা যে
থাকে রক্তের ভেতর, বলতে পারি না, শব্দহীন থাকি…
নভোচারী
বাতাসের পৃথিবীতে ডুবে আছি বহুদিন
ঘুমঘুম, ডানাহীন
বাতাস আমাকে ধরে রাখে স্থির, ক্রুশবিদ্ধ জেসাসের মতো
উড়তে থাকে চুল, শির হয় না নত, যদিও চোখে প্রচুর ঘুম
বাতাসের সমুদ্রে হারানো ঘরবাড়ি
পাথর সবুজ পেরিয়ে পাব জলের দেয়াল, পৃথিবী ছোঁব না
নেমে এসেছে অত্যুজ্জ্বল আলো, চাঁদের দরজা হা করে খোলা—
পরির দেখা পাব নাকি?
আমি তো একাকী, এক অরণ্যে আছি
যেন ঝড় এসে
যেন ঝড় এসে এঁকে গেল। তোমার চেহারা।
ঝড় এলে তুমিও কি নুয়ে যাওয়া পাতা? হাওয়ার চাবুকে
কেটে গেছে গাল। পাথরের মুখে চুল আকাঁবাকা আঁকা।
ঝড় এসে এঁকে গেল। আসলে তোমাকে নয়—আমাকে।
ক্লান্তিহীন বেদনার এই জগত-সংসারে।
তুমি ছিলে ঝড়? নাকি, তুমিও আমার মতো জলে ভেজা খড়?
বোধি
দৃশ্যত: যা ঘটে না, তা দেখি চক্ষু বেঁধে
এমন দৃশ্যের ভিতর বহুদিন বসে থেকে
কালহীন, জন্মহীন
আমার থাকা-না-থাকার শব্দ
আওরানি
হয়ে ফোটে
পৃথিবীতে
জন্ম ১৭ জুলাই, ১৯৮৭, বরিশাল। বরিশাল জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক, নটরডেম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে স্নাতক। বর্তমানে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে কর্মরত।