গল্পটা আমাকে আমার এক বন্ধু বলেছিল
এক বন্ধু একবার তার প্রতিবেশী সম্পর্কে বেশ দুঃখজনক গল্প বলেছিল। একটি অনলাইন ডেটিং সাইটের মাধ্যমে তিনি এক অচেনামানুষের সাথে কথা বলা শুরু করেছিল। বন্ধুটি কয়েকশ মাইল দূরে উত্তর ক্যারোলিনায় থাকতো। তো এই দুই ভদ্রলোকমেসেজ আর ছবি চালাচালি করতো এবং শীঘ্রই তারা প্রথমে লিখে লিখে কথোপকথন এবং তারপরে ফোনে দীর্ঘক্ষণ ধরেকথা শুরু করে। তারা আবিষ্কার করলো তাদের আগ্রহের ব্যাপারগুলোতে বেশ মিল আছে, দুজনেই একইরকম আবেগী এবং সংবেদনশীল, একে অপরের সাথে বেশ সহজ-স্বচ্ছন্দ এবং শারীরিকভাবেও পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ বোধ করছিল, ইন্টারনেটে যতটা এই ব্যাপারে বোঝা যায় আর কি। তাদের পেশাগত চিন্তাভাবনায়ও বেশ মিলছিল, আমার বন্ধুর প্রতিবেশী একজন অ্যাকাউন্টেন্ট এবং তার নতুন বন্ধু দক্ষিণে ছোট্ট এক কলেজের অর্থনীতির সহকারী অধ্যাপক। কয়েক মাস পরে মনে হয় তারা সত্যি ভালো ছিল আর সত্যিই এতটা প্রেমে পড়ে গিয়েছিল পরস্পরের যে আমার বন্ধুর প্রতিবেশী বেশ নিশ্চিত ছিলেন, ‘ব্যাপারটা এটাই’। তখন যেই না সে কয়দিন ছুটি পেলো, ভাবলো এবার দক্ষিণে উড়ে গিয়ে তার এই ইন্টারনেট-প্রেমের সাথে সরাসরি দেখা করে আসা যাক।
যাত্রাকালীন তার সেই বন্ধুর সাথে দুই তিনবার ফোনে কথাও হলো। তারপর তাকে অবাক করে দিয়ে সে আর কোন উত্তর দিলো না ফোনের। এমনকি তার সেই বন্ধু এয়ারপোর্টে তাকে নিতে এলো না। অনেকবার তাকে ফোনে না পেয়ে এবং অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে আমার বন্ধুর প্রতিবেশী হাঁটা দিলো তার বন্ধুর দেয়া ঠিকানার উদ্দেশ্যে। কেউই দরজা খুললো না এতবার বেল বাজাবার এবং কড়া নাড়ার পরেও। ঘটনা কী হতে পারে সম্ভাব্য সবকিছুই তার মাথায় খেলে গেলো।
এখানে, গল্পের অনেক কিছুই বলা হয়নি, কিন্তু আমার বন্ধু তার প্রতিবেশী থেকে যা শুনেছিল তা হলো সেদিন যখন সে দক্ষিণের উদ্দেশ্যে ফ্লাইটে ছিল, তার সেই বন্ধু হার্ট এটাকে মারা যায় ফোন কানে অবস্থায় কথা বলতে বলতেই এবংতখনই তার পাশে ডাক্তার ছিল; বন্ধুর প্রতিবেশী এসব জেনেছে হয় তার সেই বন্ধুর প্রতিবেশী নইলে পুলিশের কাছ থেকে, যে তাকে স্থানীয় মর্গে নিয়ে গিয়ে ইন্টারনেট বন্ধুর লাশ দেখার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল, এবং এই হলো ঘটনা, শেষ পর্যন্ত একজন জীবিতের সাথে একজন মৃতের মুখোমুখি দেখা হলো, তার চোখে চোখ রেখে সে অনুভব করলো সে ছিল এই মানুষটার আমৃত্যু সঙ্গী।
আম্মার সাথে ফোনে লম্বা কথা বলতে বলতে যে কাটাকুটিগুলো খেলি
গ্রীষ্মের জন্য— তার জামা দরকার
সুন্দর জামা— সুতির
সুতির রতিসু
সুরতি
রসুতি
তিরসু
সুরতই ইসতুর
সুরিত
সুজি ব্রাউন শহরে থাকবে
সুজি ব্রাউন শহরে থাকবে। সে আসবে তার জিনিসপাতি বেচতে। সুজি অনেক দূরে কই জানি চলে যাবে। সে চাইছে তার বিরাট গদিটা বেচতে।
তা আমাদের কারও কি বিরাট সাইজের গদি দরকার আছে? কিংবা অটোমান সোফা? অথবা তার গোসলের হাবিজাবি?
সময় হয়েছে সুজি ব্রাউনকে বিদায় বলার।
তার সাথে বন্ধুত্ব আমরা যথেষ্ট আনন্দের ছিল। তার টেনিসের কায়দাকানুনগুলোও আনন্দের ছিল।
মূলত কবি। পাশাপাশি অনুবাদ করেন। একটা ইংরেজি ওয়েবজিন ‘প্রাচ্য রিভিউ’র কবিতা বিষয়ক সম্পাদক। জন্ম ২১ এপ্রিল ১৯৮৭, চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আর কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা। প্রথম কবিতার বই নিঃসঙ্গম।