.
শেষতম পাখিটি
শেষতম পাখিটির মতো ডেকে ডেকে চিরে ফেলেছি গলা
পাখিটি যদি জানত তার প্রজাতির আর কেউ অবশিষ্ট নেই
সে কি ডাকত?
তার মিলনের আর্তনাদে সেও কি শক্ত করে বেঁধে নিত দড়ি?
ডাকতে ডাকতে পাখিটি মারা গিয়েছিল
অথবা আত্মহত্যা করেছিল…
আমি, চেরা গলা নিয়ে বাঁশি বাজাচ্ছি; এক নির্জন প্রান্তরে
শেষতম পাখিটির মতো!
রাত কোনো বিষয় না
১.
তোমার বিষয় যদি রাত হয় সেই রাতে ঢুকে পড়ব
একটু একটু করে পাঠ করব
কোথাও কোথাও দেব লাল কালিতে দাগ
নিবিড় পড়ুয়ার মতো—
২.
রাত তোমার কাছে বিষয় না
দিনের আলোতেও ঢুলে পড় তুমি
আমার ঘুম নেই… ঘামের নুন রাতের শরীরে ঢালি
চকচক করে… বালিশের তুলো দূরে ওড়ে…
শিমুল ফোটে সকালে, বাসি!
নকল দাঁত
শুশ্রূষা আসে সেই দরজা দিয়ে যেখানে বাঘে-হরিণে এক ঘাটে জল খায়
জল ফুরিয়ে যাবে বলে আমরা দরজায় খিল দিই
ফাঁকফোকর দিয়ে জল ঢোকে
বাঘ-হরিণের বন্ধুত্ব হয়। শুশ্রূষা স্বাস্থ্যবান হয়ে ওঠে…
তার মাংসে শিরা বেরোয়
শুশ্রুষা, আকাশ দিয়ে বেঁধে দেয় বাঘ-হরিণের নকল দাঁত
মোরগপুরুষ
বিরহ সে-ও কি খসায়নি জল?
পা মোছে। উঠোনে খেলা করে—
রাতের শরীরে লেপে সকালের নাল…
বহুদূর… দূর পথ ফেলে…
ফিরেছে কে? ছায়া-ভাঙা মানুষের ছায়ায়—
আতঙ্কিত যারা, তারাও কেটেছে পুকুর…
জল সরে গেছে…
মাছ ভেসেছে… পিচ্ছিল মাছ… আর লড়াইয়ের মোরগপুরুষ!
সকাল
সকাল আসে খালি পায়ে। জল দিই। ছুড়ে ফেলে। পিছল হয় বাড়ি। তাকে আতিথেয়তা করার কেউ নেই। এক কাপ লিকার চা দিই। সেটাও ছুড়ে ফেলে। বলি— কী দাবি তোমার? বলে— ঘুম চাই, ঘুম।
বালিশ দিই। কাঁথা দিই। ঘুমিয়ে পড়ে। তার ধুলোমাখা পায়ে লেগে থাকে রাতের ধূপ আর ভোরের যৌনতা।
কবি, সম্পাদক ও প্রকাশক
নদিয়ার চাপড়ায় থাকেন। লেখালেখির পাশাপাশি ‘তবুও প্রয়াস’ পত্রিকা সম্পাদনা করেন। পছন্দের বিষয় লোকসংস্কৃতি। প্রকাশিত কবিতার বই তিনটি। মায়াজন্ম, লবণ খেতের জোনাকি এবং কাঁচা মাংসের বাড়ি। সম্পাদিত বই একটি। ছাদ পেটানোর গান । ইমেইল : salimmondal07@gmail.com